বরিশালে ভারতীয় উপমহাদেশের সর্ববৃহৎ দিপাবলী উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই দিনে পূণ্যার্থীরা মহাশ্মশানে প্রিয়জনের সমাধিতে গিয়ে দ্বীপ জ্বেলে, পছন্দের খাবার সাজিয়ে রেখে চন্ডিপাঠসহ প্রার্থনা করেন। করেন দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনা। প্রার্থনার পরিবেশ সৃষ্টিসহ সব ধরনের আয়োজন করে মহাশ্মশান রক্ষা কমিটি। শ্মশান দিপালী উৎসব নির্বিঘ্ন এবং শান্তিপূর্ণ করতে সব ধরনের ব্যবস্থার কথা জানালেন পুলিশ কমিশনার মো. শাহাবুদ্দিন খান।
প্রতি বছর কালি পূজার আগের দিন ভূতচর্তুদশীর পূণ্য তিথিতে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা তাদের প্রয়াত স্বজনদের আত্মার শান্তি কামনায় সমাধিতে দীপ জ্বেলে, চন্ডি পাঠ করে এবং তাদের পছন্দের খাবার প্রদর্শন করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। প্রয়াত স্বজনদের আত্মার শান্তি কামনার আয়োজনকে বলা হয় দিপাবলী উৎসব। সনাতন ধর্মাবলিম্বরা ছাড়াও অন্যান্য ধর্মের হাজারো মানুষ দেখতে যান দিপাবলী উৎসব। এতে দিপাবলী পরিণত হয় সব ধর্মের মানুষের মিলনমেলায়।
বুধবার সকাল ৭টা ৫ মিনিটে এবারের লগ্ন শুরু হলেও দুপুরের পর থেকে মহাশ্মশানমুখি হতে শুরু করেন পুর্নার্থীরা। বিকেলের পর থেকে ঢল নামে মহাশ্মশানে। সন্ধ্যার পর পুরো মহাশ্মশানে নজরকারা আলোকসজ্জায় বর্ণিল হয়ে ওঠে আয়োজন। সনাতন ধর্মাবলম্বী ছাড়াও অন্যান্য ধর্ম-বর্নের মানুষ দেখতে যান দিপাবলী উৎসব। এতে মিলন মেলায় পরিণত হয় মহাশ্মশান।
পূণ্যার্থীরা জানান, মহাশ্মশানে প্রয়াত স্বজনের আত্মার শান্তি এবং আর্শিবাদ কামনা করেন তারা। প্রয়াতরা যেন পরলোকে ভালো থাকেন, শান্তিতে থাকেন, তারাও যেন ইহলোকে থাকা স্বজনদের জন্য আর্শিবাদ করেন সেই উদ্দেশ্যে সমাধির কাছে প্রদীপ জ্বালিয়ে প্রার্থনা করেন তারা। এছাড়া দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনা করেন তারা।
মহাশ্মশান রক্ষা কমিটির সাধারণ সম্পাদক তমাল মালাকার জানান, ভারত উপমহাদেশে এত বড় মহাশ্মশান এবং এত বর্ণিল দিপাবলী উৎসব আর কোথাও নেই। কারোনার কারণে এবারের উৎসবে স্বাস্থ্য বিধি রক্ষার চেষ্টা করা হলেও আগতদের ভিড়ের চাপে অনেকাংশেই শারীরিক দূরত্ব রক্ষা করা সম্ভব হয়নি।
সন্ধ্যার পর মহাশ্মশান পরিদর্শন করেন মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. শাহাবউদ্দিন খান। পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, বরিশালের মানুষ অসাম্প্রদায়িক চেতনা এবং ধর্মীয় সম্প্রীতিতে আবদ্ধ। দিপাবলী উৎসব শান্তিপূর্ন এবং নির্বিঘ্ন করতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেন তিনি।
এবার লগ্ন শেষ হবে বৃহস্পতিবার ভোর ৫টা ২২ মিনিটে। মহাশ্মশানে এবার ২০১ তম উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। নগরীর কাউনিয়ায় প্রায় ৬ একর জমির উপর প্রতিষ্ঠিত মহাশ্মশানে প্রায় ৬৫ হাজার সমাধি রয়েছে। এর মধ্যে বেওয়ারিশ সমাধি রয়েছে ৯শ।
বিডি প্রতিদিন/এএ