অবিলম্বে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় খোলার রোডম্যাপ ঘোষণা ও হল খুলে পরীক্ষা নেওয়াসহ তিন দফা দাবি জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত ঢাকার সরকারি সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার (৩ জুন) সকাল সাড়ে ১১টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত রাজধানীর নিউমার্কেট মোড় অবরোধ করে 'সাত কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীবৃন্দ'-এর ব্যানারে এসব দাবি জানায় তারা।
শিক্ষার্থীরা বলছে, যেখানে অফিস-আদালত, মার্কেট, গার্মেন্টস সব খোলা রাখা হয়েছে, সেখানে করোনার অযুহাতে স্কুল-কলেজ বন্ধ রাখা অযৌক্তিক। এর আগে, সকাল ১১টা থেকে নিউমার্কেটের সামনে অবস্থান নিতে শুরু করে কলেজগুলোর শিক্ষার্থীরা। পরে সাড়ে ১১টার দিকে আনুষ্ঠানিকভাবে নিজেদের কর্মসূচি শুরু করে তারা। শিক্ষার্থীদের অবস্থানের কারণে নিউমার্কেট-নীলক্ষেত মোড় দিয়ে যানচলাচল বন্ধ থাকে। পরে একটি মিছিল বের করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তি ও গণতন্ত্র তোরণের সামনে আসে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। পরে সেখানে এক সংবাদ সম্মেলনে নিজেদের পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করে এদিনের কর্মসূচি শেষ করে তারা। এসময় নিজেদের তিন দফা দাবিও পেশ করে শিক্ষার্থীরা৷
দাবিগুলোর মধ্যে আছে- স্বাস্থ্যবিধি মেনে অবিলম্বে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেয়ার রোডম্যাপ ঘোষণা, সকল বর্ষের শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রম ক্লাস, পরীক্ষা ফলাফল প্রকাশ এর পরিকল্পনা নিয়ে একাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রকাশ ও প্রস্তুতির জন্য পর্যাপ্ত সময় দিয়ে পরীক্ষার রুটিন প্রকাশ এবং হল খুলে সব পরীক্ষা নেওয়া প্রভৃতি। এসব দাবিতে আগামী ৬ জুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হবে বলে জানায় শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনের মুখপাত্র ঢাকা কলেজের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ঈসমাইল সম্রাট বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, হল না খুলে ঢালাওভাবে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত আমাদের জন্য অমানবিক হয়ে যাচ্ছে। অনতিবিলম্বে এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে হল-ক্যাম্পাস খুলে পরীক্ষা নিতে হবে। না হলে উপাচার্যকে স্মারকলিপি দেওয়া ছাড়াও আমরা আরও কঠোর কর্মসূচির দিকে যেতে বাধ্য হবো।
এদিকে, আন্দোলনকারীদের দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়, গত ১ জুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলে আবাসিক হল না খুলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ন্যায় সাত কলেজের বিভিন্ন বর্ষের স্থগিত পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ঢাবি অধিভুক্ত সাত কলেজের বেশির ভাগ শিক্ষার্থীরা ঢাকার বাইরে থেকে এসে পড়াশুনা করে। হলে, মেসে, সাবলেটে বিভিন্ন জায়গায় টিউশনি করে নিজের খরচ চালিয়ে অনেক সময় পরিবারকেও আর্থিক সহযোগিতা করে তাদের টিকে থাকতে হয়। করোনা কালীন সময়ে টিউশন হারিয়ে এক অনিশ্চিত জীবনযাপন করছে তারা। এমতাবস্থায় শুধু পরীক্ষার জন্য ঢাকায় এসে থাকা তাদের জন্য 'গোঁদের উপর বিষ ফোঁড়া' হয়ে দাড়াবে।
অন্যদিকে, প্রস্তুতির পর্যাপ্ত সময় না দিয়ে, হল ক্যাম্পাস খুলে না দিয়ে তড়িঘড়ি করে পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে শিক্ষার্থীরা আরেক নতুন সংকটে পড়বে। প্রস্তুতির সময় না দিলে ফলাফল বিপর্যয় আর হল ক্যাম্পাস খুলে না দিলে থাকার সংকটে পরবে এখানকার শিক্ষার্থীরা। ফলে এসকল সংকট বিবেচনায় অবিলম্বে স্বাস্থ্যবিধি মেনে কলেজ খুলে দেয়ার রোডম্যাপ ঘোষনা করা হোক।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ আল সিফাত