ঢাকা বিশ্ববিধ্যালয়ের (ঢাবি) ‘কৃষি ও স্বাস্থ্যক্ষেত্রে জীবপ্রযুক্তি’ শীর্ষক ৫ম আন্তর্জাতিক সম্মেলন শুরু হয়েছে। শুক্রবার নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে তিন দিনব্যাপী এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনে উদ্বোধন করা হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন ও অণুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগিতায় গ্লোবাল নেটওয়ার্ক অব বাংলাদেশি বায়োটেকনোলজিস্টস (জিএনওবিবি), বাংলাদেশ বায়োসেফটি অ্যান্ড বায়োসিকিউরিটি সোসাইটি (বিবিবিএস) এবং ফেডারেশন অব এশিয়ান বায়োটেক এসোসিয়েশনস (এফএবিএ) যৌথভাবে এ সম্মেলনের আয়োজন করেছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে সম্মেলনে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমদাদুল হক চৌধুরী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শরফুদ্দিন আহমেদ, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন, বিবিবিএস-এর সভাপতি ড. চন্দন কুমার রায়, এফএবিএ-এর সভাপতি ড. আসাদুল গণি এবং জিএনওবিবি-এর সভাপতি অধ্যাপক ড. জেবা ইসলাম সেরাজ বক্তব্য রাখেন।
সম্মেলনে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, কৃষি, স্বাস্থ্য ও পরিবেশের মধ্যে গভীর সম্পর্ক রয়েছে। মানুষের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে পরিবেশ ও প্রকৃতি সংরক্ষণের পাশাপাশি নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন এবং টেকসই কৃষি ব্যবস্থা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি আরও বলেন, নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন ও সরবরাহের ক্ষেত্রে আইনের যথাযথ প্রয়োগ ও কঠোর নজরদারি আরও বাড়াতে হবে। নিরাপদ ও উন্নত সমাজ বিনির্মাণে সকল ক্ষেত্রে নৈতিক ও মানবিক মূল্যবোধ চর্চার উপর তিনি গুরুত্বারোপ করেন। করোনা মহামারি, ডেঙ্গুসহ স্বাস্থ্যখাতে বিভিন্ন ধরনের ঝুঁকি মোকাবেলায় জৈব প্রযুক্তির উন্নয়নে মৌলিক গবেষণা পরিচালনা করার জন্য শিক্ষক, গবেষক ও সংশ্লিষ্টদের প্রতি উপাচার্য আহ্বান জানান।
অধ্যাপক ড. শরফুদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা গবাদিপশু ও পোল্ট্রি শিল্পে স্টেরয়েড ও অ্যান্টিবায়োটিক অবাধে ব্যবহার করছি। এন্টি বায়োটিক প্রতিরোধী এসব পশুপাখির গোশত ভক্ষণের মাধ্যমে আমরা এন্টি বায়োটিক প্রতিরোধী হয়ে উঠছি। ২০৫০ সালের মধ্যে পাঁচ কোটি মানুষ এ কারণে মারা যাবে। স্বভবই এটি স্বাস্থ্যক্ষেত্রে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে।
অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন বলেন, কার্যকরী ও টেকসই কৃষির উন্নয়ন অত্যন্তু গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে জলবায়ুজনিত কারণে সৃষ্ট দুর্যোগের প্রেক্ষাপটে। এজন্য প্রয়োজন হবে টেকসই প্রযুক্তির, যা একই সাথে জীববৈচিত্র্য রক্ষায়ও সহায়তা করবে। বায়ো-টেকনোলজি এক্ষেত্রে একটি শক্তিশালী হাতিয়ার, যা একাজটি করতে পারে। কেননা, বায়ো-টেকনোলজির মাধ্যমে, বিশেষ করে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মাধ্যমে খুব অল্প সময়ে একটি জিনকে নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্য প্রদান করা সম্ভব।
সম্মেলনে গ্লোবাল নেটওয়ার্ক অব বাংলাদেশি বায়োটেকনোলজিস্টস-এর প্রতিষ্ঠাতা এবং কিংবদন্তি জীবপ্রযুক্তিবিদ অধ্যাপক ড. আহমেদ শামসুল ইসলামের কর্মময় জীবনের উপর একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
সম্মেলনে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, গবেষক, শিক্ষার্থী এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিবৃন্দ অংশগ্রহণ করছেন।
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত