টানা ছয় শিক্ষাবর্ষ ধরে বিদেশি শিক্ষার্থীশূন্য রয়েছে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি)। বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তিতে কর্তৃপক্ষের কার্যকরী কোনো উদ্যোগও লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। বিদেশি শিক্ষার্থী না থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক মানের ওপর প্রভাব পড়ছে বলে মনে করছেন শিক্ষকরা।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০০৩-০৪ থেকে ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ পর্যন্ত শাবিপ্রবিতে ডিগ্রি নিয়েছেন ১৫ জন আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী। এর মধ্যে ১০ জন ছিলেন নেপালের, চারজন সংযুক্ত আরব আমিরাতের এবং একজন ফিনল্যান্ডের। এরপর ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষ থেকে সর্বশেষ ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষ পর্যন্ত ছয়টি ব্যাচে কোনো বিদেশি শিক্ষার্থী টানতে পারেনি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে সেরা এই বিশ্ববিদ্যালয়টি। চলতি শিক্ষাবর্ষে ভর্তিচ্ছু কোনো বিদেশি শিক্ষার্থী আবেদনই করেনি বলে ভর্তি কমিটি সূত্রে জানা গেছে।
শাবিপ্রবির ভর্তি বিষয়ক ওয়েবসাইট থেকে জানা যায়, ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তির শর্তাবলির মধ্যে ছিল, ভর্তিচ্ছু ১২তম গ্রেড বা এ লেবেল বা উচ্চমাধ্যমিক সমমান পরীক্ষা উত্তীর্ণ এবং তাঁর এসএটি’র স্কোর ন্যূনতম ৭০০ হতে হবে। ভর্তি হতে পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি, নাগরিকত্বের সনদ, উচ্চমাধ্যমিক সমমানের পাসের সনদ এবং এসএটি’র স্কোরের সনদপত্র প্রয়োজন। এসব দলিল পাঠানোর জন্য একটি আলাদা ই-মেইল ঠিকানাও রয়েছে। তবে বিগত কয়েকবছর ধরে বিদেশি শিক্ষার্থীদের শাবিপ্রবিতে ভর্তিতে কোনো আগ্রহই দেখা যাচ্ছে না।
এ বিষয়ে রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক মো. নিজাম উদ্দিন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের র্যাংকিং বাড়ানোর জন্য বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি প্রয়োজন। এর মাধ্যমে বহির্বিশ্বে যেমন দেশের সংস্কৃতির আদান প্রদান ঘটে তেমনি প্রতিষ্ঠানে বৈচিত্র থাকে। এজন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রচারণা বাড়ানো ও ওয়েবসাইট হালনাগাদ প্রয়োজন।
সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক শাহ মো. আতিকুল হক বলেন, ‘আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ, ফান্ডিং কিংবা স্কলারশিপের ব্যবস্থা ও খন্ডকালীন চাকরির সুযোগ করা যেতে পারে। বিদেশি শিক্ষার্থী থাকলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তির বিকাশ ঘটে।' এজন্য আন্তর্জাতিক একটি দপ্তর খোলা প্রয়োজন বলে মনে করেন এই অধ্যাপক।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য অধ্যাপক সরওয়ারউদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে সেশনজট উত্তোরণের জন্য গুরুত্ব দিচ্ছেন। বিদেশি শিক্ষার্থীর বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নিলে দেশের পার্শ্ববর্তী ভুটান, নেপাল, পাকিস্তানসহ বেশ কয়েকটি অঞ্চল থেকে শিক্ষার্থীরা পড়তে আসবেন।’ এজন্য তিনি শিগগিরই কাজ শুরু করবেন বলে জানান।
বিডি প্রতিদিন/জামশেদ