৭ ডিসেম্বর, ২০১৯ ২২:৫০

৭ মার্চকে জাতীয় ঐক্যদিবস ঘোষণার দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক

৭ মার্চকে জাতীয় ঐক্যদিবস ঘোষণার দাবি

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ভাষণে গোটা জাতি ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল। তাই এই দিনকে জাতীয় ঐক্যদিবস ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন দেশের বিশিষ্টজনেরা। তারা বলেন, পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে বাঙালি জাতিকে দাঁড়ানোর শক্তি দিয়েছিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণ। তাই ৭ মার্চকে জাতীয় দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হোক। একইসঙ্গে বঙ্গবন্ধুর ভাষণের ইতিহাস সবার কাছে সহজলভ্য করার দাবি জানান তারা।

রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে শনিবার ‘৭ মার্চের ভাষণ: জানা অজানা তথ্য’ বইটির মোড়ক উম্মোচন অনুষ্ঠানে বক্তারা এই দাবি জানান। 

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ভাষণের ওপর বইটি লিখেছেন মমতাজুল ফেরদৌস জোয়ার্দার। এ উপলক্ষে এক আলোচনা সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ফোরাম। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বিচারপতি শাসুদ্দীন আহমেদ চৌধুরী মানিক। বক্তব্য রাখেন মুহম্মদ শফিকুর রহমান এমপি, মুক্তিযেদ্ধা সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের মহাসচিব হারুন হাবীব, ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের ভিসি অধ্যাপক ড. আবদুল মান্নান চৌধুরী, ইতিহাসবিদ অধ্যাপক ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ, রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও লেখক বখতিয়ার উদ্দীন চৌধুরী প্রমুখ। 

সভাপতিত্ব করেন ফোরামের সভাপতি কবীর চৌধুরী তন্ময়।

বিচারপতি শামসুদ্দীন চৌধুরী মানিক বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস আগামী প্রজন্মের পৌঁছানোর দায়িত্ব আমাদের সকলের। সেই প্রেক্ষিতে ‘৭ মার্চের ভাষণ : জানা অজানা তথ্য’ বইটি একটি দলিল হিসেবে অবদান রাখবে। ইতিহাসের নানান বিকৃতি থেকে উঠে আসতে এই বই আমাদের সাহায্যে করবে। 

সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেন, ৭ মার্চ ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে ১৮ মিনিট ৩১ সেকেন্ডে ১ হাজার ১০৮ শব্দের ভাষণ দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। আজ সেই ভাষণ জাতিসংঘের স্বীকৃতি অর্জন করেছে। কিন্তু বাঙালিদের সবচেয়ে বড় গুণ হলো- ইতিহাস ভুলে যায়, গুলে খায় ও বিকৃতি করে। তরুণ এই লেখকের বইয়ে ৭ মার্চের ভাষণ নিয়েযে তথ্য আছে, তা ইতিহাসের নানান বিকৃতি থেকে উঠে আসতে আমাদের সাহায্যে করবে।

হারুন হাবীব বলেন, ৭ মার্চের ভাষণ এ জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করেছিল। নিরস্ত্র বাঙালীকে সশস্র পাকিস্তানির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর সাহস যুগিয়েছিল। মুক্তির দিশ দিয়েছিল। স্বাধীনতার স্বপন জাগিয়েছিল। আজ মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস তরুণ প্রজন্মের কাছে তুলে ধরা আমাদের সবার দায়িত্ব। 

সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, সেদিন বঙ্গবন্ধুর ভাষণ ছিল জ্বালাময়ী। এটি হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ ভাষণ। বাঙালি জাতির ইতিহাসে এত বড় জনসভা আর হয়নি। কোনোদিন হবেও না। আবদুল মান্নান চৌধুরী বলেন, পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে বাঙালি জাতিকে দাঁড়ানোর শক্তি দিয়েছিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণ। তাই ৭ মার্চকে জাতীয় দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হোক।

আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানার জন্য তরুণ এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের এমন একটা গবেষণাধর্মী বইয়ের খুবই দরকার ছিল। মমতাজুল ফেরদৌস জোয়ার্দার মানুষের দ্বারে দ্বারে গিয়ে অনেক পরিশ্রম করে এই বইটি লিখেছেন। লেখক কোন পেশাদার লেখক না। মনের তাগিদ-চেতনা থেকে ৭ মার্চের ভাষণের নানা জানা অজানা তথ্য এখানে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন লেখক। এখন যারা বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে গবেষণা করছেন তারা এই বইটি থেকে অনেক তথ্য উপাত্ত পাবেন মুক্তিযুদ্ধের সঠিক  ইতিহাস আগামী প্রজন্মের পৌঁছানোর দায়িত্ব আমাদের সকলের। সেই প্রেক্ষিতে এই বইটি একটি দলিল হিসেবে অবদান রাখবে।

আলোচনায় আরও অংশ নেন মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল, মিল্টন বিশ্বাস, আনিসুর রহমান মিঠু, ফয়সাল আহসান উল্লাহ, হাফেজ ক্বারি মো. সাজ্জাদ হুসেন প্রমুখ।

বিডি প্রতিদিন/এনায়েত করিম

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর