রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্ণিল আয়োজনে বসন্ত বরণ উদযাপিত হয়েছে। শীতের জরা কাটিয়ে বসন্ত বন্দনায় মেতেছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে বসন্ত উৎসব উদ্বোধন করেন উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার।
উদ্বোধনকালে উপাচার্য বলেন, বসন্ত প্রকৃতিতে আনে সজিবতা। শীতের জরা কাটিয়ে বাসন্তী রঙে আমাদের হৃদয় হয়ে ওঠুক রঙিন। তাছাড়া বাঙালির চিরয়ত সংস্কৃতি এভাবেই চর্চা হোক সেই প্রত্যাশা করেন উপাচার্য।
ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা গেছে, বসন্তবরণ উপলক্ষে সকাল থেকে বিভিন্ন বিভাগের বর্ণিল শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। বসন্ত বরণে চারুকলা সজ্জিত হয় বর্ণিল সাজে। রঙ-তুলির আঁচরে দেয়ালে আঁকা হয় পলাশ ফুল, হাঁড়ি ও ঘুড়ির মতো লোকজ চিত্র। মঞ্চ হয় বৈচিত্র রঙের ডামির সমাহারে। তাছাড়া বসন্ত ঘিরে ক্যাম্পাসজুড়ে চলে আবৃত্তি, নৃত্য ও লোকজ সংগীতের আসর। একই দিনে ভালোবাসা দিবস হওয়ায় ক্যাম্পাসে প্রেমিক যুগলদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। মাথায় ফুল ও রঙিন সাজে শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখরিত ছিল প্যারিস রোড, শহীদ মিনার চত্ত্বর, চারুকলাসহ বিভিন্ন চত্বর।
তবে যুগলদের উচ্ছ্বাস থাকলেও প্রেম বঞ্চিদের মনে ছিল হাহাকার। ফলে দুপুর গড়াতেই বিক্ষোভ করেন প্রেম বঞ্চিত সংঘের নেতাকর্মীরা। 'তুমি কে আমি কে:বঞ্চিত-বঞ্চিত, কেউ পাবে, কেউ পাবে না, তা হবে না হবে না'- শ্লোগানে ফেটে পড়েন তারা। তবে ভালবাসা দিবস ঘিরে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের এমন বিক্ষোভ কর্মসূচি অতিরঞ্জিত বলছেন কেউ কেউ। এদিনে নিজ সংস্কৃতি চর্চাই উচিত বলে মনে করেন তারা।
প্রেম বঞ্চিত সংঘের সভাপতি মোকতাদীর বলেন, আমাদের এই সংগঠনের লক্ষ্য প্রেমের সুষম বণ্টন নিশ্চিত করা। ক্যাম্পাসে একজন একাধিক প্রেম করবে, অন্যজন কিছুই পাবে না। সেটা হবে না। অর্থ, লোভ ও সৌন্দর্যের উপর ভালোবাসা সত্য।
অন্যদিকে, ক্যাম্পাসে স্বৈরাচার প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষে বিক্ষোভ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
বিক্ষোভ শেষে বিপ্লব ছাত্রমৈত্রী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি শাকিল হোসেন বলেন, আমরা আজকে যে স্বল্প খরচে পড়াশোনা করছি তা দীপালী সাহা, কাঞ্চন ও জয়নালদের অবদান। তাদের আত্মত্যাগেই শিক্ষা বানিজ্যিকরণ স্বল্পতা পেয়েছিল। আমাদের ছাত্র সংগ্রামের যে গৌরব উজ্জলের ইতিহাস, সেই ইতিহাস আজকের এই দিনে রচিত হয়েছিল।
তিনি আরও বলেন, আজকে যে শিক্ষাকে বাণিজ্য পণ্যে রূপান্তরিত করা হচ্ছে, এটা স্বৈরশাসক এরশাদের আমল থেকেই শুরু হয়েছিল। সরকার শিক্ষাকে যেভাবে বাণিজ্যিকরণ করছে এর থেকে বোঝা যায় তারা স্বৈরাচারের দিকে যাচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে আমাদের দরিদ্র শিক্ষার্থীরা উচ্চশিক্ষা সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবে।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ