অনলাইনে ইলিশ বিক্রির নামে পেজ খুলে প্রতারণার অভিযোগে প্রতারক চক্রের আট সক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। সোমবার ও মঙ্গলবার (২৬ ও ২৭ মে) খুলনা, নড়াইল ও যশোরে ধারাবাহিক অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে ডিবি-সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (দক্ষিণ) বিভাগের ওয়েব বেইজড ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিম।
এ সময় তাদের হেফাজত থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত ২৫টি মোবাইল ফোন ও ৭০টি ভুয়া রেজিস্ট্রেশনকৃত সিম জব্দ করা হয়।
গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন-আনাছ শেখ (২১), কামাল শেখ (২১), ইয়ানুর মোল্লা (২১), জোবায়ের হোসেন (২৩), রুবেল শেখ (২৯), সাগর হোসেন (২৩), মো. আলীনূর ইসলাম (১৮) ও শরিফুল ইসলাম (২১)।
বুধবার দুপুরে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন ডিএমপি মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান।
তিনি জানান, গত ২০ নভেম্বর ২০২৪ সালে মো. মাসুম বিল্লাহ ‘চাঁদপুর ইলিশ বাজার’ নামে ফেসবুক পেজে সুলভ মূল্যে ইলিশ বিক্রির চমকপ্রদ বিজ্ঞাপন দেখে ইলিশ অর্ডার দেন এবং তাদের দেওয়া একটি বিকাশ নম্বরে ১৫ হাজার টাকা অগ্রিম দেন। কিন্তু ওই অর্ডারের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি কোনো ইলিশ পাননি। এ ঘটনায় মো. মাসুম বিল্লাহের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে খিলগাঁও থানায় একটি মামলা হয়।
মামলাটি পরবর্তীতে ডিবি-সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (দক্ষিণ) বিভাগে হস্তান্তর করা হয়। তদন্তাধীন এই মামলায় তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় প্রতারক চক্রকে শনাক্ত করে ডিবি। পরবর্তীতে সোমবার ও মঙ্গলবার খুলনা, নড়াইল ও যশোরে ধারাবাহিক অভিযান চালিয়ে প্রতারক চক্রের আটজনকে গ্রেফতার করা হয়।
তিনি আরও বলেন, প্রতারক চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন অনলাইন শপের ছবি ব্যবহার করে পেইজ খুলে চাঁদপুরের তাজা ইলিশ সুলভ মূল্যে সরবরাহের বিজ্ঞাপন দিয়ে আসছিল। তারা ইলিশ সরবরাহের অর্ডার নিয়ে অগ্রিম টাকা গ্রহণ করতো। টাকা নেওয়ার পর তারা গ্রাহকদের ইলিশ মাছ বুঝিয়ে দিতো না এবং কোনো যোগাযোগ রাখতো না। চক্রটির মূলহোতা আনাছ শেখ ও শরিফুল ইসলামের নেতৃত্বে তারা বিভিন্ন ব্যক্তির এনআইডি সংগ্রহ করে মোবাইল কোম্পানি, বিকাশ ও নগদের কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীর সহায়তায় ভুয়া সিম ও অ্যাকাউন্ট খুলে এই অভিনব প্রতারণা চালিয়ে আসছিল। তারা দীর্ঘদিন ধরে অনলাইনে এই অভিনব প্রতারণার সাথে জড়িত বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে। তাদের প্রতারণার শিকার অসংখ্য ভুক্তভোগী ডিএমপির বিভিন্ন থানায় সাধারণ ডায়েরি ও অভিযোগ করেছেন, যার অনেকগুলো ডিবি সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (দক্ষিণ) বিভাগে তদন্তাধীন রয়েছে।
গ্রেফতার ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন। চক্রটির সাথে জড়িত অন্যান্যদের গ্রেফতারে ডিবির প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
বিডি প্রতিদিন/এমআই