বাড়ি থেকে পাঠানো খাবার জোর করে খাওয়ার কথা শিক্ষককে বলে দেওয়ায় মাদ্রাসার দুই সিনিয়র সহপার্ঠী খুন করেন সাত বছরের মাদ্রাসাশিক্ষার্থী ইফতেখার মালিকুল মাশফিকে। খুনের আগে তারা ওই শিশুর ওপর চালায় যৌন নির্যাতন।
তিন মাস আগে খুন হওয়া বোয়ালখালী উপজেলার চরণদ্বীপ দরবার শরীফ পরিচালিত আল্লাম শাহসূফী অছিয়র রহমান মাদ্রাসার শিক্ষার্থী মাশফি হত্যা মামলা তদন্ত করতে গিয়ে এ তথ্য পায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। গ্রেফতার হওয়া দু’জন ওই মাদ্রাসার ১৫ বছর বয়সী কিশোর। তারা খুনের দায় স্বীকার করে রবিবার আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।
চট্টগ্রাম জেলা পিবিআই’র পুলিশ সুপার নাজমুল হাসান বলেন, তিন মাস এ হত্যাকাণ্ড ক্লু লেস অবস্থায় ছিল। তদন্তের দায়িত্ব পাওয়ার পর ১৪ জুন পিবিআই’র একটি দল মাদ্রাসায় গিয়ে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। তবে তেমন কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি। গত শুক্রবার একজন ছাত্র খুনের ঘটনা স্বচক্ষে দেখেছেন এবং সে বিষয়টি জানাতে রাজি হয়েছে। অভিভাবকের মাধ্যমে শুক্রবার রাতে ১০ বছর বয়সী হেফজ বিভাগের ওই ছাত্রকে পিবিআই কার্যালয়ে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এরপর আরেকজন অভিন্নভাবে ঘটনার বর্ণনা দেয়। দু’জনের বর্ণনা অভিন্ন হওয়ার জড়িত দুই ছাত্রকে শনিবার আটক করে পিবিআই কার্যালয়ে আনা হয়। এরপর তারা খুনের দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দেন। তাদের দু’জনের বয়স ১৫ বছর।
পিবিআই পরিদর্শক মোহাম্মদ নেজাম উদ্দীন বলেন, “মাশফির জন্য বাসা থেকে মাঝে মাঝে রান্না করা খাবার পাঠাত। গ্রেফতার হওয়া দু’জন সেই খাবার জোরপূর্বক খেয়ে ফেলত। মাশফি তার বড় ভাইকে বিষয়টি জানায়। তখন বড় ভাই ক্ষুব্ধ হয়ে দু’জনকে বকাঝকা করে এবং তিনি বিষয়টি শিক্ষক জাফরকেও জানিয়ে দেন। জাফরও তাদের ধমক দেয়। এতে দু’জনের ক্ষোভ জমে মাশফির ওপর। পরে তারা মাশফিকে খুন করে।”
প্রসঙ্গত, গত ৫ মার্চ বোয়ালখালীর আল্লামা শাহ অছিউর রহমান হেফজখানার স্টোর রুম থেকে মাশফির লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় মাশফির মামা মাসুদ খান বাদী হয়ে বোয়ালখালী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় বোয়ালখালী থানা পুলিশ তিন শিক্ষককে গ্রেফতার করেছিলেন। জাফরকে রিমান্ডে নিয়ে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল। তবে তখন খুনের রহস্য উদঘাটন হয়নি।
বিডি প্রতিদিন/কালাম