২১ অক্টোবর, ২০১৯ ১৮:৩৪

বরিশাল সিটি করপোরেশনের ৩ কর্মকর্তা বরখাস্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল:

বরিশাল সিটি করপোরেশনের ৩ কর্মকর্তা বরখাস্ত

বরিশাল সিটি করপোরেশনের ৩ কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। গত রবিবার সন্ধ্যায় সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. ইসরাইল হোসেন সাক্ষরিত এক অফিস তাদের বরখাস্ত করা হলেও সোমবার এই আদেশ জারি হয়। 

অনিয়ম-দুর্নীতির দায়ে সাময়িক বরখাস্তকৃত ৩ কর্মকর্তা হলো বাজেট কাম হিসাব রক্ষন কর্মকর্তা মো. মশিউর রহমান, বাজার শাখার সুপারিনটেনডেন্ট মো. নুরুল ইসলাম এবং ট্রেড লাইসেন্স শাখার সুপারিনটেনডেন্ট আজিজুর রহমান। একই সাথে কেন তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে না তা লিখিত আকারে জানাতে বলেছে সিটি করপোরেশন। সাময়িক বরখাস্ত হওয়ার আগে ওই ৩ জনকে নিজ নিজ শাখা থেকে সরিয়ে (ওএসডি) প্রশাসনিক শাখায় বিশেষ কর্মে নিযুক্ত করেছিলো সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ। 

এছাড়া একই দিন পৃথক অফিস আদেশে তথ্য গোপন করে ঢাকায় তথ্য কমিশনের শুনানিতে অংশ নেয়ায় বর্তমানে সিটি করপোরেশনের প্রশাসনিক শাখায় বিশেষ কর্মে নিযুক্ত (ওএসডি) সাবেক জনসংযোগ কর্মকর্তা আহসান উদ্দিন রোমেলকে দ্বিতীয় দফায় কারন দর্শনোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে। 

বিসিসি’র জনসংযোগ কর্মকর্তা বেলায়েত হাসান বাবলু জানান, বাজেট কাম হিসাব রক্ষন কর্মকর্তা মশিউর রহমানের বিরুদ্ধে নিজ পদে থাকাকালীন প্রভাব খাটিয়ে উচ্চতর স্কেল গ্রহণ, বেতনের সাথে তারতম্যবিহীন অর্থ আয় ও নামে-বেনামে বিভিন্ন ব্যাংকে হিসেব নম্বর খুলে বিসিসি’র অর্থের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে জ্ঞাত বহির্ভূত আয়ের অভিযোগ রয়েছে। 

বাজার সুপারিনটেনডেন্ট নুরুল ইসলানের বিরুদ্ধে নিজ পদে থাকাকালীন উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত না করে বিভিন্ন নামে ও বেনামে সিটি করপোরেশনের একাধিক স্টল বরাদ্দ দেয়ার অভিযোগ রয়েছে। বরাদ্দবিহীন স্টল কর্তৃপক্ষের অগোচরে নিজের ইচ্ছায় জনসাধারণের কাছে ভাড়া দিয়ে ভাড়ার টাকা আত্মসাৎ এবং অনেক গ্রাহকের কাছ থেকে উৎকোচ গ্রহন করে স্টল বরাদ্দ দেয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। 

ট্রেড লাইসেন্স সুপারিনটেনডেন্ট আজিজুর রহমানের বিরুদ্ধে বাজার সুপারিনটেনডেন্ট পদে থাকাকালীন উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত না করে বিভিন্ন নামে ও বেনামে সিটি করপোরেশনের একাধিক স্টল বরাদ্দ দেয়ার অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া নিজ পদে (ট্রেড লাইসেন্স সুপারিনটেনডেন্ট) থাকাকালীন সহায়ক কর্মচারীকে দুর্নীতিতে উদ্বুদ্ধ করার নির্দেশ প্রদান করেন তিনি। 

সাময়িক বরখাস্তকৃতদের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ সিটি করপোরেশনের (কর্মকর্তা-কর্মচারী) চাকরি বিধিমালা মোতাবেক অপরাধ। 

অনিয়ম দুর্নীতি করে ওই ৩ কর্মকর্তা সিটি করপোরেশনের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করাসহ আর্থিক ক্ষতিসাধন করেন। এ কারনে তাদের ৩ জনকেই চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তবে বিধিমালার ৪৪(১) ধারা মোতাবেক বরখাস্তকালীন সময়ে তিনজনেই খোরাকীভাতা প্রাপ্য হবেন বলে জনসংযোগ কর্মকর্তা বাবলু জানান। 

এদিকে বর্তমানে প্রশাসনিক শাখায় বিশেষ কর্মে নিযুক্ত সিটি করপোরেশনের সাবেক জনসংযোগ কর্মকর্তা আহসান উদ্দিন রোমেলকে দ্বিতীয়বার কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। নোটিশে তার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক শাখায় সংযুক্ত থাকলেও তথ্য গোপন রেখে মিথ্যের আশ্রয় নিয়ে তথ্য কমিশনের শুনানীতে উপস্থিত থাকার জন্য ঢাকায় অবস্থান করেও অফিস আদেশে স্বাক্ষর করার অভিযোগ রয়েছে। বিষয়টি জানতে পেরে সম্প্রতি তাকে কারন দর্শানোর নির্দেশ দেয় কর্তৃপক্ষ। পরবর্তী ৩ কার্যদিবসের মধ্যে তাকে নোটিশের জবাব দিতে বলা হলেও কোন জবাব দেননি রোমেল। যা সিটি করপোরেশনের (কর্মকর্তা-কর্মচারী) চাকরি বিধিমালা-২০১০ এর সাধারণ আচরন শৃঙ্খলা ৩৭ (খ) ধারা মোতাবেক অপরাধ হওয়ায় দ্বিতীয়বার তাকে কারন দর্শানোর নির্দেশ দেয়া হয়। 

বিসিসি’র সিইও স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে সাময়িক বরখাস্ত হওয়া ৩ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কেন বিভাগীয় মামলা দায়ের করা হবে না তা পরবর্তী ৭ কার্যদিবসের মধ্যে লিখিতভাবে জানাতে বলা হয়েছে।

বিডি প্রতিদিন/মজুমদার

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর