চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার ভাটিয়ারী এলাকার তেলিপাড়ায় জনতার উপর পুলিশের গুলিবর্ষণের ঘটনায় পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হয়। জনতা ও পুলিশ পরস্পর বিরোধী মামলা করায় এলাকায় আবার উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। পুলিশ মামলা করায় স্থানীয় জনতার মধ্যে নতুন করে আবার ক্ষোভ দেখা দেয় বলে জানা যায়।
সীতাকুণ্ড থানা সূত্রে জানা যায়, জনতার উপর পুলিশের গুলিবর্ষণে নিহত সাইফুলের বড় ভাই দিদার বাদী হয়ে সীতাকুণ্ড থানায় গত বৃহস্পতিবার রাতে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় এসআই নাজমুল হুদাকে প্রধান আসামি করা হয়। পক্ষান্তরে এই মামলার পর থানার এসআই নাজমুল হুদা বাদী হয়ে আহত কবির আহমেদ ভোলা (৫৫) তার ছেলে সাদ্দাম আহমেদ (১৭) এবং ইমরান আলী জয়কে (১৬) আসামি করে পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে পৃথক আরেকটি মামলা দায়ের করেন। এর মধ্যে গুলিবিদ্ধ ভোলা ও জয় বর্তমানে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
চট্টগ্রাম জেলার পুলিশ সুপার নুরে আলম মিনা বলেন, ‘আমি নিজেই ঘটনার দিন সেখানে দিয়েছিলাম। সব কিছু শুনেছি, জেনেছি। এ ব্যাপারে তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে। তাই তদন্তের পর সব বলা যাবে।’
নিহতের বড় ভাই মামলার বাদী দিদার বলেন, ‘শুনেছি আমার ভাইকে গুলি করে মেরে ফেলা আসামি এসআই নাজমুল বাদী হয়ে আহতদের বিরুদ্ধাচার করে মামলা করেছেন। জানি না এটা কি রকম অবিচার। এলাকাবাসী শুনে আরো ফুঁসে উঠেছে। এলাকাটি পুলিশ প্রহরায় রয়েছে। চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।’
সরেজমিন ওই এলাকা ঘুরে দেখা যায়, জনতার ওপর পুলিশ হামলা করেছে। হামলায় একজন মারাও গেছেন। অথচ পুলিশ উল্টো আহতদের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক মামলা করেছে। এ কারণে আজ সকাল থেকেই এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। ক্ষোভ-বিক্ষোভে ফুঁসে উঠেছে স্থানীয় জনতা।
প্রসঙ্গত, গত বুধবার রাতে সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারী এলাকার তেলিপাড়ায় উপ-পরিদর্শক নাজমুল হুদা উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত না করে সাদা পোশাকে অভিযান চালায়। ওই এলাকায় গিয়ে কোন ওয়ারেন্ট ছাড়াই সাইফুল ইসলাম, ইমরান আলী জয়, সাদ্দাম আহমেদ, কবির আহমদ ভোলাসহ কয়েকজনকে আটক করে গাড়িতে তুলতে চাইলে প্রতিবাদ জানায়। পরে এলাকাবাসী জড়ো হতে থাকলে পুলিশ গুলিবর্ষণ করে। এতে সাইফুলসহ কমপক্ষে তিনজন আহত হয়। পরে এলাকাবাসী উদ্ধার করে সাইফুলসহ তিনজনকে চমেক হাসপাতালে নিয়ে আসলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনা তদন্তে পুলিশ একটি কমিটি গঠন করে। তিন দিনের মধ্যে তাদের তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। তাছাড়া জনতার উপর গুলিবর্ষণের ঘটনায় দুই পুলিশ সদস্য এবং এক আনসার সদস্যকে সীতাকুণ্ড থানা থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/২৬ জানুয়ারি ২০১৮/হিমেল