কর্তৃপক্ষের নির্দিষ্ট কোন নির্দেশনা না থাকায় অনলাইন ক্লাসে উপস্থিতির নম্বর নিয়ে বিপাকে পড়েছেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ক্লাসে উপস্থিতির ওপর এ নম্বর পরীক্ষার ফলাফলের সাথে যোগ হওয়ায় চূড়ান্ত ফলাফলের প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন তারা।
সেমিস্টারের প্রতিটি ১০০ নাম্বার কোর্সের ৪০ নম্বর সংশ্লিষ্ট কোর্স শিক্ষক সরাসরি মূল্যায়ন করেন। তিনি শিক্ষার্থীর মিডটার্ম, এসাইনমেন্ট, প্রেজেন্টেশন, ক্লাসে উপস্থিতি ইত্যাদি যাচাই করে তার ওপর এ নম্বর দিয়ে থাকেন। এক্ষেত্রে বিভাগ ভেদে ৫ বা ১০ নাম্বার বরাদ্দ থাকে ক্লাসে শিক্ষার্থীর উপস্থিতির ওপর। আবার কোনো শিক্ষার্থী উপস্থিতির ওপর বরাদ্দকৃত এ নম্বরের অন্তত ৪০ শতাংশ অর্জন করতে না পারলে তিনি সেমিস্টারের চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশগ্রহণে অযোগ্য বিবেচিত হন।
করোনা ভাইরাস সংকটে গত বছরের ১৮ মার্চ থেকে বন্ধ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম এগিয়ে নিতে সে বছরের ১৫ জুলাই থেকে অনলাইনে ক্লাস নিতে শুরু করে এ বিশ্ববিদ্যালয়। তবে গ্রামাঞ্চলে দুর্বল নেটওয়ার্ক, উচ্চমূল্যের ডাটাপ্যাক এবং ডিভাইস জটিলতাসহ বিভিন্ন কারণে অনলাইন ক্লাসে যুক্ত হতে পারেননি অনেক শিক্ষার্থী। এতে উপস্থিতির ওপর বরাদ্দকৃত এ নম্বর থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তারা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নৃবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের একজন শিক্ষার্থী বলেন, অনলাইনে ক্লাস করার মতো শক্তিশালী নেটওয়ার্ক আমার বাড়িতে কখনো পাওয়া যায় না। মাঝে মধ্যে কয়েক কিলোমিটার দূরে শহরতলীতে এক আত্মীয়ের বাসায় গিয়ে ক্লাস করেছি। ক্যাম্পাস খোলা থাকাকালীন আমি উপস্থিতির ওপর প্রায়ই পুরো নম্বর পেয়েছি। অথচ এখন আমি এ নম্বর থেকে বঞ্চিত হবো।
কামরুল হাসান নামে আরেকজন শিক্ষার্থী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশির ভাগ শিক্ষার্থী নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারে সন্তান। প্রত্যন্ত অঞ্চলে বসবাসকারী এসব শিক্ষার্থীদের পক্ষে উচ্চমূল্যে ইন্টারনেট কিনে ক্লাস করা সম্ভব হয়না। সেখানে অনলাইন ক্লাসের ওপর মার্কিং করে তাদেরকে বঞ্চিত করা হবে।
এদিকে সমস্যাটি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তত সাতজন বিভাগীয় প্রধানের সাথে কথা হয়েছে। আপদকালীন এ সময়ে ক্লাসে উপস্থিতির ওপর নম্বর নিয়ে কেন্দ্রীয় কোন নির্দেশনা না থাকায় একেক বিভাগ একেকরকম কথা বলছে। কেউ বলছেন, এটি কোর্স শিক্ষকের ওপর নির্ভর করছে তিনি কিভাবে এ নম্বর মূল্যায়ন করবেন। আবার কোনো বিভাগ নিজেরা আলোচনা করে অনলাইন ক্লাসে উপস্থিতির একটি সর্বনিম্ন মান ধরে মূল্যায়ন করতে বলেছেন।
নৃবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান এন. এম. রবিউল আউয়াল চৌধুরী বলেন, এ ব্যাপারে নির্দিষ্ট কোন নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। তবে শিক্ষকদেরকে স্টুডেন্টস ফ্রেন্ডলি হতে বলা হয়েছে। এটি কোর্স শিক্ষক বিবেচনা করবেন।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল