রবিবার, ২৬ অক্টোবর, ২০১৪ ০০:০০ টা

ভয়ে কর আদায় হয় না সাত হাজার ইটভাটায়

এনবিআরের ব্যর্থতাকে দায়ী করলেন ব্যবসায়ীরা

ভয়ে কর আদায় হয় না সাত হাজার ইটভাটায়

রাজস্ব কর্মকর্তাদের নিরাপত্তাজনিত কারণে দেশের সাত হাজার বৈধ মৌসুমি ইটভাটা থেকে মূল্য সংযোজন কর (মূসক বা ভ্যাট) ও আয়কর আদায় করতে পারছে না জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এ তথ্য জানিয়েছেন এনবিআরের চেয়ারম্যান গোলাম হোসেন। তবে ব্যবসায়ীরা এ অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলেছেন, ইটভাটা মালিকরা কর দেন না, এ কথা ঠিক নয়। আইনে আছে, ইটের মোট মূল্যের ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট দিতে হবে। পাশাপাশি ইটভাটার অনুমোদন ও নবায়নে উৎপাদন ক্ষমতার ভিত্তিতে ৪৫ হাজার থেকে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত উৎসে কর দিতে হবে মালিকদের। কিন্তু এই হারে রাজস্ব আদায় করতে পারছে না এনবিআর।

এ প্রসঙ্গে এনবিআর চেয়ারম্যান গোলাম হোসেন বলেন, ইটভাটা থেকে কোনো ধরনের কর পাই না বললেই চলে। প্রায় সাত হাজারের মতো মৌসুমি ইটভাটা থাকলেও অবৈধ সেই তথ্য এনবিআরের কাছে নেই। কিন্তু যে বৈধ ইটভাটা আছে, সেগুলো থেকে কর্মকর্তারা ভয়ে রাজস্ব আদায় করতে পারেন না। তার ভাষ্য, এই ইটভাটাগুলো প্রত্যন্ত গ্রামের নদী তীরে। এগুলোর মালিক গ্রাম পর্যায়ের প্রভাবশালী। সেখানে গিয়ে কর্মকর্তারা সাহস করে রাজস্ব আদায় করতে পারেন না। এ অবস্থায় ইটভাটা মালিকরা যেটুকু রাজস্ব দেন, সেটাই আদায় হয়। তবে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশনের (এফবিসিসিআই) সহসভাপতি হেলাল উদ্দিন মনে করেন, ইটভাটা থেকে রাজস্ব আদায়ের দায়িত্ব সরকারের। যদি সেখান থেকে তারা সঠিকভাবে রাজস্ব আদায় না করতে পারেন, সেটা তাদের ব্যর্থতা। আইন অনুযায়ী, মৌসুমি ইটভাটার মালিকরা ট্রেজারি চালানের মাধ্যমে তিনটি কিস্তিতে ভ্যাট পরিশোধ করবেন। মোট ভ্যাটের প্রথম কিস্তি ৩৫ শতাংশ হিসাব করে প্রতিবছর ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে পরিশোধ করার কথা। পরবর্তী দ্বিতীয় কিস্তির ৩৫ শতাংশ পরিশোধ করতে হবে ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে। আর শেষ কিস্তি হিসেবে ৩০ শতাংশ ৩১ মার্চের মধ্যে নিরূপিত করের ৩০ শতাংশ পরিশোধ করতে হবে। কোনো ইটভাটা মালিক বা প্রতিষ্ঠান এই আইন লঙ্ঘন করলে তার বিরুদ্ধে বিধি-মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া যাবে। এক্ষেত্রে প্রাপ্য করের আড়াই গুণ অর্থদণ্ড এবং উৎপাদিত ইট ও তা পরিবহনে নিয়োজিত যানবাহনও সরকারের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করা হতে পারে। আর অর্থ দণ্ড পরিশোধে ব্যর্থ হলে সংশ্লিষ্টদের ব্যাংক হিসাব জব্দ করতে পারেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা। অপরদিকে আয়কর অধ্যাদেশ ১৯৮৪ এর ৫২এফ ধারা সংশোধন করে সব ধরনের ইটভাটার অনুমোদন বা নবায়নের জন্য উৎপাদনের পরিমাণের ভিত্তিতে আলাদা আলাদা উৎসে কর আরোপ করেছে এনবিআর। এর মধ্যে প্রতিটি এক সেকশনের ইটভাটার জন্য ৪৫ হাজার টাকা, দেড় সেকশনের ইটভাটার জন্য ৭০ হাজার টাকা, দুই সেকশনের জন্য ৯০ হাজার টাকা ও যন্ত্রের সাহায্যে ইট তৈরির ক্ষেত্রে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত উৎসে কর নির্ধারণ করা আছে।

 

 

সর্বশেষ খবর