গভীর বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপটি লঘুচাপে পরিণত হয়ে স্থলভাগে প্রচুর বৃষ্টিপাতের মধ্য দিয়ে কেটে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে বরিশাল আবহাওয়া অফিস। এর প্রভাবে জোয়ারের সময় বরিশাল বিভাগের ৯টি নদীর পানি ১০টি পয়েন্টে বিপদসীমা অতিক্রম করছে প্রতিদিন দুইবার। এতে তলিয়ে যাচ্ছে নিম্নাঞ্চল। ৩ দিন ধরে অবিরাম বৃষ্টিতে দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতি বিরাজ করছে দক্ষিণাঞ্চলে। বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন।
বরিশাল আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক মাহফুজুর রহমান জানান, গত রবিবার সকাল থেকে আজ মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত টানা ৩ দিনে ১২৭.০৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। যার মধ্যে আজ সকাল ৬টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত বৃষ্টি হয়েছে ৩২ মিলিমিটার।
তিনি আরও বলেন, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপটি লঘুচাপে পরিণত হয়ে স্থলভাগের উপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে প্রচুর মেঘমালার সৃষ্টি হয়েছে। এ জন্য আগামী আরও দুইদিন বিজলী চমকানোসহ ভারী বর্ষণ হতে পারে। সমুদ্রে জোয়ারের সময় স্বাভাবিকের চেয়ে ১ থেকে ২ ফুট উচ্চতা প্লাবিত হতে পারে বলে পূর্বাভাসে বলা হয়েছে।
এদিকে গত ৩ দিন ধরে জোয়ারের সময় বরিশালের বিভিন্ন নদীর পানি প্রতিদিন দুইবার বিপদসীমা অতিক্রম করছে। আবার ভাটির সময় পানি নেমে যাচ্ছে। জোয়ারের সময় লোকালয় প্লাবিত হচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড বরিশাল জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. নুরুল ইসলাম সরকার জানান, গত শনিবার থেকে নদীতে পানির চাপ বৃদ্ধি পায়। রবিবার বিভাগের ৯টি নদীর পানি ১০টি পয়েন্টে সর্বোচ্চ বিপদসীমা অতিক্রম করে। ঝালকাঠীর বিষখালী নদী ছাড়া গতকাল সোমবার থেকে বিভাগের অন্যান্য সকল নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। আগামী দুই এক-দিনের মধ্যে পরিস্থিতির উন্নতি হবে বলে তারা আশা করছেন। জোয়ারের সময় বাঁধ উপচে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করলেও মাটির বেড়িবাঁধগুলোতে বড় ধরনের কোন সমস্যা হয়নি বলে তিনি জানিয়েছেন।
দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতি বিরাজ করলেও বরিশালে লঞ্চসহ সব ধরনের নৌযান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে বলে জানিয়েছেন বরিশাল বিআইডব্লিউটিএ’র ট্রাফিক পরিদর্শক মো. কবির হোসেন।
অবিরাম ভারী বর্ষণ এবং জোয়ারের পানিতে বরিশাল নগরীর বিভিন্ন সড়ক ও এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ বাসিন্দারা। বিশেষ করে স্কুল-কলেজ এবং অফিসগামী মানুষ পড়েন বিপাকে। রাস্তাঘাটে কমে গেছে চলাচল। অতি প্রয়োজন ছাড়া রাস্তায় বের হচ্ছেন না কেউ। বন্ধ অনেক দোকানপাটও।
বিডি প্রতিদিন/ ওয়াসিফ