বঙ্গবাজারে অগ্নিকাণ্ডের ২৪ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও এনেক্সকো টাওয়ারের ৫ম ও উপরের তলায় পানি ছেটানো অব্যাহত রেখেছে ফায়ার সার্ভিস। যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে আগুন নিয়ন্ত্রণের খবর জানানো হয়েছে গতকালই (মঙ্গলবার)। তবে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা বলছেন, যেহেতু ভেতরে কাপড়ের গোডাউন রয়েছে, সেহেতু সেখান থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখে পানি ছেটানো হচ্ছে।
বুধবার সকালে বঙ্গবাজার এনেক্সকো টাওয়ারের সামনে গিয়ে দেখা গেছে, পূর্ব দিকের ৫ তলায় এবং দক্ষিণ-পশ্চিম কোণের ৪র্থ তলায় ফায়ার সার্ভিসের আলাদা দুইটি বিশেষ গাড়ির মাধ্যমে পানি ছেটানো হচ্ছে। এনেক্সকো টাওয়ারের এক গার্মেন্টসের কর্মী হাবিবুর রহমান বলেন, উপরে শুধু কাপড়ের দোকান। সেখানে কাপড়ের গোডাউন থাকায় অনবরত ধোঁয়া বের হচ্ছিল। এছাড়া অবশিষ্ট মালামালের যেন ক্ষতি কম হয় তাই পানি ছেটাচ্ছে ফায়ার সার্ভিস। আর এর মধ্যেই আমাদের মতো দোকানগুলোর লোকজন মালামাল বের করার চেষ্টা করছে। অন্যদিকে, ফায়ার সার্ভিসের দাবি, আগুন যেন আর ছড়িয়ে যেতে না পারে সেজন্য সার্বক্ষণিক পানি ছেটানো হচ্ছে।
এর আগে, মঙ্গলবার সকালে সাড়ে ৬ ঘণ্টার আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে রাজধানীর বঙ্গবাজার মার্কেট। আগুনে পুড়ে নিশ্চিহ্ন হয়েছে দেশের অন্যতম বৃহৎ এ পাইকারি মার্কেটের ৫ হাজার দোকান। ঈদের আগে পুঁজি হারিয়ে পথে বসেছেন হাজারো ব্যবসায়ী। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা বলছেন, এ আগুনে ছাই হয়েছে অন্তত ১ হাজার কোটি টাকার সামগ্রী। রক্ষা পায়নি পুলিশ সদর দফতরও। গতকাল সকাল ৬টা ১০ মিনিটে শুরু হওয়া আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ায় তলব করা হয়েছিল সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর অগ্নিনির্বাপক ইউনিটকে।লাইফ সেভিং ফোর্সের (ফায়ার সার্ভিস) সদস্যদের সঙ্গে আগুন নিয়ন্ত্রণে অংশ নেয় সেনা, নৌ, বিমান, বিজিবি, পুলিশ, র্যাব, আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যরা। সবার একাগ্র চেষ্টায় সাড়ে ৬ ঘণ্টা পর দুপুর ১২টা ৩৬ মিনিটে নিয়ন্ত্রণে আসে আগুন। তবে গতকাল সন্ধ্যা ৬টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত এনেক্সকো ভবনের পাঁচ ও ছয় তলা থেকে থেমে থেমে ধোঁয়া এবং আগুনের ফুলকি বের হচ্ছিল। সান্ত্বনা শুধু এটুকুই যে, আগুনে কোনো প্রাণহানি ঘটেনি। জানা গেছে, ১৯৯৫ সালে একবার ভয়াবহ আগুনে পুড়ে যায় বঙ্গবাজার। পরে নতুন করে গড়ে তোলা হয় ওই মার্কেট। সর্বশেষ ২০১৮ সালের ২৪ জুলাই সেখানে আবার আগুন লাগে। পুড়ে যায় মার্কেটের গুলিস্তান ইউনিটের কয়েকটি দোকান। এবারের ভয়াবহ অগ্নিকা- নিয়ে নানা মন্তব্য করছেন স্থানীয় ও ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা। তাদের অনেকেই মনে করেন, এটা নাশকতা।
বিডি-প্রতিদিন/শফিক