শনিবার, ৩০ জুলাই, ২০২২ ০০:০০ টা

আউটসোর্সিং কর্মচারীদের ‘ব্লাংক স্ট্যাম্প’ আতঙ্ক

খুমেক হাসপাতালে জনবল সরবরাহে সব ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক একই ব্যক্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা

খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কর্মরত ৩০৬ জন আউটসোর্সিং কর্মচারীর মধ্যে চাকরি হারানো, বেতন না পাওয়া ও ‘ব্লাংক স্ট্যাম্প’ (ফাঁকা স্ট্যাম্প) আতঙ্ক বিরাজ করছে। ২০২১-২২ অর্থবছরে চাকরির মেয়াদ শেষ হলেও চার দফায় নিয়োগকৃত কর্মচারীর অনেকেরই পাঁচ থেকে আট মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে। এ অবস্থায় আগামী অর্থবছরে চাকরিতে নিয়োগ ও শর্তাবলি নবায়নের কথা বলে এসব কর্মচারীর কাছ থেকে ফাঁকা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেওয়া হচ্ছে। ভুক্তভোগীরা বলছেন, পরবর্তীতে এই ফাঁকা স্ট্যাম্পে ‘ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাছে বেতন পাওনা নেই’ লিখে তাদের হয়রানি করা হতে পারে। আর স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর না করলে চাকরি থেকে বরখাস্তের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। জানা যায় ২০২১-২২ অর্থবছরে চার দফায় খুমেক হাসপাতালে ১০০ জন, ১০৭ জন, ৯৫ জন ও চারজন আউটসোর্সিং জনবল সরবরাহের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘মাছরাঙ্গা  সিকিউরিটি সার্ভিস লিমিটেড’ ও ‘কন্ট্রাক্ট ক্লিনিং সার্ভিসেস’র মালিক একই ব্যক্তি মো. ফারুক হোসেন হেমায়েত। গত তিন দিন ধরে খুমেক হাসপাতালে তার অধীনে আউটসোর্সিং কর্মচারীদের কাছ থেকে স্ট্যাম্প সংগ্রহ করছেন আ. রহিম, সাব্বির ও তুহিন শেখ। এরা সবাই ঠিকাদারের নিজস্ব লোক বলে পরিচিত। জানা যায়, ১০০ জনের লটের কর্মচারীদের ১০ মাস, ১০৭ জনের লটের কর্মচারীদের পাঁচ মাস, ৯৫ জনের লটের কর্মচারীদের সাত মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে। বেতন না পেয়ে তারা মানবেতর জীবন-যাপন করছেন।

এর মধ্যে সাত মাসের বেতন না পেয়ে হাসপাতালের পরিচালকের কাছে অভিযোগ করতে গেলে এক কর্মচারীকে মারধর করে ঠিকাদারের লোকজন। একই সঙ্গে বেতন না পাওয়ার কথা জানালে চাকরি থেকে বরখাস্তের হুমকি দেওয়া হয়।

ঠিকাদারের প্রতিনিধি তুহিন শেখ জানান, প্রতিষ্ঠানের এমডির (ব্যবস্থাপনা পরিচালক) নির্দেশে এ স্ট্যাম্প সংগ্রহ করা হচ্ছে। আর কর্মচারীরা কিছু বেতন হয়তো পাবেন কিন্তু আট মাসের বেতন না পাওয়ার অভিযোগ সত্য নয়।

এদিকে ২০২১-২২ অর্থবছরের মেয়াদে ৩০ জুন শেষ হলেও খুমেক হাসপাতাল পরিচালক নতুনভাবে আউটসোর্সিং দরপত্র আহ্বান না করে গোপনে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটির চুক্তি নবায়নের চেষ্টা করছেন। যদিও হাসপাতালের পরিচালক ডা. রবিউল হাসান অভিযোগ অস্বীকার করে এ বিষয়ে পরে বিস্তারিত জানানোর কথা বলেন। আর দুই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক ফারুক হোসেন জানান, তার প্রতিপক্ষ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। তিনি বলেন, কর্মচারীদের সঙ্গে নতুন করে নিয়োগ ও চাকরির শর্তাবলি নবায়নের জন্য স্ট্যাম্প নেওয়া হয়েছে। এখানে কাউকে হয়রানি করা হবে না।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর