৫ মার্চ, ২০২৪ ১৬:৩১

হাসপাতাল থেকে চুরির ৭ মাস পর সেই নবজাতক উদ্ধার

৫০ হাজারে বিক্রি করেন ভাড়াটিয়া নারী

কুমিল্লা প্রতিনিধি

হাসপাতাল থেকে চুরির ৭ মাস পর সেই নবজাতক উদ্ধার

মায়ের কোলে উদ্ধার হওয়া শিশু

প্রায় ৭ মাস পর উদ্ধার করা হয়েছে কুমিল্লা জেনারেল (সদর) হাসপাতাল থেকে চুরি হওয়া সেই নবজাতককে। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) রাজধানী থেকে ওই নবজাতককে উদ্ধার করে। এ ঘটনায় পুলিশ ওই নবজাতকদের বাসার ভাড়াটিয়া পারভীন আক্তারসহ দুজনকে গ্রেফতার করেছে। মঙ্গলবার বিষয়টি নিশ্চিত করেন পিবিআই কুমিল্লার পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান।

গ্রেফতার আসামিরা হলেন, মুরাদনগর উপজেলার নিয়ামতপুর এলাকার জাকির হোসেনের স্ত্রী পারভীন (৩০) ও জেলার বরুড়া উপজেলার ভবানীপুর ইউনিয়নের আব্দুল মালেকের মেয়ে জেসমিন আক্তার।

এদিকে দীর্ঘদিন পর সন্তানকে ফিরে পেয়ে খুশিতে আত্মহারা কুমিল্লা সদর উপজেলার বারপাড়া এলাকার জসিম উদ্দিন ও আয়েশা আক্তার দম্পতি। বার বার সন্তানের কপালে ও শরীরে চুমু দিতে দেখা যায় তাদের।

জানা গেছে, গত বছরের ১৩ আগস্ট কুমিল্লা সদর হাসপাতালের টিকিট কাউন্টারের সামনে থেকে ৪ দিনের ওই নবজাতক চুরি হয়। এ ঘটনায় নবজাতকের বাবা মো. জসিম উদ্দিন কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পিবিআই মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পায়।

গ্রেফতার আসামিদের বরাতে পিবিআই জানায়, সদর হাসাপাতালে পারভীনের সাথে জেসমিনের পরিচয় হয়। কথোপকথনে জেসমিন জানান, তার স্বামী প্রবাসী, দুই মেয়ে আছে। তার একটি ছেলে থাকলে ভালো হতো। এসময় পারভীন তাকে বলেন, যদি ৫০ হাজার টাকা দেয় সে তাকে একটি নবজাতক এনে দিতে পারবে। নবজাতকের নানু নুরজাহান বেগম (৬০) তাকে নিয়ে বারান্দায় হাঁটাহাঁটি করার সময় তাদের বাসার ভাড়াটিয়া পারভীন আক্তার নবজাতকের শারীরিক সমস্যার কথা বলে বড় ডাক্তার দেখানোর জন্য বলে। নবজাতকের মাকে কিছু না জানিয়ে পারভীন তার নবজাতকসহ নানুকে নিয়ে টিকেট কাউন্টারে যান। এদিকে কাউন্টারে অপেক্ষমান জেসমিন নুরজাহান বেগমকে বলেন আপনি বৃদ্ধ মানুষ আপনার কষ্ট হচ্ছে, আমার কোলে দেন। আমার কোলে বাচ্চা থাকলে তাড়াতাড়ি টিকেট দিবে। তখন নুরজাহান বেগম সরল বিশ্বাসে নবজাতককে জেসমিনের কাছে তুলে দেন। এই সুযোগে জেসমিন নবজাতককে নিয়ে পালিয়ে যান। কিছুক্ষণ পরে পারভীনকে টিকেট কাউন্টারের কাছে পেয়ে ওই মহিলার কথা জিজ্ঞাসা করলে সে তাকে দেখেনি বলে জানান। চারদিকে খোঁজাখুজি করে কোথাও না পেয়ে পুলিশকে অবহিত করেন। এ ঘটনার ৭ মাস পর পিবিআই তাকে উদ্ধার করে। 

পিবিআই কুমিল্লার পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান বলেন, জেসমিনকে নবজাতকসহ সোমবার ঢাকা মহাখালী বাসস্ট্যান্ড থেকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদের সে স্বীকার করে তার সহযোগী পারভীনের নিকট হতে ৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে ছেলে শিশু মনে করে ক্রয় করে। মূলত সে মেয়ে শিশু। ৩০ হাজার টাকা পরিশোধ করেন। পারভীন নবজাতকের মায়ের অজান্তে ডাক্তার দেখানোর কথা বলে নবজাতকের নানিসহ জরুরি বিভাগে নিয়ে আসেন। কৌশলে জেসমিনের নিকট নবজাতককে বুঝিয়ে দিয়ে টাকা আদায় করে। এ বিষয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা শেষে আদালতে প্রেরণ করা হবে।

বিডি প্রতিদিন/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর