স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলার প্রধান আসামি সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আকতার রিমাণ্ডের পুরোটা সময় ছিলেন নিরুত্তর। তদন্তকারী সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)’র কর্মকর্তাদের প্রশ্নের উত্তর না নিয়ে উল্টো তাদের উপর প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করে আলোচিত সমালোচিত সাবেক এ পুলিশ কর্মকতা। রিমাণ্ড শেষে সোমবার তাকে আদালতে হাজির করা হয়। তিনি ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিতে রাজি না হওয়ায় চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার জাহান তাকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন।
নগর পুলিশের সহকারি কমিশনার (প্রডিকিউশন) কাজী সাহাবুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘পাঁচ দিনের রিমাণ্ড শেষে আদালতে হাজির করা হয়। উনাকে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিতে বলা হলে তিনি তা অস্বীকার করেন। তদন্তকারী সংস্থাও কোন রিমাণ্ড আবেদন করেনি। তাই আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।’
আদালত সূত্রে জানা যায়, পাঁচ দিনের রিমাণ্ড শেষে বাবুল আকতারকে সোমবার সকালে পিবিআই’র কর্মকর্তারা আদালতে সোপর্দ করে ১৬৪ ধারার জবানবন্দি রেকর্ডের আবেদন করেন। এসময় আদালত বাবুল আকতারকে তিন ঘণ্টা সময় দেন চিন্তা ভাবনার জন্য। এসময় চুপচাপ ভাবে বসে ছিলেন তিনি। জবানবন্দি দিতে রাজি না হওয়ায় আদালত তাকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন। বিচারকের খাস কামরা থেকে বের হওয়ার সময় বাবুলকে বিমর্ষ দেখা যায়। এসময় তিনি কিছু বলতে চেষ্টা করেন। কিন্তু পুলিশ বেষ্টনীতে থাকার কারণে তা বলতে পারেননি। পরে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে প্রিজন ভ্যানে করে তাকে কারাগারে নেয়া হয়।
মামলার তদন্ত সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়- স্ত্রী হত্যার অভিযোগে বাবুল আকতারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমাণ্ডে নেয়ার প্রথম তিন দিনই এক প্রকার নিরুত্তর ছিলেন। উল্টো ‘নার্ভ শক্ত’ আমাকে ভাঙতে পারবে না এধরণের কথা বলে তদন্ত সংশ্লিষ্টদের চাপ প্রয়োগের চেষ্টা করেন। নিজের দুই সন্তানের ভবিষ্যত নিয়ে বিচলিত ছিলেন। মাঝে মাঝে কেঁদেছেনও। কিন্তু মিতুর খুন নিয়ে করা প্রায় সব প্রশ্নই এড়িয়ে গেছেন। প্রশ্ন করলেই বলতেন- ‘আপনারা তো সবই জানেন। আমি কী বলব।’ মুছার বিষয়ে শুরুতে অস্বীকার করলেও পরে তার সাথে সম্পর্কের কথা স্বীকার করেন।’
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ৫ জুন নগরীর জিইসি’র মোড় এলাকায় ছেলেকে স্কুল বাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে খুন হন সাবেক এসপি বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু। এ ঘটনায় বাবুল আক্তার বাদি হয়ে নগরীর পাঁচলাইশ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। খুনের পাঁচ বছর পর পিবিআই’র তদন্তে এ খুনের সাথে বাবুল আকতারের সংশ্লিষ্টতার পায়। পরে পুরনো মামলার চুড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়ে নতুন করে মামলা দায়ের করা হয়। যাতে আসামি করা হয় বাবুল আকতারকে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল