ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটির সভাপতি ক্যাপ্টেন (অব.) এবি তাজুল ইসলাম বলেছেন, জিয়াউর রহমান মুক্তিযোদ্ধার আবরণে মূলত পাকিস্তানের এজেন্ট ছিল। বাংলাদেশের স্বাধীনতা মেনে নিতে পারেনি। পাকিস্তানি ভাবধারায় দেশকে ফিরিয়ে নিয়ে যেতেই তৎকালীন অধীনস্তন সেনা কর্মকর্তাদের ‘গো এহেড’ নির্দেশনা দিয়ে জিয়া সরাসরি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। এটা প্রমাণিত।
আজ দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক আলোচনা সভায় তিনি একথা বলেন। বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিল নির্বাচন প্রস্তুতি কমিটির উদ্যোগে বঙ্গবন্ধুর ৪৬তম শাহাদাৎবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবসের মাসব্যাপী কর্মসূচির সমাপনি আলোচনা সভার আয়োজন করে।
নির্বাচন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাইয়ের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা সফিকুল বাহার মজুমদার টিপু, বীর মুক্তিযোদ্ধা শরিফ উদ্দিন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার হোসেন পাহারী বীর প্রতীক, বীর মুক্তিযোদ্ধা তাজুল ইসলাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর ইকবাল, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল ফয়েজ, মাহামুদুল হক শাহজাদা, বীর মুক্তিযোদ্ধা হারুন অর রশিদ, আওয়ামী লীগ নেতা এমএ করিম প্রমুখ। আলোচনা সভা শেষে সংগঠনের নেতৃবৃন্দ নির্বাচন নিয়ে বিষদ আলোচনা করেন।
ক্যাপ্টেন এবি তাজুল ইসলাম বলেন, জাতির পিতাকে হত্যার আগে সেনা বাহিনীর উর্ধ্বতন কর্মকর্তা জিয়াউর রহমানের বাসভবনে সাক্ষাত করতে যান খুনি কর্ণেল রশিদ, খুনি ফারুকরা। জাতির পিতাকে হত্যার বিষয়ে সে সময়ের তার (জিয়ার) সম্মতি চান খুনিরা। এ সময় জিয়া বলেছিলেন, ‘গো এহেড’। যখন একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা কোনো অধস্তন কর্মকর্তাকে যখন বলে, ‘গো এহেড’, তখন এটা অর্ডার হয়ে যায়। তাই জিয়াউর রহমানের সরাসরি নির্দেশেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করা হয়। সুতরাং জিয়াউর রহমান খুনি, তিনি বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে খুনের ঘটনায় জড়িত। এটা প্রমাণিত।
তিনি বলেন, জাতির পিতার হত্যার পর জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় এসে প্রহসনের বিচারে হত্যা করলেন শত শত মুক্তিযোদ্ধা সেনাসদস্যকে। মার্শাল ল অর্ডিন্যান্স জারি করে দেশে গণতান্ত্রিক রাজনীতি নিষিদ্ধ করেন। বন্দি করেন রাজনীতিবিদদের। একপর্যায়ে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতির দায়িত্বে থাকা বিচারপতি সায়েমকে অস্ত্রের মুখে সরিয়ে দিয়ে নিজেকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করেন। নষ্ট করে দেন নির্বাচনি ব্যবস্থা। তার হাতে খুন হয়ে যায় বাংলার মানুষের ভোটের অধিকার। দেশ থেকে হারিয়ে যায় গণতন্ত্র। জিয়াউর রহমান শুধু বাংলাদেশের গণতন্ত্রকেই খুন করেননি, রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখলের পর বঙ্গবন্ধুর খুনিদের পৃষ্ঠপোষকতা করেন তিনি। জিয়াউর রহমানের হস্তক্ষেপে লিবিয়ায় দীর্ঘমেয়াদি আশ্রয় পায় জাতির পিতার খুনিদের একটা বড় অংশ।
সভায় মুক্তিযোদ্ধাগণ জিয়াউর রহমানের মরনোত্তর বিচার দাবি করেন। একই সঙ্গে গণতদন্ত কমিশন গঠনের মাধ্যমে নেপথ্যে আরো কারা জড়িত ছিলেন বঙ্গবন্ধু হত্যার পেছনে তার রহস্য উন্মোচনের দাবি করেন।
বিডি প্রতিদিন/আল আমীন