শনিবার, ৫ জুন, ২০২১ ০০:০০ টা

বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়কের পায়রা সেতু উদ্বোধন সেপ্টেম্বরে

চলছে শেষ মুহুর্তের সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ

রাহাত খান, বরিশাল

বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়কের পায়রা সেতু উদ্বোধন সেপ্টেম্বরে

বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়কের লেবুখালীর পায়রা নদীর ওপর সেতু নির্মাণকাজ শেষ পর্যায়ে। চলছে শেষ সময়ের সৌন্দর্যবর্ধন কাজ -বাংলাদেশ প্রতিদিন

দেশের সর্বদক্ষিণের কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকত ও পায়রা সমুদ্রবন্দর পর্যন্ত ফেরিবিহীন সড়ক যোগাযোগ চালু এখন সময়ের ব্যাপার। এ মহাসড়কের লেবুখালীর পায়রা নদীর ওপর সেতু নির্মাণকাজ শেষ পর্যায়ে। এখন চলছে সৌন্দর্যবর্ধনসহ আনুষঙ্গিক কাজ। সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি যানবাহন চলাচলের জন্য সেতুটি উন্মুক্ত করে দেওয়ার লক্ষ্যে দিনরাত কাজ করছে চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ঢাকা (যাত্রাবাড়ী)-মাওয়া-ভাঙ্গা-বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়কের (এনএইচ-৮) ১৯২তম কিলোমিটার এবং বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়কের ২৭তম কিলোমিটারে লেবুখালীর পায়রা নদীর ওপর সব শেষ সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হয় ২০১৬ সালের ২৪ জুলাই। কুয়েত ফান্ড ফর আরব ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট (কেএফএইডি) এবং ওপেক ফান্ড ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টের (ওএফআইডি) যৌথ অর্থায়নে ১ হাজার ৪৪৭ কোটি টাকা ব্যয়ে সেতু নির্মাণের দায়িত্ব পায় চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান লংজিয়ান রোড অ্যান্ড ব্রিজ কোম্পানি লিমিটেড। কার্যাদেশে সেতু নির্মাণে ৩৩ মাস সময় বেঁধে দেওয়া হলেও দুই দফায় প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে ২০২২ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত। তবে তার আগেই আগামী সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সেতু চালু করতে তৎপরতা চালাচ্ছেন কর্তৃপক্ষ। গতকাল সরকারি ছুটির দিন সকালে ওই সেতু নির্মাণকাজের সার্বিক অগ্রগতি পরিদর্শন করেন সড়ক ও জনপথ বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী মো. আবদুস সবুর। এ সময় তিনি বলেন, ‘নির্ধারিত সময়ের আগেই যান চলাচলের জন্য সেতুটি উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। এ সেতু খুলে দেওয়ার মধ্য দিয়ে দেশের সর্বদক্ষিণে কুয়াকাটা পর্যন্ত ফেরিবিহীন সড়ক যোগাযোগব্যবস্থা চালু হবে; যা বর্তমান সরকারের একটি নতুন মাইলফলক।’

পায়রা সেতু নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক মোহাম্মদ আবদুল হালিম জানান, এ সেতুর দৈর্ঘ্য ১ হাজার ৪৭০ মিটার এবং প্রস্থ ১৯.৭৬ মিটার। এটি ফোর লেনবিশিষ্ট সেতু। মূল সেতুর ৯৫ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। নদীর উভয় প্রান্তে মোট ১ হাজার ২৬৮ মিটার অ্যাপ্রোচ সড়ক, টোল প্লাজা, প্রশাসনিক ভবন, ইলেকট্রিফিকেশনসহ অন্যান্য আনুষঙ্গিক কাজের ৮৫ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে। এখন চলছে শেষ মুহুর্তের সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ। সড়ক ও জনপথ বিভাগ বরিশাল জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আবু হেনা মো. তারেক ইকবাল জানান, নৌপথ সচল রাখার পাশাপাশি পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটার কথা বিবেচনা করে পায়রা সেতু নির্মাণ করা হয়েছে এক্সট্রা ডোজ ক্যাবল স্টেট পদ্ধতিতে। এটি নির্মাণ করা হয়েছে চট্টগ্রামের তৃতীয় কর্ণফুলী সেতুর আদলে নান্দনিক নকশায়। পায়রা সেতু বরিশালের সবচেয়ে সৌন্দর্যমন্ডিত আকর্ষণীয় বলে তিনি জানান। শিগগিরই সেতু উদ্বোধনের খবরে উচ্ছ্বসিত দক্ষিনাঞ্চলের মানুষ। এ সেতু চালুর মধ্য দিয়ে লেবুখালী ফেরিঘাটে হয়রানি ও ভোগান্তির অবসান হবে আশা পরিবহন শ্রমিকসহ যাত্রীদের। ২০০ মিটার করে দেশের দীর্ঘতম দুটি স্প্যান বসানো হয়েছে পায়রা সেতুতে। নদীর তলদেশে বসানো হয়েছে ১৩০ মিটার দীর্ঘ পাইল। যা দেশের সর্ববৃহৎ। বিদু্যুতের আলোয় রাতে নৈসর্গিক দৃশ্যের অবতারণা হবে পায়রা সেতুতে। ২০১৩ সালের ১৯ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পায়রা সেতুর ভিত্তি উদ্বোধন করেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর