৩১ জুলাই, ২০২১ ১৯:৩৯

কর্মস্থলে ফিরতে পুলিশি বাধায় শ্রমিকদের অবরোধ, শেষে বিআরটিসির বাসে যাত্রা

অনলাইন ডেস্ক

কর্মস্থলে ফিরতে পুলিশি বাধায় শ্রমিকদের অবরোধ, শেষে বিআরটিসির বাসে যাত্রা

কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যে রফতানিমুখী শিল্প-কারখানা খুলে দেওয়ার ঘোষণায় কর্মস্থলে ফিরতে গ্রাম ছাড়ছে মানুষ। ছবি- সংগৃহীত

কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যে রফতানিমুখী শিল্প-কারখানা খুলে দেওয়ার ঘোষণায় কর্মস্থলে ফিরতে গ্রাম ছাড়ছে মানুষ। শনিবার ঠাকুরগাঁও,  পঞ্চগড়, লালমরিহাট, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী ও দিনাজপুর থেকে আসা হাজারো শমিকের ঢল নামে রংপুরের মডার্ন মোড়ে। কিন্তু এতো মানুষের জন্য নেই কোনো পরিবহন ব্যবস্থা। তাই কর্মস্থলে ফিরতে গাড়ির দাবিতে ঢাকা-রংপুর মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন শ্রমিকরা।

তখন আইনশৃঙ্খলাবাহিনী বাধা দিলে ফুঁসে ওঠেন তারা। প্রতিবাদে মহাসড়ক অবরোধ করে পণ্যবাহী ট্রাকসহ প্রাইভেটকার চলাচল বন্ধ করে দেন তারা। প্রশাসনের অনুরোধ উপেক্ষা করে সড়কে বসেই আন্দোলন চালিয়ে যান তারা। 

রংপুর মহানগর পুলিশের অপরাধ বিভাগের উপসহকারী পুলিশ কমিশনার উজ্জল রায় জানান, আজ শনিবার সকালে উত্তরের নীলফামারী, লালমনিরহাট, রংপুর ও কুড়িগ্রাম, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও ও পঞ্চগড় জেলার সহস্রাধিক শ্রমিক গাদাগাদি করে মাইক্রোবাস ও ট্রাকে করে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেন। বেলা ১১টায় রংপুর নগরীর মডার্ন মোড়ে তাদের পথরোধ করে জিজ্ঞাসা করা হলে তারা পরিচয় দেন পোশাক শ্রমিকের। প্রমাণস্বরূপ সংশ্লিষ্ট কারখানার পরিচয়পত্রও দেখান তারা। তখন তাদের নিজেদের বাড়িতে ফিরে যাওয়ার অনুরোধ জানানো হয়।

তবে শ্রমিকদের অভিযোগ, স্বাস্থ্যবিধি না মানায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিবহন চালকদের মামলা ও জরিমানা করলে তারা ফুঁসে ওঠেন। প্রতিবাদে রংপুর-ঢাকা ও দিনাজপুর মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে তারা। 

তিন ঘণ্টা পর সাড়ে ৩টার দিকে কয়েকটি বিআরটিসির বাসে মডার্ন মোড় থেকে শ্রকিমদের নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করে। 

যানবাহন চলাচল বন্ধের পরও বিআরটিসি বাসে যাওয়া প্রসঙ্গে প্রশাসনের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, জরুরি পরিসেবার আওতায় তাদের মৌখিকভাবে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

শ্রমিকরা বলছিলেন, সরকার ১৫ দিনের বিধিনিষেধ দিয়ে সব গার্মেন্ট ফ্যাক্টরি ও শিল্প-কারখানা বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছিল। হঠাৎ করে শুক্রবার ঘোষণা দেয় রবিবার থেকে গার্মেন্ট ফ্যাক্টরিসহ কারখানা খোলা থাকবে। তাদের এ ঘোষণা দেওয়ার আগে শ্রমিকদের ঢাকায় যাওয়ার জন্য পরিবহনের কোনো ব্যবস্থা না করে হঠকারী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যে কারণে চরম বেকায়দায় পড়েছি আমরা।

কুড়িগ্রামের পোশাক শ্রমিক হাসনা বানু বলেন, হঠাৎ করে শুক্রবার রাতে আমার মোবাইল ফোনে মেসেজ আসে, ১ আগস্ট কর্মস্থলে যোগ দেওয়ার নির্দেশ। আমাদের অনেকেই ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-টঙ্গীর বিভিন্ন কারখানায় কাজ করে। এখন গাড়ি চলে না। আমরা কীভাবে যাব?

‘প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার আগে তাদের কর্মস্থলে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা উচিত ছিল’, বলেন গার্মেন্ট শ্রমিক নেতা আহাম্মেদ আলী। তিনি বলেন, ‘রংপুর অঞ্চলের বিভিন্ন জেলার প্রায় ২৫ লাখ নারী ও পুরুষ শ্রমিক গার্মেন্টে বা বিভিন্ন কারখানায় কাজ করছেন। বিকাল ৩টার দিকে পুলিশ এসে শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনা করলে তারা সড়ক থেকে অবরোধ তুলে নেন। অন্যদিকে কর্মস্থলে যোগ দিতে কুড়িগ্রামের চিলমারি দিয়ে নদীপথে শতশত মানুষ ঢাকার উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন। 

বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর