রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের অফিস কক্ষের তালা খুলে না দেওয়ায় ভাঙচুর চালিয়েছেন বিএনপিপন্থী বিক্ষুব্ধ কাউন্সিলর ও দলীয় নেতাকর্মীরা। আজ দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে মেয়রের কক্ষের পাশে তার ব্যক্তিগত সহকারীর অফিস কক্ষে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। অফিসের কাঁচের দেয়াল ও চেয়ার ভাঙচুর করা হয়। পরে পুলিশ গিয়ে বিএনপিপন্থী কাউন্সিলর ও দলের নেতাকর্মীদের সেখান থেকে সরিয়ে দেয়। পুরো নগর ভবনে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়। ওই সময় পর্যন্ত মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল তার চেয়ারে বসতে সচিবের কক্ষে অপেক্ষা করছিলেন। এরই মধ্যে পুলিশের উপস্থিতিতে তালা ভাঙা হয়। এরপর পুলিশ মেয়রের দফতরে থাকা জিনিসপত্রের তালিকা প্রস্তুত করে।
সাময়িক বরখাস্তের দীর্ঘ ২৩ মাস পর আদালতের রায় হাতে নিয়ে রবিবার সকাল পৌনে ১০টার দিকে নগর ভবনে যান মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল। গিয়ে দেখেন, তার কক্ষটি তালাবদ্ধ। এ নিয়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।
নগরীর বোয়ালিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাহাদাত হোসেন খান বলেন, সিটি করপোরেশন মেয়রকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেবে কীনা, তা তারা জানেন না। এখানে যেন আর কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, সে জন্য পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। পরিস্থিতি এখন পুলিশের নিয়ন্ত্রণে।
এদিকে মেয়র বুলবুল বলেন, আদালতের রায় হাতে নিয়েই তিনি দায়িত্ব নিতে এসেছেন। কিন্তু এসে দেখেন তার কক্ষ তালাবদ্ধ। তবে তিনি যেহেতু ভোটে নির্বাচিত এবং আদালতের রায়ে দায়িত্ব ফিরে পেয়েছেন, সেহেতু লিখিতভাবে কোনো আনুষ্ঠানিকতার দরকার নেই। তিনি এমনিতেই মেয়র।
রাসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. শরীফ উদ্দীন বলেন, কে বা কারা মেয়রের কক্ষে তালা দিয়ে গেছে তিনি জানেন না। চাবি না থাকায় তিনি খুলতে পারবেন না। তবে মেয়রকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়া হচ্ছে কী না, জানতে চাইলে তিনি বলেন- ‘মেয়রকে দায়িত্ব দায়িত্ব দেওয়া কিছু নেই। তিনি নগর ভবনে আসা মাত্র দায়িত্বের মধ্যে আছেন।’
রবিবার সকাল থেকেই নগর ভবনে দায়িত্বপ্রাপ্ত মেয়র নিযাম-উল-আযীমকে দেখা যায়নি। মেয়র বুলবুল দু’দিন আগেই ঘোষণা দিয়েছিলেন, দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি সংবাদ সম্মেলন করবেন। রবিবার বেলা ১১টায় সেটি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। নগর ভবনে গিয়ে এমন পরিস্থিতি দেখে মেয়র বুলবুল তার সংবাদ সম্মেলন স্থগিত করেছেন।
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে ৭ মে সিটি মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলকে মেয়র পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। ২০১৬ সালের ১০ মার্চ উচ্চ আদালত তার বরখাস্ত আদেশ অবৈধ ঘোষণা করেন। গত মঙ্গলবার স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপসচিব মাহমুদুল আলম স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে উচ্চ আদালতের নির্দেশনা বাস্তবায়নে ভারপ্রাপ্ত মেয়র ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশনা দেওয়া হয়। এরপরই রবিবার দায়িত্ব নিতে নগর ভবনে যান মহানগর বিএনপির সভাপতি মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার