নবীন-প্রবীণের ভীড়ে মিলনমেলা মুখরিত হবে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সুবর্ণজয়ন্তী। আগামী ১৮ ও ১৯ নভেম্বর এ আয়োজনকে সামনে রেখে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন পয়েন্টে সাজানো হচ্ছে বিভিন্ন রং-বেরঙের আলোক সজ্জায়। তবে এ উপলক্ষে মিলনমেলা এ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় আয়োজন। প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের মধ্যে লক্ষ্য করা যাচ্ছে উৎসবের আমেজ। এ অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের জন্য দেয়া হয়েছে আধা ঘণ্টা অন্তর চট্টগ্রাম থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত ট্রেন ব্যবস্থাও। রয়েছে বাসসহ ব্যক্তিগত যানবাহনও। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও ব্যস্ত রয়েছে শেষ সময়ের সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিশ্চিত করার জন্য। তবে অনুষ্ঠানকে সুন্দর পরিবেশে তুলে ধরতে বাজেট রাখা হয়েছে আড়াই কোটি টাকা। এটি বড় অংশই দিচ্ছেন প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা।
জানা যায়, সাবেক শিক্ষার্থীদের মধ্যে নির্ধারিত ফি দিয়েছেন ৭ হাজার ৬৫০ জন। তবে সাবেক শিক্ষার্থী যারা রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করেছেন কিন্তু টাকা জমা দিতে পারেননি, তারা এখনো সুযোগ পাচ্ছেন। আড়াই কোটি টাকা বাজেটের ওই অনুষ্ঠানে সাবেক শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে পাওয়া গেছে এক কোটি টাকার বেশি। বাকি টাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও বিভিন্ন খাত থেকে সংগ্রহ করা হচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, সুবর্ণজয়ন্তীতে যোগ দিতে প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের মধ্যে নিবন্ধন করেছেন ৯ হাজার ৫৫৮ জন। অন্যদিকে বর্তমান শিক্ষার্থীদের মধ্যে নিবন্ধন করেছেন ২০ হাজার ২৯২ জন। দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের প্রথম দিন ১৮ নভেম্বর বিকেল তিনটায় চট্টগ্রাম নগরীর চারুকলা ইনস্টিটিউট থেকে র্যালির মধ্য দিয়ে শুরু হবে সুবর্ণজয়ন্তীর আনুষ্ঠানিকতা। র্যালিটি নগরীর প্রধান সড়কগুলো প্রদক্ষিণ করে সিআরবির শিরীষতলায় এসে শেষ হবে। সন্ধ্যায় জিইসি কনভেনশন সেন্টারে সাবেক শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে আয়োজন করা হয়েছে ‘ওয়েলকাম নাইট’, সঙ্গে থাকবে চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী মেজবানের আয়োজন। পরে রাত ১১টা পর্যন্ত চলবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় দিন ১৯ নভেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে চলবে সুবর্ণজয়ন্তীর মূল আয়োজন। সকাল ১০টায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শুরু হবে দ্বিতীয় দিনের আয়োজন। সকাল ১১টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করবেন। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমীন চৌধুরী। সুবর্ণজয়ন্তীতে বক্তা থাকবেন প্রফেসর ড. আনিসুজ্জামান। বিশেষ অতিথি গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, পানিসম্পদমন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, সাবেক সিটি মেয়র এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আবদুল মান্নানসহ চট্টগ্রামের বরেণ্য রাজনীতিবিদ, শিক্ষাবিদ ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বরা।
সূবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের সাংস্কৃতিক উপ-পর্ষদ কমিটির সদস্য সচিব এ এইচ এম রাকিবুল মাওলা বলেন, সুন্দর পরিবেশে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করার প্রস্তুতি চলছে। এতে প্রথমে সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা এবং পরে ওয়ারফেজ, লালন, আর্টসেল অনুষ্ঠানে অংশ নেবে। থাকবেন সঙ্গীতশিল্পী তপন চৌধুরী ও দিনাত জাহান মুন্নী। এছাড়া বিভিন্ন উপ-কমিটির নেতারাও সূর্বণজয়ন্তী সুন্দর করে গড়ে তুলতে কাজ করে যাচ্ছেন।
বিডি-প্রতিদিন/ ১৫ নভেম্বর, ২০১৬/ আফরোজ