২৩ এপ্রিল, ২০১৯ ২০:৫৩

চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগ: সম্মেলন শেষেই গতি ফেরাতে চান নেতারা

সাইদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগ: সম্মেলন শেষেই গতি ফেরাতে চান নেতারা

আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিলের আগেই জেলা ও উপজেলার সম্মেলন শেষ করে সংগঠনের আরো গতি ফেরাতে চান দলের নেতারা। এ নিয়ে তৎপরতাও শুরু করেছে দলটির হাইকমান্ড। 

এ ধারাবাহিকতায় ইতোমধ্যে বিভিন্নভাবে সংগঠনের কর্ম-তৎপরতাও চালিয়ে যাচ্ছেন চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাসহ সাংগঠনিক কমিটি। তবে কেন্দ্রীয় হাইকমান্ডের নির্দেশনা মোতাবেক নিয়মতান্ত্রিকভাবে সকল কাজ করা হবে বলেও জানান চট্টগ্রামের নেতাসহ সংশ্লিষ্টরা।

দলীয় সূত্রে জানা যায়, জাতীয় নির্বাচনে দলের নিরঙ্কুশ বিজয় পেয়ে সরকার গঠন করেছে আওয়ামী লীগ। এরমধ্যে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনও প্রায় শেষ। উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত অংশ না নেয়ায় দলের প্রভাবশালী নেতাদের যোগ্যতা যাচাই করে নিয়েছে দলটি। এবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন ও সংগঠনের জাতীয় কাউন্সিলের প্রস্তুতি শুরু করেছে। 

সম্প্রতি গণভবনে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়ামের এক সভায় তৃণমূল পর্যায়ে সংগঠনের কার্যক্রম তদারকিতে সারা দেশে আটটি সাংগঠনিক টিম গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এছাড়াও স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের নির্বাচনে যে সকল মন্ত্রী, এমপি ও দলীয় নেতৃবৃন্দ সংগঠনের মনোনীত প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করেননি বা করছেন না তাদের কর্মকাণ্ডের ওপর প্রতিবেদন তৈরি ও ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সাংগঠনিক নির্দেশনা প্রদান করা হয়। এ সভায় সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। 

আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, সভাপতিমণ্ডলীর সভায় বঙ্গবন্ধু জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন ও জাতীয় কাউন্সিল নিয়ে আলোচনা হয়েছে। নেত্রী সেখানে বেশ কিছু নির্দেশনা দিয়েছেন এবং তৃণমূলের সাংগঠনিক কার্যক্রম তদারকিতে আটটি টিম গঠন করা হয়েছে। টিমগুলোতে উপদেষ্টামণ্ডলী, সভাপতিমণ্ডলী ও কেন্দ্রীয় কমিটির নেতাদের সমন্বয় করা হবে। 

দলীয় সূত্রে আরো জানা যায়, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক টিম যখন তৃণমূলের শৃঙ্খলা ফেরানোর উদ্যোগ নিয়েছে তখন চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগে বর্তমানে নাজুক অবস্থা বিরাজ করছে। সাংগঠনিকভাবে অগোছালো অবস্থায় চলছে দলীয় কার্যক্রম। চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের কমিটি মেয়াদোত্তীর্ণ। 

এরমধ্যে নগর ও উত্তর জেলায় ভারপ্রাপ্ত সভাপতি দায়িত্ব পালন করছেন। অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনেরও নিয়মিত কমিটি নাই। বিগত জাতীয় নির্বাচনে নৌকার প্রার্থীর পক্ষে ঐক্যবদ্ধভাবে সকল স্তরের নেতা-কর্মীরা কাজ করলেও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রত্যেক উপজেলায় গ্রুপিং-দলাদলি বেড়েছে। এতে কয়েকটি গ্রুপ-উপগ্রুপে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। উত্তর জেলায় ঐক্যের কারণে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ফটিকছড়ি ছাড়া বাকি উপজেলাগুলোতে দলীয় প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়। 

ফটিকছড়িতে বিদ্রোহী প্রার্থী জয়ী হয়। দক্ষিণ জেলার প্রত্যেক উপজেলায় বিদ্রোহী প্রার্থীর দাপট ছিল। দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী থাকার পেছনে অদৃশ্য শক্তি কাজ করেছে বলে নেতা-কর্মীরা জানান। 

রাউজান ও রাঙ্গুনীয়া ছাড়া জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যক্রমে ভাটা থাকায় বিদ্রোহীরা শক্তিশালী অবস্থান করে নেন। এমনকি লোহাগাড়া ও চন্দনাইশে দল পাল্টানো দুই নেতাও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী পরিচয় দিয়ে দলে বিভাজন সৃষ্টি করেন। উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রত্যেকটিতেই মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি।


বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন

সর্বশেষ খবর