চুরির অভিযোগে গ্রেপ্তারের পর পিটিয়ে নির্যাতন ও হত্যার হুমকি ছাড়াও নিজ বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে মিথ্যা জবানবন্দির অভিযোগে রেলওয়ের নিরাপত্তা বাহিনীর এক কর্মকর্তাকে ক্লোজ করা হয়েছে। এ ঘটনার পর থেকেই রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীতে (আরএনবি) ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
তাছাড়া এই বাহিনীর সদস্যরা চুরি, পদোন্নতি, বদলি ও স্টাফদের শিক্ষাগত যোগ্যতার লুকোচুরিসহ নানা অনিয়মে তোলপাড় চলছে রেল অঙ্গনে। রবিবার রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর (আরএনবি) চট্টগ্রামের পাহাড়তলী স্টোরসের দায়িত্বপ্রাপ্ত ইন্সপেক্টর ইসরাইল মৃধাকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের কমান্ড্যান্ট শফিকুল ইসলাম মৃধা বলেন, বাহিনীর কিছু সদস্যদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ রয়েছে। কিচু অভিযোগ তদন্তও চলছে। চেষ্টা করছি, বাহিনীর মধ্যে শৃঙ্খলার মধ্যে থেকেই কাজ করতে। এখানে বাহিনীর কিছু সদস্য নানা অঘটন সৃষ্টি করে তাদের ফায়দা হাসিলের চেষ্টা করছে। তবে নির্যাতনসহ নানা অভিযোগের বিষয়ে আরও তদন্ত চলছে বলেও জানান তিনি।
জানা গেছে, রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর (আরএনবি) চট্টগ্রাম অঞ্চলের কমান্ডার শফিকুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক আদেশে ইসরাইল মৃধাকে চট্টগ্রাম দপ্তরে ক্লোজ বা প্রত্যাহার করা হয়। তার জায়গায় অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করতে পাহাড়তলী কারখানার ভারপ্রাপ্ত সিআই একরামুল হককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
প্রত্যাহারের চিঠিতে উল্লেখ রয়েছে, ইসরাইল মৃধার নেতৃত্বে কিছু সংখ্যক আরএনবি সদস্যের পারস্পরিক যোগসাজশে গত ১৯ ও ২০ মার্চ সেইল ডিপোতে চুরির দায়ে পাহাড়তলী চৌকির একটি মামলায় এজাহারভুক্ত আসামি আকরাম আলীকে গ্রেপ্তারের পর খুঁটিতে বেধে অবমাননাকর শাস্তি প্রদান, প্রহার ও হত্যার হুমকি দেওয়া হয়। আসামির ইচ্ছার বিরুদ্ধে বাহিনীর এক সদস্যকে জড়িয়ে জোরপূর্বক জবানবন্দি প্রদানে বাধ্য করা হয়। এ কারণে ইসরাইল মৃধাকে আরএনবি কমান্ড্যান্ট বিভাগে প্রত্যাহার করে উক্ত দপ্তরে ক্লোজ করা হলো।
নিরাপত্তা বাহিনী ও স্থানীয় সূত্রে আরও জানা গেছে, গত ১৯ ও ২০ মার্চ পাহাড়তলী স্ক্র্যাপ ডিপোতে চুরির ঘটনায় ২২ মার্চ রাতে চুরির মামলার এজাহারভুক্ত আসামি আকরাম আলীকে গ্রেপ্তার ও নির্যাতন করে। ওই চুরির সঙ্গে পাহাড়তলী স্টেশনে দায়িত্বরত হাবিলদার কৃষ্ণপদ চক্রবর্তীও জড়িত বলে উল্লেখ করেন। পরে আকরামের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে হাবিলদার কৃষ্ণপদকে পাহাড়তলী স্টেশন থেকে চট্টগ্রামের হালিশহরের রেলওয়ে ট্রেনিং সেন্টারে বদলি করা হয়।
তবে গত ৫ এপ্রিল রাতে আসামি আকরাম আলী জামিনে বেরিয়ে আসার পর ঘটনার মোড় ঘুরে যায়। সেই জবানবন্দির ভিত্তিতে সম্প্রতি আসামি আকরাম জেল থেকে জামিনে ছাড়া পাওয়ার পর বিষয়টি আরএনবি হাবিলদার কৃষ্ণপদকে জানালে ঘটনার পট পরিবর্তন হয়ে যায়। তাছাড়া আকরাম আলীকে নির্যাতন করে হাবিলদার কৃষ্ণপদ চক্রবর্তীর নাম বলতে বাধ্য করা হয় বলেও নিশ্চিত হন বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
বিডি প্রতিদিন/এমআই