হবিগঞ্জে ভয়াবহ রুপ নিচ্ছে বন্যা। এখনও স্বাভাবিক হয়নি বন্যা পরিস্থিতি। ইতোমধ্যে জেলার ৪টি উপজেলার ৫১টি ইউনিয়নের প্রায় আড়ই শতাধিক গ্রাম বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ২৩ হাজার ২৩৫টি পরিবার। দুর্ভোগে পড়েছে লাখ-লাখ মানুষ। এর মধ্যে গত কয়েকদিন যাবত বন্যাকবলিত এলাকায় দেখা দিয়েছে খাবার ও তীব্র বিশুদ্ধ পানি সংকট। যদিও জেলা প্রশাসন বলছে, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করে ত্রাণ সহযোগিতা দেয়া হচ্ছে।
সবশেষ জেলা প্রশাসনের দেওয়া তথ্যমতে, হবিগঞ্জ জেলার আজমিরীগঞ্জ, বানিয়াচং, নবীগঞ্জ ও লাখাই উপজেলার ৫১টি ইউনিয়ন পুরোপুরি বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। আর এসব এলাকায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ২৩ হাজার ২৩৫টি পরিবার। এর মধ্যে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন ৭৯ হাজার ৭২০ জন মানুষ। তাদের জন্য এরই মধ্যে সরকার থেকে ২শ’ মেট্রিক টন চাল, ১০ লাখ টাকা ও ২ হাজার শুকনো খাবারের প্যাকেট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
জানা যায়, সিলেট ও সুনাগঞ্জের বন্যার পানি কালনি-কুশিয়ারা দিয়ে নামছে হবিগঞ্জে। অন্যদিকে মেঘনা নদীর পানি বেড়ে বইছে উজানে। এতে উজান-ভাটি দু’দিক থেকেই হবিগঞ্জে ঢুকছে পানি। সেই সাথে তীব্র হচ্ছে বন্যা পরিস্থিতি। এমতাবস্থায় গত তিনদিন ধরে টানা বৃষ্টি না হলেও পাহাড়ি ঢলের পর বৃষ্টির পানি উজান থেকে বাড়তে থাকে জেলার বিভিন্ন স্থানে। এরই মধ্যে কালনি-কুশিয়ারা ও খোয়াই নদীর পানি বেড়ে বিপৎসীমা অতিক্রম করে।
এদিকে, আজমিরীগঞ্জ, বানিয়াচং, নবীগঞ্জ ও লাখাই উপজেলার প্লাবিত হওয়া গ্রামগুলোর বেশ কিছু পরিবার স্থান নিয়েছে আশ্রয় কেন্দ্রে। বাড়ি-ঘর পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় গবাদি পশুপাখি নিয়েও অনেকে পড়েছেন বিপাকে। ডুবে গেছে টিউবওয়েল ও টয়লেটও। যে কারণে দুর্ভোগের মাত্রা চরম আকার ধারণ করছে। দেখা দিয়েছে খাবার ও তীব্র বিশুদ্ধ পানি সংকট। অনেককেই আবার যে সব স্থানে টিউবওয়েল ডুবে যায়নি সেই সব স্থান থেকে নৌকা অথবা কলা গাছের ভেড়া করে বিশুদ্ধ পানি সংগ্রহ করতে দেখা গেছে। জেলা প্রশাসনের দেয়া তথ্যমতে, এ পর্যন্ত ২২৫টি আশ্রয় কেন্দ্রে লোকজন অবস্থান করছে। সেখানেও রয়েছে তীব্র বিশুদ্ধ পানি সংকট।
বিডি-প্রতিদিন/শফিক