১৫ নভেম্বর দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত এবং পলাতক আসামি নাফিজ সরাফত বাংলাদেশ প্রতিদিনে প্রকাশিত ‘লুটতন্ত্রের প্রতীক নাফিজ সরাফত’ শিরোনামে ধারাবাহিক প্রতিবেদনের প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তাঁর প্রতিবাদের পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিবেদকের বক্তব্য-
১. তিনি যে আবেগতাড়িত হয়ে এবং নিজের অপকর্ম ধামাচাপা দিতে এ প্রতিবাদ পাঠিয়েছেন তার প্রমাণ পাওয়া যায় প্রতিবাদটির শুরুতেই। প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়েছে, ‘১ থেকে ১৪ নভেম্বর তারিখের মধ্যে বাংলাদেশ প্রতিদিনের বিভিন্ন সংখ্যায়’, প্রকৃত সত্য হলো এ প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছে ৯ নভেম্বর থেকে। ২. নাফিজ সরাফত দাবি করেছেন, ২০০৮ সালের ৮ মার্চ তিনি রেস অ্যাসেট প্রতিষ্ঠা করেন। একই বছর তিনি আইএফআইসি ব্যাংকের স্বতন্ত্র পরিচালক হন। তাঁর দাবি, এটি কোনো রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতা থেকে হয়নি।
কিন্তু বাস্তবতা হলো, ২০০৮ সালের জানুয়ারি থেকে এক-এগারো সরকার সেফ এক্সিটের জন্য আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করে। সে কারণেই আওয়ামী লীগের পছন্দের লোকজন নানারকম সুবিধা পান। নাফিজ আইএফআইসি ব্যাংকের পরিচালক হয়েছিলেন সালমান এফ রহমানের আগ্রহে। ২০০৯ সালের ১৯ মার্চ সালমান এফ রহমান নিজেই এক সাক্ষাৎকারে এটি দাবি করেন।
প্রতিবেদনে কোথাও তাঁকে বেনজীরের আত্মীয় বা কারও সঙ্গে পারিবারিক সম্পর্কের কথা বলা হয়নি। তিনি (নাফিজ সরাফত) নিজেই এসব পরিচয় ব্যবহার করে অনৈতিক সুবিধা আদায় করতেন। সাংবাদিক শফিকুর রহমানের টেলিভিশন লাইসেন্স জোর করে লিখে নেওয়াসংক্রান্ত লিখিত অভিযোগে বলা হয়েছে, বেনজীরকে নাফিজ আংকেল সম্বোধন করতেন। রেস অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট নিয়ে প্রতিবেদনের পুরো বক্তব্যই দুর্নীতি দমন কমিশন এবং সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশনের। এ অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তিনি যদি দুর্নীতি না করে থাকেন সেটা আদালতে মীমাংসা হবে। প্রতিবেদনে শুধু তাঁর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের বিবরণ তুলে ধরা হয়েছে।
একইভাবে তিনি যদি সিরিজ প্রতিবেদনটি মনোযোগ দিয়ে পড়তেন তাহলে বুঝতে পারতেন, প্রতিবেদনের কোনো তথ্যই প্রতিবেদকের নিজস্ব নয়, বরং সরকারের বিভিন্ন সংস্থার যারা নাফিজ সরাফতের বিরুদ্ধে তদন্ত করছে এবং একাধিক মামলা দায়ের করেছে। কাজেই রেস অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট, মিথ্যা আইপিও, ফারমারস ব্যাংক ইত্যাদি বিষয়ে তাঁর বক্তব্য বাংলাদেশ প্রতিদিনে না জানিয়ে আদালতে ও তদন্তকারী কর্তৃপক্ষকে জানানোই উত্তম। কারণ এ ধরনের অভিযোগ এবং তার তদন্ত নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ সাংবাদিকতার একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব।
সৎ নাগরিক হিসেবে নাফিজ সরাফতের দায়িত্ব হলো তদন্তে এবং বিচারে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করা। আদালত তাঁকে নির্দোষ রায় দিলে সে খবরও গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ করবে বাংলাদেশ প্রতিদিন। কারণ বাংলাদেশ প্রতিদিন নিরপেক্ষতার সঙ্গে সত্য প্রকাশে অঙ্গীকারবদ্ধ।