২৪ এপ্রিল, ২০২৩ ২০:৫৪

রানা প্লাজা ধসের ১০ বছর, অস্থায়ী বেদিতে ফুল দিয়ে স্মরণ

সাভার প্রতিনিধি

রানা প্লাজা ধসের ১০ বছর, অস্থায়ী বেদিতে ফুল দিয়ে স্মরণ

সাভারে রানা প্লাজা ধসে নিহতদের স্মরণে অস্থায়ী স্মৃতিস্তম্ভে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের সদস্যরা। ভয়াবহ সেই ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের স্মরণ করছেন বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের সদস্য, নিহত ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্য ও সহকর্মীরা। 

সোমবার সকাল ৯টার দিকে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের সদস্যরা বিক্ষিপ্ত মিছিল নিয়ে রানা প্লাজার সামনে জড়ো হন। পরে তারা সেখানে অস্থায়ী স্মৃতিস্তম্ভে নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। রানা প্লাজা ধসের পর গত ১০ বছরে বিভিন্ন সময়ে শ্রমিকের এক জীবনের আয়ের সমান ক্ষতিপূরণ ৪৮ লাখ টাকা, এই ঘটনার সাথে দায়ী ব্যক্তিদের শাস্তিসহ নানা দাবি জানায় শ্রমিক সংগঠনগুলো। এখনো দাবি আদায় না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। 

রানা প্লাজা ধসে আহত সুইং অপারেটর নিলুফা বেগম এসেছিলেন শ্রদ্ধা জানাতে। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘ভবন ধসের পর লাশের ওপর পড়ে ছিলাম। আমার চারপাশে ছিল লাশ। ওই দিন রাতের দিকে আমাকে উদ্ধার করে  সাভারে এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। ডান পা নষ্ট হয়ে গেছে হাটতে পারি না। 

চোখের জল ধরে রাখতে না পারা আহত শ্রমিক আয়শা বেগম জানান, ভবনের ভিমের নিচে চাপা পড়েছিলেন তিনি।  মেরুদণ্ডের হাড় ভেঙেছিল তার। এখন অন্যের সাহায্য ছাড়া চলতে পারেন না। কষ্ট হলেও নিহতদের স্মরণে তিনি ফুল দিতে এসেছেন রানা প্লাজার সামনে অস্থায়ী বেদিতে। 

শ্রমিক সংগঠনের নেতা রফিকুল ইসলাম সুজন বলেন, রানা প্লাজা ধসে শ্রমিক হতাহতের পর থেকে বিভিন্ন সময়ে নানা দাবি তোলা হয়। এর মধ্যে ছিল শ্রমিকদের এক জীবনের আয়ের সমান ক্ষতিপূরণ, আহত শ্রমিকদের বিনা মূল্যে আজীবন চিকিৎসা ও ধসের ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তি, রানা প্লাজার জমি বাজেয়াপ্ত করে হতাহত শ্রমিকদের স্থায়ী পুনর্বাসন, রানা প্লাজা এলাকা যথাযথ সংরক্ষণ ও সেখানে স্থায়ী স্মৃতিস্তম্ভ তৈরি, ২৪ এপ্রিল শোক ও নিরাপত্তা দিবস হিসেবে সব কারখানা বন্ধ রাখা, শ্রমিকদের জন্য মালিক-সরকার ও বায়ারের উদ্যোগে জরুরি তহবিল গঠন ইত্যাদি। 

প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সকাল ৮টা ৪৫ মিনিটের দিকে ধসে পড়ে রানা প্লাজা। এতে ১ হাজার ৩৮ জন নিহত হন। গুরুতর আহত হয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করেন আরও ১ হাজার ২০৫ জন। পরে এ ঘটনায় মোট তিনটি মামলা হয়। এর মধ্যে অবহেলাজনিত মৃত্যু চিহ্নিত হত্যা মামলাটি করে পুলিশ। ইমারত নির্মাণ আইন লঙ্ঘন করে ভবন নির্মাণের অভিযোগে অপর মামলাটি করে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। আর দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ভবন নির্মাণসংক্রান্ত দুর্নীতি নিয়ে আরেকটি মামলা করে।


বিডি প্রতিদিন/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর