২০ অক্টোবর, ২০২০ ১৮:৫৭

অজ্ঞাত রোগী শনাক্তে বায়োমেট্রিক পদ্ধতি

রেজা মুজাম্মেল, চট্টগ্রাম:

অজ্ঞাত রোগী শনাক্তে বায়োমেট্রিক পদ্ধতি

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পে থাকবে একটি বায়োমেট্রিক মেশিন। হাসপাতালে অজ্ঞাত রোগী আসার পর প্রথমেই পুলিশ ওই রোগীর আঙ্গুলের ছাপ নিবেন। জাতীয় পরিচয়পত্রে আঙ্গুলের ছাপ থাকার কারণে বায়োমেট্রিক মেশিনের মাধ্যমে অজ্ঞাত রোগীর পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব  হবে। চমেক হাসপাতালের অজ্ঞাত রোগীর সেবক খ্যাত প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম নেসার অভিনব এ পদ্ধতি উদ্ভাবন করেন। পদ্ধতিটি বাস্তবায়নে দরকার স্বারাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন এবং সরকারি হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পে একটি করে বায়েমেট্রিক মেশিন।       

তবে সরকারি হাসপাতালে পদ্ধতিটি বাস্তবায়নের দাবিতে প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম নেসার ‘অজ্ঞাত রোগী ও লাশের পরিচয় শনাক্তে চমেক হাসপাতালসহ প্রতিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যের মাধ্যমে বায়োমেট্টিক সিস্টেম চালু’ শীর্ষক একটি আবেদন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার বরাবরে জমা দেন।    

অজ্ঞাত রোগীর সেবক খ্যাত প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম নেসার বলেন,  ‘হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অজ্ঞাত রোগী মানেই বাড়তি বিড়ম্বনা। হাসপাতালে দায়িত্বরত চিকিৎসক, নার্স ও মেডিকেলে দায়িত্বরত পুলিশ বাহিনী সকলকেই অজ্ঞাত রোগী নিয়ে সমস্যায় পড়তে হয়। তাছাড়া মর্গে আসা অজ্ঞাত লাশ নিয়ে জটিলতাও প্রতিদিনেরই চিত্র। এ সমস্যা কেবল চমেক হাসপাতাল নয়, এটি  সারাদেশের বড় হাসপাতালগুলোর চিত্র। এটি জাতীয় সমস্যা। সরকারের একটু আন্তরিকতাই পারে এ সমস্যার স্থায়ী সমাধান। তাই সিএমপি কমিশনারের  মাধ্যমে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, আইসিটি মন্ত্রণালয়, নির্বাচন কমিশনের কাছে  অনুরোধ, যাতে দ্রুত উদ্যোগটি বাস্তবায়ন করা হয়। এর মাধ্যমে ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হবে সরকারের, কমবে অজ্ঞাত রোগীর ভোগান্তি।’  

জানা যায়, গত ১৪ বছর ধরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অজ্ঞাত রোগী নিয়ে  কাজ করছেন নেসার। ইতোমধ্যে প্রায় ৮৫০ জন অজ্ঞাত রোগীর সেবা দেওয়া হয় এবং প্রায় ৩৫০ জন অজ্ঞাত রোগীর পরিচয় শনাক্ত করে পরিবারের হাতে তুলে দেন। বর্তমানে প্রতিনিয়তই সরকারি হাসপাতালগুলোতে অজ্ঞাত রোগী  ভর্তি হচ্ছে। চমেক হাসপাতালে প্রতিবছর ভর্তি হয় প্রায় ২৫০ অজ্ঞাত রোগী।

প্রতিবছর এ হাসপাতাল থেকে আনুমানিক ৭০-৮০ জন অজ্ঞাত রোগী স্বজনের কাছে ফিরতে পারেন। তাছাড়া প্রতিবছর ৪০-৫০ জন অজ্ঞাত রোগী চিকিৎসাধীন বা হাসপাতালে আনার পথে মারা যান। পরে অজ্ঞাত রোগী মারা  গেলে লাশ মর্গে রাখা হয়। এরপর বেওয়ারিশ লাশ হিসেবে দাফন করা হয়।

জ্ঞান ফিরলে কিছু অজ্ঞাত রোগী পরিচয় ও মোবাইল নাম্বার বলতে পারলেও অধিকাংশই নিজের পরিচয় বলতে পারেন না। কিন্তু হাসপাতালে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যের তত্ত্বাবধানে বায়োমেট্রিক পদ্ধতি চালুর মাধ্যমে অজ্ঞাত রোগী নিয়ে এমন বিড়ম্বনা নিরসন সম্ভব বলে জানা যায়।  

বিডি প্রতিদিন/ মজুমদার

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর