বুধবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

ক্যামেরা নজরদারিতে অপরাধীরা

বরিশাল নগরীতে পুলিশের ২৩৬ ক্যামেরা, অপরাধী দেখলে দেবে স্বয়ংক্রিয় সংকেত

রাহাত খান, বরিশাল

ক্যামেরা নজরদারিতে অপরাধীরা

অত্যাধুনিক ক্যামেরা স্থাপন করে বরিশাল মহানগরকে কঠোর নিরাপত্তার চাদরে আবৃত করে রেখেছে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ। এ লক্ষ্যে মহানগরের গুরুত্বপূর্ণ ২২৫ পয়েন্টে সিসিটিভি ক্যামেরা, আট প্রবেশমুখে ফেস ডিটেকশন ও গুরুত্বপূর্ণ তিন স্থানে স্থাপন করা হয়েছে ৩৬০ ডিগ্রি অ্যাঙ্গেলের পিটিজেড ক্যামেরা। এসব ক্যামেরা স্থাপনের ফলে নগরবাসীর নিরাপত্তা বাড়ার পাশাপাশি অপরাধ নিয়ন্ত্রণ ও অপরাধী শনাক্ত করা সহজ হবে। কোনো চিহ্নিত অপরাধী আট প্রবেশদ্বার দিয়ে নগরে প্রবেশ করলে ফেস ডিটেকশনের মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংকেত পাবে পুলিশ। তৎক্ষণাৎ তাকে আটকের ব্যবস্থা নেবে সংলগ্ন পুলিশ স্টেশন। আগামীতে মহানগরে আরও ৫০০ ক্যামেরা স্থাপন করে পুরো মেট্রোপলিটন এলাকায় নিরাপত্তা বাড়ানোর কথা বলেছেন মেট্রো পুলিশ কমিশনার মো. শাহাবুদ্দিন খান। ৪৩০ বর্গকিলোমিটার আয়তনের বরিশাল মেট্রোপলিটন এলাকার মধ্যে প্রথম পর্যায়ে নগরের ৫৪ কিলোমিটার এলাকার বিভিন্ন স্থানে স্থাপন করা হয়েছে অত্যাধুনিক ২২৫টি সিটি ক্যামেরা। দুটি বাস টার্মিনাল ও নদীবন্দর এলাকায় স্থাপন করা হয়েছে ৩৬০ ডিগ্রি অ্যাঙ্গেলের তিনটি পিটিজেড ক্যামেরা। সন্দেহজনক কিছু দৃষ্টিগোচর হলে কন্ট্রোল সেন্টার থেকে এ ক্যামেরা ৩৬০ ডিগ্রি পর্যন্ত ঘুরিয়ে বিষয়টি গভীরভাবে নজরদারি করতে পারবেন সংশ্লিষ্টরা। এ ছাড়া নগরের আট প্রবেশদ্বারে স্থাপন করা হয়েছে আটটি ফেস ডিটেকশন ক্যামেরা। চিহ্নিত অপরাধী কিংবা সাজাপ্রাপ্ত কোনো পলাতক আসামি এসব প্রবেশদ্বার দিয়ে নগরে প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গে ফেস ডিটেকশন ক্যামেরা স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংকেত দেবে। তৎক্ষণাৎ সংলগ্ন থানা পুলিশ ওই অপরাধীকে গ্রেফতার করতে পারবে। এসব কার্যক্রম সার্বক্ষণিক নজরদারির জন্য মেট্রোপলিটনে গঠন করা হয়েছে আলাদা ‘কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সেন্টার’। মেট্রোপলিটনের ক্রাইম অপারেশন অ্যান্ড প্রসিকিউশন শাখার অধীনে কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সেন্টার কাজ করছে। একজন উপ-কমিশনার এ ইউনিটের প্রধান। এ ছাড়া অতিরিক্ত উপ-কমিশনার, সহকারী কমিশনার, পরিদর্শকসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা কন্ট্রোল সেন্টার নজরদারি করছেন। সার্বক্ষণিক নজরদারিতে রয়েছেন পুলিশের নয়জন প্রশিক্ষিত সদস্য। প্রায় ৮৫ লাখ টাকা ব্যয়ে স্থাপিত সিসি ক্যামেরাসহ কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সেন্টার পরীক্ষামূলকভাবে চালু হয় ২৭ জুন। তবে ১৭ নভেম্বর কমান্ড কন্ট্রোল সেন্টারের উদ্বোধন করেন পুরিশ মহাপরিদর্শক ড. বেনজীর আহমেদ। কন্ট্রোল সেন্টারের মনিটরিং কর্মী মো. ওসমান গনী ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মী অজিত হালদার বলেন, সব কাজ সুচারুরূপে চলছে। কিন্তু ইন্টারনেটের গতি কমে গেলে মাঝেমধ্যে নজরদারিতে বিভ্রাট ঘটে। বিএমপির ক্রাইম অপারেশন অ্যান্ড প্রসিকিউশন শাখার অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মো. রাসেল জানান, প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের দিয়ে গঠন করা হয়েছে কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সেন্টার।

কোথাও কোনো অপরাধ সংঘটিত কিংবা অবৈধ জনসমাগম হলে সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে জানতে পারবে কন্ট্রোল সেন্টার। তৎক্ষণাৎ ওই বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে পারবে সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশ। এ ছাড়া অপরাধী শনাক্তেও প্রবেশপথগুলোয় স্থাপিত ফেস ডিটেকটর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এর ফলে নগরবাসীর নিরাপত্তা বৃদ্ধি এবং অপরাধ নিয়ন্ত্রণ ও অপরাধী শনাক্তকরণ সহজ হবে বলে মনে করেন অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মো. রাসেল।

বিএমপির কোতোয়ালি থানার সদ্যবিদায়ী ওসি মো. নুরুল ইসলাম জানান, সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে ইতিমধ্যে ছিনতাই নাটকসহ চুরি, ছিনতাইয়ের অর্ধশতাধিক ঘটনার রহস্য উন্মোচন করা হয়েছে। থানা পর্যায়ে সেবাপ্রার্থীরা কোনো দুর্ভোগে পড়লে কন্ট্রোল সেন্টার থেকে দেখতে পারবেন কর্মকর্তারা।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর