মহামারী এই করোনাভাইরাসের কারণে চট্টগ্রাম ওয়াসায় বাড়ছে প্রতিদিন পানির চাহিদা। করোনা ভাইরাস থেকে বাঁচতে ২০ সেকেন্ড ধরে বারবার হাত ধোয়ার কারণে চট্টগ্রাম শহরে দৈনিক প্রায় ৫ কোটি লিটার পানির চাহিদা বেড়ে গেছে। প্রতিবার হাত ধোয়ার সময় প্রায় ৫ লিটার পানি অপচয় হওয়ায় এই চাহিদা বেড়েছে। তবে বন্ধ পাম্প চালু করে ১ কোটি ৩০ লাখ লিটার পানি সরবরাহ বাড়িয়েছে চট্টগ্রাম ওয়াসা এবং রাতদিন কাজ করে নগরবাসীর পানির চাহিদা পূরণে কার্যকর ভূমিকা রাখার জন্যও সংশ্লিষ্ট কর্মীদের নির্দেশনা রয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।
ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) একেএম ফজলুল্লাহ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, বর্তমানে করোনা পরিস্থিতিতে নগরীতে পানির চাহিদা প্রায় ৫/৬ কোটি লিটার বেড়ে গেছে। দিনদিন বাড়ছে চাহিদা। অতিরিক্ত পানির চাহিদা পূরণে ওয়াসা প্রস্তুত রয়েছে। ইতিমধ্যে বেশকিছু বন্ধ পাম্প চালু করে পানির উৎপাদন ১ কোটি ৩০ লাখ লিটার বাড়ানো হয়েছে। ভবিষ্যতে পানির উৎপাদন আরও বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে বলেও জানান তিনি।
নগরীর শুলকবহর এলাকার বাসিন্দা ও সংগঠক মঈনুদ্দিন কাদের লাভলু বলেন, বর্তমানে করোনা ভাইরাস থেকে বাঁচতে সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক বারবার হাত ধোয়া, বাইরে থেকে এসে গোসল করা ও কাপড় ধোয়ার কারণে পানির চাহিদা বেড়েছে। একজন মানুষ ২০ সেকেন্ড হাত ধোয়ার সময় যদি কল খোলা রাখেন তাহলে প্রায় ৫ লিটার পানি অপচয় হয়। কাপড় ধোয়ার সময় কল খোলা রাখা হলে এই অপচয় আরও বাড়ে। তবে সবাই এ বিষয়ে সচেতন না হলে পানির অপচয় দিন দিন বেড়েই যাবে। একই কথা বললেন চান্দঁগাও আবাসিক এলাকার বাসিন্দা সমাজসেবক ও যুবনেতা মোহাম্মদ হানিফও।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, করোনা পরিস্থিতির এই সময়ে এবং আসন্ন রমজানে অতিরিক্ত পানির চাহিদা সামাল দিতে পানি শোধনাগার প্রকল্পগুলোর উৎপাদন ও সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন রাখার জন্য বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে চট্টগ্রাম ওয়াসা। আগামী জুন পর্যন্ত বিল পরিশোধে গ্রাহকদের জরিমানা মওকুফেরও সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। কয়েকদিন আগেই শেখ হাসিনা পানি শোধনাগার পরিদর্শন শেষে চট্টগ্রাম ওয়াসার এক সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তাছাড়া ওয়াসার পানি উৎপাদন ও সরবরাহ কার্যক্রম তত্ত¡াবধানে কর্ণফুলী-১ শেখ হাসিনা পানি শোধনাগার প্রকল্প পরিদর্শনে যান ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) একেএম ফজলুল্লাহ, উপব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম হোসেনসহ দায়িত্বশীলরা।
ওয়াসা সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম শহরে ওয়াসার মোট গ্রাহক আছে ৭১ হাজার। এর মধ্যে ৬৭ হাজার আবাসিক। বর্তমানে ওয়াসার বিভিন্ন পানি শোধনাগারে পানি উৎপাদন হয় ৩৭ কোটি ৩০ লাখ লিটার। এর মধ্যে মোহরা পানি শোধনাগার প্রকল্প থেকে পানি পাওয়া যাচ্ছে ৯ কোটি ৭০ লাখ লিটার, মদুনাঘাট পানি শোধনাগার প্রকল্প থেকে ৯ কোটি লিটার ও শেখ হসিনা পানি শোধনাগার প্রকল্প থেকে পাওয়া যাচ্ছে ১৪ কোটি ৩০ লাখ লিটার। বর্তমানে পানি উৎপাদন ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে ৬০ জন প্রকৌশলী ও ২৬০ জন কর্মী সার্বক্ষণিক পানি শোধনাগারে দায়িত্ব পালন করছেন।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার