চট্টগ্রামে সরকারি এক হাসপাতালে যখন করোনা আক্রান্ত সংকটাপন্ন রোগীর জন্য আইসিইউ শয্যার হাহাকার চলে, ঠিক তখন অন্য একটি হাসপাতালে আইসিইউ শয্যা খালি। অভিন্ন চিত্র দেখা যায় আইসোলেশন ওয়ার্ডেও। কখন কোন হাসপাতালে কত রোগী আছে, কোন হাসপাতালে আইসিইউ বা সাধারণ শয্যা খালি আছে তার তথ্য অনেকেরই জানা থাকে না। তথ্যের অভাবে সংকটময় মুহূর্তে পাওয়া যায় না শয্যা। ফলে করোনা চিকিৎসায় প্রয়োজনীয় তথ্যের অভাবে বিপাকে পড়ে রোগীরা। কিন্তু সরকারি-বেসরকারি সব স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রের শয্যার জন্য যদি একটা সেন্ট্রাল ইনফরমেশন সেন্টার থাকে, তাহলে শয্যা নিয়ে সমন্বিত তথ্য পাওয়া যেত।
জানা যায়, করোনার প্রথম ঢেউয়ের সময় বেসরকারি হাসপাতালগুলোর দ্বার বন্ধ করে দেওয়ার প্রেক্ষিতে বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের উদ্যোগে ভিজিল্যান্স টিমের মাধ্যমে তথ্য বাতায়ন নামে একটি অ্যাপস চালু করা হয়। সেখানে প্রতিদিনের সর্বশেষ তথ্য সংযোজন করা হত। কিন্তু পরবর্তীতে সেখানে তথ্য হালনাগাদ করা বন্ধ হয়ে যায়। এখন কোন হাসপাতালে কত শয্যা খালি আছে তার কোনো হিসাব সমন্বিতভাবে নেই। গতকাল রবিবার ওই তথ্য বাতায়নে দেখা যায় ‘দ্য ডোমেইন হ্যাজ এক্সপেয়ারড’ লেখা। একটি সেন্ট্রাল ইনফরমেশন সেন্টার থাকলে রোগীর স্বজনরা সহজেই আইসিইউ ও সাধারণ শয্যার খোঁজ পেত।
চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, ‘করোনার প্রথম ঢেউয়ের সময় বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের তত্ত্বাবধানে একটি তথ্য বাতায়ন অ্যাপস খোলা হয়েছিল। তখন আমরা সব হাসপাতালের তথ্য সংগ্রহ করে কমিশনার অফিসে দিলে তারা সেগুলো হালনাগাদ করতেন। পরে হয়তো সেটি বন্ধ হয়ে গেছে। এখন দ্বিতীয় ঢেউয়ে সেটির প্রয়োজনীয়তা আবারও দেখা দিয়েছে। বিষয়টি আমিও ইতোমধ্যে অনুধাবন করেছি। কেন্দ্রীয়ভাবে তথ্য কেন্দ্র থাকলে রোগী-স্বজনদের উপকার হয়। এব্যাপারে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব।
স্বাচিপের করোনা চিকিৎসায় চট্টগ্রাম বিভাগীয় সমন্বয়ক ডা. আ ম ম মিনহাজুর রহমান বলেন, ‘সব হাসপাতালের তথ্য এক জায়গায় হালনাগাদ থাকলে রোগীদের উপকার হয়। বর্তমানে কোন হাসপাতালে কত রোগী কত শয্যা তা জানার সুযোগ নেই। একটা কন্ট্রোল রুম থাকলে সেখানে যোগাযোগ করে তাৎক্ষণিক তথ্য পাওয়া যেত। এর মাধ্যমে রোগী যেমন দ্রুত সেবা পেত, তেমনি স্বজনদেরও ভোগান্তি-দুর্ভোগ কমত।
সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রামে গত রবিবার একদিনেই করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৯ জন এবং নতুন করে শনাক্ত হয় ৮২১ জন। গতকাল পর্যন্ত চট্টগ্রামে মোট আক্রান্ত হন ৬৫ হাজার ৮২৯ জন। এর মধ্যে মহানগরে ৫০ হাজার ৬৬১ জন এবং উপজেলায় ১৫ হাজার ১৬১ জন। ইতোমধ্যে মারা গেছেন ৭৮০ জন। এর মধ্যে মহানগরে ৫০০ জন ও উপজেলায় ২৮০ জন। চট্টগ্রামে সরকারি-বেসরকারি ১১টি ল্যাবে নমুনা পরীক্ষা চলছে।
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা