সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট গোল (এসডিজি) অর্জনে গৃহকর্মে নিয়োজিত শিশুদের সুরক্ষায় আইন প্রণয়নের তাগিদ দিয়েছেন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিরা। তারা বলেছেন, বিদ্যমান আইনি কাঠামোর দুর্বলতা এবং নীতিমালাসমূহ যথাযথভাবে বাস্তবায়িত না হওয়ায় গৃহকর্মী শিশুরা মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। তাই নতুন আইন প্রণয়ন ও তা বাস্তবায়ন করা জরুরি।
মঙ্গলবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘গৃহকাজে নিয়োজিত শিশুর অধিকার ও সুরক্ষা নিশ্চিতকরণে সুনির্দিষ্ট আইন প্রণয়নের প্রয়োজনীয়তা’ শীর্ষক সংলাপে এসব কথা বলেন তারা।
আইন কমিশন এবং উন্নয়ন সংস্থা অ্যাকশন ফর সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট (এএসডি), শাপলা নীড়, এডুকো-বাংলাদেশ আয়োজিত সংলাপে প্রধান অতিথি ছিলেন আইন কমিশনের চেয়ারম্যান বিচারপতি জিনাত আরা। এএসডি’র নির্বাহী পরিচালক এম এ করিমের সভাপতিত্বে সংলাপে বক্তব্য রাখেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব মোহাম্মদ শামছুল ইসলাম, আইন কমিশনের গবেষণা কর্মকর্তা (অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ) মোছাম্মৎ মনিরা সুলতানা, নারী ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব সারাওয়াত মেহজাবীন, বাংলাদেশ মহিলা আইনজীবী সমিতির উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সালমা আলী, আইএলও বাংলাদেশের সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার সৈয়দা মুনিরা সুলতানা, শাপলা নীড়ের কান্ট্রি ডিরেক্টর তমকো উচিয়ামা, এডুকো বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর আব্দুল হামিদ, ইউনিসেফ বাংলাদেশের চাইল্ড প্রোটেকশন স্পেশালিস্ট শাবনাজ জাহরীন, এডুকো বাংলাদেশের ম্যানেজার শহিদুল ইসলাম, আইএলও'র ন্যাশনাল প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর সৈয়দা মনিরা সুলতানা, শিশু অধিকার ফোরামের ভাইস-চেয়ারম্যান খায়রুজ্জামান কামাল, ইনসিডিন বাংলাদেশের প্রকল্প ব্যবস্থাপক অ্যাডভোকেট রফিকুল আলম, এএসডি’র প্রকল্প পরিচালক ইউকেএম ফারহানা সুলতানা প্রমুখ।
সংলাপে মূল প্রবন্ধ উত্থাপন করেন শিশু সুরক্ষা বিশেষজ্ঞ শরফুদ্দিন খান। তিনি বলেন, এসডিজি’র আলোকে ২০২৫ সালের মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রম নিরসনে বাংলাদেশ অঙ্গীকারাবদ্ধ। অথচ গৃহকর্মী শিশুদের প্রতিনিয়ত মারধরসহ নানা নিপীড়ন সহ্য করতে হচ্ছে। তাই দেশের নতুন রাজনৈতিক ও সামাজিক বাস্তবতায় সরকারের ওই প্রতিশ্রুতি ও ঘোষিত অঙ্গীকার বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিতে হবে। গৃহকাজে নিয়োজিত শিশুদের অধিকার ও সুরক্ষা সুনিশ্চিত করার জন্য যুগোপযোগী আইন প্রণয়ন এবং তার সফল বাস্তবায়ন নিশ্চিত হবে।
সভায় বক্তারা বলেন, গৃহকাজে নিয়োজিত শিশুরা নিয়মিতভাবে নানা ধরনের নিপীড়ন ও নির্যাতনের শিকার হয়ে অত্যন্ত অমানবিক জীবন যাপনে বাধ্য হচ্ছে। তারমধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- কাজের নির্দিষ্ট কর্মঘণ্টা না থাকা, ছুটি না পাওয়া, নিম্নমানের পরিবেশে থাকার ব্যবস্থা, পুষ্টিকর খাবার না পাওয়া, শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হওয়া, শারীরিক সামর্থ্যের বাইরে কাজ করা, বিপজ্জনক পরিবেশে কাজ করা ইত্যাদি। সর্বোপরি, গৃহকাজে নিয়োজিত অধিকাংশ শিশুরা ভয়াবহ শারীরিক, মানসিক এবং যৌন নীপিড়ন ও নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। এমনকি, গৃহকাজে নিয়োজিত অনেক শিশু চরম নির্যাতনের ফলে অকাল মৃত্যুরও শিকার হচ্ছে।
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত