রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) শহীদ সৈয়দ ড. শামসুজ্জোহার স্মরণে 'মহান শিক্ষক দিবস' পালিত হয়েছে। ঊনসত্তরের এদিনে পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে নির্মমভাবে তিনি শহীদ হন। দিবসটি জাতীয়করণের দাবি ওঠেছে।
রবিবার বিশ্ববিদ্যালয়ে এ দাবি জানান উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার।
উপাচার্য বলেন, শহীদ ড. জোহা ছিলেন মানবতাবাদী শিক্ষক। তিনি বিশ্বের মানবতাবাদী চিন্তার উৎস। শহীদ জোহার জীবনাদর্শ, চিন্তা-চেতনা বাঙালি জাতিকে দিয়েছে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হওয়ার শক্তি। তবে শহীদের দীর্ঘ সময় অতিক্রান্ত হলেও দিনটি জাতীয়করণ না হওয়া হতাশাজনক। অবিলম্বে দিবসটি জাতীয়করণের দাবি জানান উপাচার্য।
জানা গেছে, দিবসটি উপলক্ষে ভোরে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও প্রশাসনিক সকল ভবনে কারো পতাকা উত্তোলন করা হয়। সকাল ৯টায় শহীদ জোহার সমাধি ও স্মৃতিফলকে পুস্পার্ঘ্য অর্পণ শেষে সিনেট ভবনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে ‘আমাদের শিক্ষা ভাবনা’ শীর্ষক বক্তৃতা দেন সাবেক শিক্ষা সচিব ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘরের কিউরেটর মো. নজরুল ইসলাম খান।
তিনি বলেন, আমরা যত বেশি শিক্ষিত হই, তত বেশি ভোগ করি। একজন কৃষক চিংড়ি খেয়ে সন্তুষ্ট হলেও আমরা উচ্চশিক্ষিতরা ম্যানগ্রোভের কাকড়া থেকে সমুদ্রের হাঙ্গরের পাখনার স্যুপ খাওয়ার আকাঙ্ক্ষা করি। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আসন সংখ্যা চাহিদার তুলনায় বেশি কিন্তু বৃহত্তম অংশের শিক্ষাদানের পরিবেশ ও মান নিয়ে যথেষ্ট অসন্তুষ্টি রয়েছে। উচ্চশিক্ষায় নতুন বিষয়ের চাহিদা সৃষ্টি হলেও নতুন বিভাগ চালু হয় না। রাষ্ট্রনায়ক ও গণতান্ত্র চর্চায় বিশ্বাসীরা জনগণকে সন্তুষ্ট করতে গিয়ে প্রকৃতিকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে কিনা। এই পারস্পারিক দ্বন্দ্ব একত্র করে কীভাবে পৃথিবীতে টেকসই উন্নয়ন করা যায় সেটি হচ্ছে আজকের শিক্ষার বড় ভাবনা।
রসায়ন বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক চৌধুরী মো. জাকারিয়া সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার, বিশেষ অতিথি ছিলেন উপ-উপাচার্যদ্বয় অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম ও উপ-উপাচার্য অধ্যাপক হুমায়ুন কবীর, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক অবায়দুর রহমান প্রামানিক।
দিবসটি উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক জোট, সাংবাদিক সংগঠন, শিক্ষক সমিতি, স্বেচ্ছাসেবী, রাজনৈতিক ও পেশাদারি সংগঠন দিবসটি পালন করেছেন। এসময় প্রত্যেক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ দিবসটি জাতীয়করণের দাবি জানিয়েছেন।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন