আকাশের ঘন মেঘ আর কদম ফুলের সুবাসে ষড়ঋতুর বাংলাদেশে এসেছে বর্ষাকাল। বুধবার আষাঢ়ের প্রথম দিনে এক হলকা ঝিরিঝিরি বৃষ্টি যেন জানান দিয়ে গেছে, বর্ষা এসেছ। তাই তো বর্ষাকে বরণ করে নিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক সংসদের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হলো ‘আষাঢ় পার্বণ। অনুষ্ঠানটি উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে আয়োজন করা হয় আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও কারুশিল্প মেলা।
বিকাল চারটায় শুরু হয় মূল আনুষ্ঠানিকতা। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ। আষাঢ় পার্বণের উদ্বোধন করেন প্রখ্যাত নাট্য ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব ম হামিদ।
অনুষ্ঠানে অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ বলেন, নদীর দুই পাড়, লোকালয়-জনপদ হলো সভ্যতা। আর সংস্কৃতি হচ্ছে নদীর স্রোত। আমাদের ধর্ম, রাজনৈতিক সহনশীলতা পোশাক-আশাকের পরিবর্তন, খাদ্যাভ্যাস, কথা বলার ধরণ-সবই সংস্কৃতি মধ্যে। বাইরে থেকে আসা সব কিছু আমরা গ্রহণ করবো না। সাংস্কৃতিক সংসদে যারা কাজ করে তারা হাজার বছরের বাঙালি সংস্কৃতি সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে, আমি সেই প্রত্যাশাই করি।
উদ্বোধনী বক্তব্যে ম হামিদ বলেন, পৃথিবীর বেশিরভাগ দেশই চার ঋতুর। কিন্তু বাংলাদেশ ষড়ঋতুর। এর যে বৈচিত্র্যময় রূপ, তা আবাহন করা আনন্দময়। আমাদের যতই দুঃখ-ক্লেদ থাকুক না কেন, আমরা এমন আনন্দ উপভোগ করতেই থাকবে, আজকের দিনে এমন প্রত্যাশাই করি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক সংসদের মডারেটর এবং গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সাবরিনা সুলতানা চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুস, বিশিষ্ট নৃত্যশিল্পী ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব শর্মিলা বন্দোপাধ্যায়, ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. সিকদার মনোয়ার মুর্শেদ, রিভাইভাল টি-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাহাতুল আশেকিন এবং সাংস্কৃতিক সংসদের সভাপতি সাদিয়া আশরাফী থিজবী ও সাধারণ সম্পাদক জয় দাস বক্তব্য রাখেন।
পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংস্কৃতিক সংসদের নানান সাংস্কৃতিক পরিবেশনা উপস্থাপনা করেন। গান পরিবেশন করে ‘কৃষ্ণপক্ষ’ ব্র্যান্ড। একই সময়ে টিএসসি প্রাঙ্গণে বাংলার কারুশিল্পকে তুলে ধরার প্রয়াসে আয়োজন করা কারুশিল্প মেলা। এতে স্থান পায় নবীন উদ্যোক্তাদের বিভিন্ন স্টল ও বর্ষাযাপনের নানা উপাদান।
বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর