রংপুরে সালিশের নামে নির্যাতনের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় প্রধান আসামি সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আয়নাল হকসহ তিনজনকে ১৪ বছর সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে আরও ছয় আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। এছাড়া ৪৫ জন আসামিকে খালাস দেয়া হয়।
বুধবার দুপুরে রংপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত ২-এর বিচারক রোকনুজ্জামান এ রায় ঘোষণা করেন।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০১১ সালের ২৫ জুন রাজারামপুর গ্রামের দুই হতদরিদ্র নারী হ্যাপী আখতার ও শাহিদা বেগমকে চরিত্রহীন আখ্যা দিয়ে তৎকালীন ইউপি চেয়ারম্যান আয়নাল হকের নির্দেশে অন্যান্য আসামিরা তাদের বাড়ি থেকে তুলে এনে মারপিট করে রাজারামপুর কাশিপুর লিচু বাগান এলাকায় একটি মাঠে নিয়ে যায়। সেখানে সালিশের নামে ইউপি চেয়ারম্যান আয়নাল হকের উপস্থিতিতে দুই নারীর হাত-পা বেঁধে বিবস্ত্র করে নির্যাতন করা হয়।
এ সময় কয়েক দফা জ্ঞান হারিয়ে ফেললেও তাদের উপর নির্যাতন অব্যাহত রাখা হয়। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় আসামি আয়নাল হকসহ ৫৬ জনকে আসামি করা হয়। পুলিশ তদন্ত শেষে ৫৬ জন আসামির বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে।
মামলার বিচার চলাকালীন দুই আসামি মৃত্যুবরণ করেন। পরে মামলায় ১৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য ও জেরা শেষে বিচারক আসামি আয়নাল চেয়ারম্যান, মহুবুল ও চিকনা এনামুলকে দোষী সাব্যস্ত করে ১৪ বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দেন। অপর ৬ আসামি ইলিয়াছ, বাবলু, সেকেন্দার মন্ডল, রউফ মন্ডল, মোটা এনামুল ও মজম আলীকে ২ থেকে ৩ বছর করে কারাদণ্ডের আদেশ দেন।
রায় ঘোষণার পর সরকার পক্ষের আইনজীবী জাহাঙ্গীর আলম তুহিন জানান, মামলাটি সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আসামিদের সাজা দেয়া হয়েছে। এ রায়ে তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেন। অপরদিকে নির্যাতিতা দুই নারী হ্যাপী আখতার ও শাহিদা বেগম রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে তাদের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানান।
বিডি প্রতিদিন/এমআই