রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) এর আওতাধীন হাতিরঝিল ও পূর্বাচল এলাকা পরিদর্শন করেছেন রাজউক চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার রিয়াজুল ইসলাম। এসময় উল্লেখিত এলাকাসমূহের বিশেষ পরিদর্শন ছাড়াও বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বাসযোগ্য নগরী হিসেবে ঢাকাকে গড়ে তোলার লক্ষ্যে রাজউকের চলমান প্রকল্পসমূহের বর্তমান সার্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে জানার জন্য রাজউক চেয়ারম্যানসহ রাজউকের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাবৃন্দ আজ সকাল সাড়ে ৮টা থেকে হাতিরঝিল এলাকা সরেজমিনে পরিদর্শন শুরু করেন। পরিদর্শনের অংশ হিসেবে রাজউকের কর্মকর্তাবৃন্দ হাতিরঝিল ওয়াটার বোটের জেটি, এম্ফিথিয়েটার, ওয়াকওয়ে, ও রেস্টুরেন্টসহ বিভিন্ন স্থাপনা ঘুরে দেখেন।
পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমের সুষ্ঠু তদারকির জন্য পরিচ্ছন্নতার কাজে নিয়োজিত সকল কোম্পানির পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও কোম্পানি প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন রাজউক চেয়ারম্যান। হাতিরঝিলকে একটি দর্শনার্থী বান্ধব স্থান করে তোলার জন্য নিয়মিত সঠিকভাবে পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম চালানোর দিক-নির্দেশনা প্রদান করা হয়। এসময় রাজউক চেয়ারম্যান পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের সুবিধা অসুবিধা নিয়ে জানতে চান এবং অসুবিধাসমূহ সমাধানের আশ্বাস দেন। এরপর রাজউক চেয়ারম্যানসহ উপস্থিত অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ হাতিরঝিল এলাকায় অবস্থিত কিছু রেস্টুরেন্ট ঘুরে দেখেন ও রেস্টুরেন্ট কর্তৃপক্ষকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দেন। এরপর রাজউকের প্রতিনিধি দল গুলশানে অবস্থিত রাজউক চেয়ারম্যান বাংলোর সংস্কার কার্যক্রম পরিদর্শনে যান। এসময় সংস্কার কার্যক্রমের বাজেট ও সংস্কারের অগ্রগতি নিয়ে রাজউক চেয়ারম্যান অসন্তোষ প্রকাশ করেন এবং বাজেট কমিয়ে সঠিকভাবে সংস্কার কার্যক্রম পরিচালনার জন্য দিক-নির্দেশনা প্রদান করেন।
চেয়ারম্যান বাংলো পরিদর্শনের পর রাজউক চেয়ারম্যানসহ অন্যান্যরা পূর্বাচলের বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেন। এসময় পূর্বাচল নতুন শহরের চলমান বিভিন্ন প্রকল্পের কার্যক্রম ঘুরে দেখা হয়। যার মধ্যে রয়েছে পূর্বাচল নতুন শহরের রাস্তা ও ড্রেনের নির্মাণ কার্যক্রম। এসময় ড্রেন ও ফুটপাতের নকশাগত ত্রুটিসমূহ নিরসন করে দ্রুত নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করার জন্য রাজউক চেয়ারম্যান দিক-নির্দেশনা প্রদান করেন। এরপর প্রতিনিধি দল পূর্বাচল নতুন শহরের লেকপাড়ে ওয়াকওয়ে ও সাইকেলের রাস্তা পরিদর্শন করেন। ওয়াকওয়ে এর বিভিন্ন জায়গায় ভাঙ্গা ও নকশাগত ত্রুটি নিয়ে রাজউক চেয়ারম্যান অসন্তোষ প্রকাশ করেন ও অবিলম্বে তা ঠিক করার নির্দেশ দেন।
পরিদর্শনকালে রাজউক চেয়ারম্যানসহ অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ পূর্বাচলে নির্মাণাধীন কবরস্থান ও কাঁচা বাজার ঘুরে দেখেন। কবরস্থান পরিদর্শনকালে রাজউক অধিগ্রহণকৃত জমি অবৈধভাবে দখল করে গড়ে ওঠা ঘর ও অন্যান্য স্থাপনা অপসারণের নির্দেশ দেন। কাঁচাবাজার পরিদর্শন করে অতিদ্রুত সেখানে বাজার কার্যক্রম শুরু করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে রাজউক চেয়ারম্যান জানান।
এ প্রসঙ্গে রাজউক চেয়ারম্যান বলেন, পূর্বাচলকে আগামী ছয় মাসের মধ্যে বাসযোগ্য করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। পূর্বাচল নতুন শহরকে অতিদ্রুত একটি সুন্দর, বাসযোগ্য এলাকা হিসেবে দেশবাসীর কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য রাজউক কাজ করে যাচ্ছে। এসময় পূর্বাচল প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের তিনি ছয় মাসের মধ্যে পূর্বাচলকে বাসযোগ্য করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন।
এরপর রাজউক চেয়ারম্যান পূর্বাচলে রাজউকের অফিস পরিদর্শন করেন। এসময় ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজের সঙ্গে রাজউক চেয়ারম্যানের সৌজন্য সাক্ষাৎ হয়। সাক্ষাৎকালে রাজউক চেয়ারম্যান জানান, পূর্বাচল নতুন শহরের লেকের পাড় ধরে যৌথভাবে বৃক্ষরোপণ কার্যক্রম গ্রহণ করবে রাজউক ও ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন। এছাড়াও তিনি জানান, উত্তরা তৃতীয় পর্বের নির্মিত রাস্তা ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের কাছে হস্তান্তর করবে রাজউক।
পরিদর্শনকালে আরও উপস্থিত ছিলেন রাজউকের সদস্য (এস্টেট ও ভূমি) শেখ মতিয়ার রহমান, সদস্য (উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ) হারুন-অর-রশীদ, রাজউকের প্রধান প্রকৌশলী, প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ, প্রধান নগর স্থপতি, প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাবৃন্দসহ রাজউকের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা কর্মচারীবৃন্দ।
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত