ছাত্র রাজনীতিকে আকর্ষণীয় করে তুলতে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, গত ২৪ বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচন হয় না। যদি এ নির্বাচন হতো, তাহলে এ সময়ের মধ্যে ৪৮ জন নেতা তৈরি হতো। ছাত্র সংসদ নির্বাচন না হওয়ায় সে পথ বন্ধ হয়ে গেছে। বন্ধ হয়ে যাওয়া এই প্রোডাকশনটা গণতন্ত্র চর্চা, নেতৃত্ব বিকাশ এবং ছাত্রনেতা থেকে জাতীয় নেতা সৃষ্টি হওয়ার জন্য চালু হওয়া উচিত।
রবিবার দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে দুইদিনব্যাপী ছাত্রলীগের বর্ধিত সভা ও কর্মশালার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
সংগঠনের সভাপতি মো. সাইফুর রহমান সোহাগের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসাইনের পরিচালনায় সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আবদুল মান্নান এমপি, একেএম এনামুল হক শামীম, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোল্লা মো. আবু কাওছার, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সাজ্জাদ সাকিব বাদশা প্রমুখ। দু’দিনব্যাপী ছাত্রলীগের এ বর্ধিত সভা এবং কর্মশালায় কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির নেতৃবৃন্দ ও বিভিন্ন জেলা ও মহানগর শাখার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা অংশ গ্রহণ করেছে।
ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ওবায়দুল কাদের বলেন, ছাত্র সংসদ নির্বাচন করতে গেলে একজন ছাত্রনেতা নিজেকে নিয়ে ভাবতে পারে যে তাকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছাতে হবে, তাই ভালো হতে হবে, নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করতে হবে। আর তাঁর বক্তব্যও হবে পরিশীলিত, যেটি সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছে গ্রহণযোগ্য। তিনি বলেন, বক্তৃতায় ছাত্রনেতাদের জাতীয় রাজনীতি নিয়ে কথা বলার আগে অবশ্যই ছাত্র সমস্যা ও শিক্ষা সমস্যা নিয়ে কথা বলতে হবে। তাহলেই সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের কাছে নিজেকে আকর্ষণীয়ভাবে উপস্থাপন করা যাবে। তিনি বলেন, ভাইয়া রাজনীতি বন্ধ করেন, ছাত্রলীগ করেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি-জামায়াত সরকারে প্রকাশ্য শত্রুতার মাধ্যমে সরকারে অর্জনকে ম্লান করতে ব্যর্থ হয়ে গোপন শত্রুতার পথ বেছে নিয়েছে। তিনি বলেন, সাম্প্রদায়িক উগ্রবাদকে ব্যবহার করে খ্রিস্টান নাগরিক ও হিন্দু পুরোহিতকে টার্গেট করে হত্যা করছে। বিদেশে সরকারের মিত্রদের সাথে সম্পর্ক নষ্ট করার জন্য তারা এ পরিকল্পনা করেছে। সাম্প্রদায়িক উগ্রবাদ দেশের জন্য বর্তমানে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করার জন্য এ কর্মশালায় পরিকল্পনা গ্রহণ করে তা বাস্তবায়ন করতে হবে।
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ওবায়দুল কাদের বলেন, রাজনীতিতে অশিক্ষিত-অর্ধশিক্ষিত নেতায় ভরে গেছে। তারা ক্ষমতা-অর্থের দাপট দেখিয়ে নেতাকর্মীদের ওপর ছড়ি ঘোরান। কিছু কিছু জনপ্রতিনিধিরা এত ক্ষমতা পরায়ন যে তাদের চাওয়ায় সব কিছু হয়।
আবদুল মান্নান বলেন, ছাত্রলীগকে বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ, মাদ্রাসা ও স্কুল কমিটিগুলোকে শক্তিশালী করতে হবে। জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় ছাত্রলীগকে রাজপথে থেকে জনসচেতনা সৃষ্টি করতে হবে। সরকারের সাফল্যগুলো জনগণের কাছে তুলে ধরতে হবে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের আগে ছাত্রলীগের জন্ম। সেই সংগঠনের নেতাকর্মীকে ভাল মানুষ হতে হবে। আমরা এখন নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশে আছি। আগামীতে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হবো। সে জন্য শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে হবে।
এনামুল হক শামীম বলেন, বিশ্বে এই মুহুর্তে সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী শেখ হাসিনা। তিনি শুধু বাংলাদেশ নয়, দক্ষিণ এশিয়াও নয়, বিশ্বকে নেতৃত্ব দেওয়ার মত যোগ্যতা রাখেন। তার নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে চলেছে। ছাত্রলীগের কর্মকাণ্ডে যেন সরকারের অর্জন নষ্ট না হয় সে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। তিনি বলেন, আজকের ছাত্রলীগ আগামী দিনে দেশের নেতৃত্ব দেবে। এই ছাত্রলীগই দেশের স্বাধীনতার নেতৃত্বে ছিল, পতাকা দিয়েছেন।
বিডি-প্রতিদিন/ ১২ জুন, ২০১৬/ আফরোজ