২৮ জানুয়ারি, ২০২৩ ২১:২৩

জাবিতে দাবি না মানায় হলের রাস্তায় স্থায়ী ব্যারিকেড নির্মাণ

জাবি প্রতিনিধি:

জাবিতে দাবি না মানায় হলের রাস্তায় স্থায়ী ব্যারিকেড নির্মাণ

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের আওতাধীন ২০ ও ২১ নং হলের রাস্তা নির্মাণ কাজ বন্ধ করে সাড়ে চার ফুট উঁচু স্থায়ী ব্যারিকেড নির্মাণ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ রফিক-জব্বার হলের শিক্ষার্থীরা। হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা বলছেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের কতিপয় দাবি না মানায় রাস্তার কাজ বন্ধ করে স্থায়ী ব্যারিকেড দিতে বাধ্য হয়েছেন তারা।

গতকাল শুক্রবার (২৭ জানুয়ারি) দুপুরে রাস্তার ঠিকাদারের কাজ বন্ধ করে দেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। পরে সন্ধ্যায় হল ছাত্রলীগের নেতৃত্বে রাস্তায় স্থায়ী ব্যারিকেড নির্মাণ করেন তারা।

এর আগে, গত ১৮ জানুয়ারি চার দফা দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দেন তারা।

তাদের দাবিগুলো হলো- শহীদ রফিক-জব্বার হলের সীমানা প্রাচীর নির্মাণ ও খেলার মাঠ নির্দিষ্ট করা, হলের সকল অব্যবস্থাপনা দূর করে স্যানিটাইজেশন ব্যবস্থা সংস্কার, দোকান স্থানান্তর, স্থায়ী ইমাম নিয়োগ, ডাইনিং এর অব্যবস্থাপনা দূরীকরণ, কমনরুমের প্রয়োজনীয় উপকরণের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিতকরণ, শহীদ রফিক-জব্বার হলের সামনে দিয়ে ২০ এবং ২১ নং হলের বিকল্প রাস্তার ব্যবস্থা করা।

এবিষয়ে রফিক জব্বার হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সহ-সভাপতি সাজ্জাদ হোসেন বলেন, 'এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেছে আমরা স্মারকলিপি দিয়েছি। নতুন হলের কাজ শুরু করার সময় থেকে গত তিন বছর আমরা এই হলের শিক্ষার্থীরা শব্দ দূষণ, ধুলাবালিসহ নানা সমস্যার সম্মুখীন হয়েছি। আমাদের মিশু চত্বর, হলের সীমানা প্রাচীর করে দেয়ার কথা ছিল। আমাদের বাগান নষ্ট হয়েছে। এতোকিছু পরেও তারা আমাদের দাবি মানছে না। আমরা ব্যারিকেড দিয়েছি প্রতিবাদ স্বরূপ। দাবি না মানা হলে রাস্তা করতে দেয়া হবে না।'

হলটির ৪৪ ব্যাচের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সহ-সভাপতি সাব্বির হোসেন নাহিদ বলেন, 'নতুন হলগুলোতে আসবাবপত্র সরবরাহ করা হয়নি, হলের নামকরণ করা হয়নি। অথচ তারা শিক্ষার্থীদের উঠানোর তোড়জোড় করছে। এদিকে আমাদের সমস্যা গুলো সমাধানের কথা থাকলেও কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না। এজন্য আমরা বাধ্য হয়ে রাস্তা নির্মাণ কাজ বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছি।'

হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান বলেন, 'যেহেতু আমি ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত এবং ছাত্রলীগ সবসময় শিক্ষার্থীদের জন্য কাজ করে। তাই আমি ছাত্রলীগের একজন প্রতিনিধি হিসেবে বলতে চাই প্রশাসন সমস্যাগুলো সুন্দর করে সমাধান করুক। আর শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবিগুলো আদায়ের সকল কর্মসূচির সাথে একমত পোষণ করছি।'

শহীদ রফিক জব্বার হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক শাহেদ রানা বলেন, 'হলের শিক্ষার্থীরা তাদের কিছু দাবি জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে। প্রশাসন না মানায় কাজ বন্ধ করে দিয়েছে তারা। কাজ বন্ধ করে ব্যারিকেড দেয়ার সাথে আমার কোন সম্পর্ক নেই। তবে আমি নতুন হল প্রশাসন ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সাথে কথা বলেছি, আগামী রবিবারে এবিষয়ে আলোচনা করা হবে।'

নতুন ২১ হলের প্রাধ্যক্ষ ও পাবলিক হেলথ এন্ড ইনফরমেটিক্স বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. তাজউদ্দিন সিকদার বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, 'কাজ বন্ধ করার ক্ষমতা রাখে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তাছাড়া অন্য একটি হলের শিক্ষার্থীরা আমাদের রাস্তার কাজ কেন বন্ধ করবে? এই রাস্তাটি বন্ধ থাকলেতো আমাদের হলের শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি হবেই। বটতলা ও একাডেমিক ভবনে যেতে অন্য রাস্তার চেয়ে এ রাস্তায় সময় কম লাগবে। আমি চাই, প্রশাসন দ্রুত এটার সমাধান করুক।'

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নূরুল আলম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, 'কাজ বন্ধ করার কথা আমি শুনেছি। কিন্তু তারা এটা কেন করবে? আমি কি একবারও বিকল্প রাস্তা করার কথা বলেছি? এবিষয়ে আগামীকাল আলোচনা করা হবে।'

 


বিডি প্রতিদিন/নাজমুল

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর