ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে যাত্রী সেবা নিশ্চিত, কমলাপুর ও চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনে রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর (আরএনবি) কর্মকর্তা-সদস্য ও আনসার সদস্য নিয়োগ, টিকেট কালোবাজারী রোধ, নাশকতার প্রতিরোধ, চলন্ত ট্রেনে পাথর নিক্ষেপ, ছিনতাই প্রতিরোধ, আরএনবি’র সদস্যদের হাতে ওয়াকিটকি ও হ্যান্ডমাইক সরবরাহ করা, ঝুঁকি এড়াতে ইঞ্জিনে যাত্রী ভ্রমণ প্রতিরোধ, রেলের সম্পত্তি-স্থাপনা রক্ষা ও রেল অঙ্গনে নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ ১৪ দিক-নির্দেশনামূলক গৃহীত কর্ম-পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে পূর্বাঞ্চল রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী (আরএনবি)। এ কর্ম-পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ইতিমধ্যে পূর্বাঞ্চলের স্ব স্ব দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের কঠোর মনিটরিং ও নজরদারিতে রাখতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন পূর্বাঞ্চল রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর (আরএনবি) চীফ কমান্ড্যান্ট মো. ইকবাল হোসেন।
তিনি বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আরএনবি সদস্যদের পাশাপাশি রোড সাইড স্টেশনে ঢাকা, বিমানবন্দর ও চট্টগ্রামে আনসার সদস্যরাও থাকবেন। তাছাড়া রেল প্রশাসনের চাহিদা মোতাবেক যে কোনো দায়িত্ব পালনের জন্য ঢাকা কমলাপুর, বিমানবন্দর ও চট্টগ্রাম স্টেশনে কিছু রিজার্ভ ফোর্স রাখার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
অন্যদিকে রেলপথ মন্ত্রী মুজিবুল হক এমপি ও রেলওয়ের মহাপরিচালক (ডিজি) প্রকৌশলী আমজাদ হোসেন ঈদে যাতে কোন ধরনের নাশকতা না হয় এবং ট্রেনের যাত্রী সেবা নিশ্চিতসহ নানাবিধ বিষয়ে কঠোর মনিটরিং করছেন বলেও রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে।
রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর (সিআই-সিজিপিওয়াই) আনোয়ার হোসেন বলেন, ঈদে সুষ্ঠুভাবে যাত্রী সেবা নিশ্চিতকরণ, বন্ধের সময়সহ রেলের বিভিন্ন স্থানে রেলের সম্পদ রক্ষাসহ ১৪টি বিষয়ে কঠোরভাবে নজরদারিতে রাখতে নির্দেশনা পেয়েছি। এতে রেলের নিরাপত্তা বাহিনীর লোকজন সেভাবে কাজ করছেন বলেও জানান তিনি। একই কথা বললেন সিআই সত্বজিৎ দাশও।
রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী সূত্রে জানা গেছে, নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ ১৪ দিক-নির্দেশনামূলক গৃহীত কর্ম-পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে ঈদুল আজহা উপলক্ষে সুষ্ঠুভাবে অগ্রিম টিকিট বিক্রির জন্য ঢাকা কমলাপুর এবং চট্টগ্রাম স্টেশনে অফিসারসহ আরএনবি এবং প্রায় ৫০০ আনসার (পিসি/এপিসিসহ) নিয়োগ, অধিক যাত্রী রেলওয়েতে ভ্রমণের কারণে টিকিট চেকিং-এ ট্রাফিক বিভাগকে সহযোগিতা করা, নিরাপদ ও সুষ্ঠুভাবে ট্রেন চলাচলের জন্য ট্রেনের ছাদে ভ্রমণ নিয়ন্ত্রণ করা, নিরাপদ ও সুষ্ঠুভাবে ট্রেন চলাচলের জন্য ইঞ্জিনে অবৈধযাত্রী ভ্রমণ প্রতিরোধ করা, স্টেশন এলাকায় টিকিট কালোবাজারী প্রতিরোধের জন্য সাদা পোশাকে এবং ইউনিফর্মে আরএনবি সদস্য নিয়োগ করা, সংরক্ষিত আসনের টিকিটধারীদের সংরক্ষিত আসন উদ্ধারে সহযোগিতা করার জন্য ঢাকা কমলাপুর, বিমানবন্দর এবং চট্টগ্রাম স্টেশনে আরএনবি/আনসার মোতায়েন করা, ঢাকা কমলাপুর, বিমানবন্দর, সিলেট এবং চট্টগ্রাম স্টেশনে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করা, ঢাকা কমলাপুর, বিমানবন্দর এবং চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনে অস্থায়ী আরএনবি ক্যাম্প স্থাপন করা, সদর দপ্তর এবং ট্রেনিং সেন্টার হতে ঢাকা কমলাপুর, বিমান বন্দর এবং চট্টগ্রামে অফিসারসহ আরএনবি সদস্য প্রেরণ করা, গুরুত্বপূর্ণ রেলওয়ে স্থাপনায় বিশেষ করে রেলভবন, সিআরবি, পাহাড়তলী ওয়ার্কশপ, পাহাড়তলী স্টোর, ট্রেনের র্যাক, ইয়ার্ড, লোকোশেড, ডিজেল শেডের নিরাপত্তা জোরদার এবং তদারকি করার জন্য সদর দপ্তর ও ট্রেনিং সেন্টার হতে অফিসারসহ অতিরিক্ত আরএনবি/আনসার সদস্য নিয়োগের পরিকল্পনা গ্রহণ, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, টিকিট কালোবাজারী, নাশকতামূলক কার্যকলাপ, স্টেশন প্ল্যাটফরম, অ্যাপ্রোচ ও চলন্ত ট্রেনে ছিনতাইকারী, অজ্ঞান পার্টি, মলম পার্টি ও দুর্বৃত্তদের কবল হতে যাত্রী সাধারণের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের জন্য রেল প্রশাসনের সমন্বয়, রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর অফিসার ও সদস্যদের উক্ত দায়িত্বগুলো পালনের সুবিধার্থে অফিসার এবং বিভিন্ন চৌকির ইনচার্জদের ওয়াকিটকি এবং হ্যান্ডমাইক সরবরাহের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
বিডি-প্রতিদিন/০৭ আগস্ট, ২০১৮/মাহবুব