চট্টগ্রাম নগরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে জন্মগ্রহণ করে ফুটফুটে এক কন্যা সন্তান। কিন্তু জন্মের পরই তার কপালে একটা ত্রুটি দেখা দেয়। হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র গ্রহণ করে অভিভাবক। কিন্তু নিয়ে ফেলে দেয়া হয় সড়কের পাশে। সেখান থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করে ভর্তি করা হয় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে। দেয়া হয় প্রয়োজনীয় চিকিৎসা। সেই শিশু এখন আগের চেয়ে ভাল। পর্যায়ক্রমে শিশুটি সুস্থ হওয়ার পথে। তবে শিশুটির এখন দরকার মায়ের স্নেহময় কোল, পরম মমতা ও আদর।
জানা যায়, গত ২৫ জুলাই নগরীর পাঁচলাইশ থানাধীন জাতিসংঘ পার্কের পাশে একটি পুটলিতে বাঁধা কন্যা নবজাতক পাওয়া যায়। পরে এক পথচারী শিশুটিকে উদ্ধার করে চমেক হাসপাতালের নবজাতক ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। এই শিশুর কপালে একটি জন্মগতভাবে মাংসপিণ্ড ছিল। ইতোমধ্যে অপারেশনের মাধ্যমে সেটি সারিয়ে নেওয়া হয়। হাসপাতালের শিশু এনআইসিইউ হয়ে বর্তমানে নিউরো সার্জারি বিভাগে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। ওয়ার্ডের চিকিৎসক-নার্সদের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা এবং হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির পক্ষ থেকেও প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দেয়া হচ্ছে।
হাসপাতালের নিউরো সার্জারি বিভাগের চিকিৎসক ডা. মাহমুদা সুলতানা আফরোজা বলেন, শিশুটির এখন অক্সিজেন প্রয়োজন হচ্ছে না। ওজনও এখন ভাল আছে। ধীরে ধীরে বাড়ছে। তবে শরীরে সামান্য ইনফেকশন আছে, তা ইনজেকশনে সেরে যাবে। আশা করি রিকভার হয়ে যাবে। কিন্তু তার এখন দরকার মায়ের মমতা, আদর ও স্নেহ। চিকিৎসার সঙ্গে সঙ্গে এসব সেবা পেলে শিশু কন্যাটি সম্পূর্ণ ভাল হয়ে যাবে।
চমেক হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক অভিজিৎ সাহা বলেন, হাসপাতালের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা চলছে। তাছাড়া সমিতির পক্ষ থেকে ওষুধ, দুধ, ডায়াপার, ওয়েট টিস্যুসহ প্রয়োজনীয় সামগ্রী দেওয়া হচ্ছে। তবে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে শিশুটি একজন মায়ের কোলে আশ্রিত হওয়া উচিত। তাতে আশা করি সে স্বাভাবিক জীবন পাবে।
জানা যায়, গত ১৮ মে গভীর রাতে চট্টগ্রামের আনোয়ার উপজেলার প্রসূতি রোগী জেসমিন আক্তার প্রসব বেদনা নিয়ে চমেক হাসপাতালের প্রসূতি ওয়ার্ডে ভর্তি হন। প্রসব করেন একটি কন্যা সন্তান। কিন্তু সকালেই স্বামী-স্ত্রী উধাও। এরপর গত সাড়ে তিনমাস ধরে পরম মমতায় বড় হয় হাসপাতালের নবজাতক ওয়ার্ডে। গত সপ্তাহে তাকে সমাজসেবা অধিদপ্তরের পরিচালনাধীন ‘ছোট মনি নিবাসে’ হস্তান্তর করা হয়। সেখানেই এখন কন্যা শিশুটি বড় হচ্ছে।
বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর