মঙ্গলবার, ১০ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

দেশকে তালেবানি রাষ্ট্র বানাতে চায় বিএনপি

রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আলোচনা

নিজস্ব প্রতিবেদক

সংসদে দেওয়া রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের ভাষণের ওপর আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে সরকারদলীয় এমপিরা বলেছেন, আমরা এক সঙ্গে থাকলে কেউ দেশের ক্ষতি করতে পারবে না। তারা বিএনপির সমালোচনা করে বলেন, বিজয়ের মাসে বিএনপি স্বাধীনতা বিরোধীদের সঙ্গে নিয়ে সমাবেশ করে। তারা তালেবানি রাষ্ট্র বানাতে চায়। বাংলাদেশকে তালেবানি রাষ্ট্র বানানোর সুযোগ আমরা কাউকে দেব না। আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছি। আমরা তো কারও কাছে পরাজয় মানতে পারি না। এ সময় সাবেক ডাকসু ভিপি নুরুল হক নূরের কর্মকান্ডের সমালোচনা করে তারা বলেন, সন্ত্রাসের আরেক নাম হচ্ছে ভিপি নূর। তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।

সংসদে বিরোধী দল জাতীয় পার্টির এমপি শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, বর্তমানে দেশ বেশ কয়েকটি সংকটে রয়েছে তার মধ্যে সব চেয়ে বড়টা হচ্ছে সুশাসনের অভাব। এ ছাড়া রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাবও ছিল। তিনি প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, দেশকে গতানুগতিকভাবে পরিচালিত করলে হবে না, সংশোধিত এপ্রোচে চালাতে হবে। এ সময় সরকারকে আমলাতান্ত্রিক নির্ভরতা থেকে সরে আসার এবং (সংসদের বাইরের) বিরোধী দলের কিছু কিছু যৌক্তিক দাবি মেনে নিতে হবে। না হলে উন্নয়ন বিঘ্নিত হবে। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে গতকাল সংসদের ২১তম অধিবেশনের তৃতীয় দিনের বৈঠকে  রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে তারা এসব কথা বলেন। আলোচনায় অংশ নেন রেলপথমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন, জাতীয় পার্টির সদস্য শামীম হায়দার পাটোয়ারী, সরকারি দলের সদস্য উপাধ্যক্ষ আবদুস শহীদ, বেনজীর আহমদ, বেগম মেরিনা জাহান, মো. মহিবুর রহমান, সৈয়দা রুবিনা আক্তার, শামীম উদ্দীন আহমেদ শিমুল, খালেদা খানম প্রমুখ।

বেনজীর আহমদ বলেন, এখানে ভিপি নূরের কথা এসেছে। আমি মনে করি বাংলাদেশে সন্ত্রাসের আরেক নাম হচ্ছে ভিপি নূর। তিনি সরকারবিরোধী আন্দোলনের নামে এমন ধ্বংসাত্মক কর্মকান্ড করছেন, যা সরকারের জন্য বিব্রতকর। তিনি এখন দেশের জন্য আতঙ্ক। তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। তিনি বিএনপির সমালোচনা করে বলেন, বিজয়ের মাসে বিএনপি স্বাধীনতাবিরোধীদের সঙ্গে নিয়ে সমাবেশ করে। তারা এখানে তালেবানি রাষ্ট্র বানাতে চায়।

সৈয়দ রুবিনা আক্তার বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতের কারণে অর্থনীতিতে অস্থিরতা বিরাজ করছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বের কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতি এগিয়ে চলেছে। তিনি সন্ধ্যা নদীর ভাঙন থেকে বরিশাল বিমানবন্দর রক্ষার দাবি জানান।

জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, দেশের উন্নয়নে সবচেয়ে দরকার একটি রাজনৈতিক সমঝোতা। একটি অর্থনৈতিক ও কাঠামোগত সংস্কার। তা না হলে আমাদের অর্থনৈতিক হোঁচট খাবে। তিনি বলেন, ক্রমবর্ধমান হারে রিজার্ভ কমছে। তাই আইএমএফের ঋণ বিশেষ প্রয়োজন। তিনি বলেন, দেশকে বাঁচানোর একমাত্র পথ হচ্ছে রেমিট্যান্স। কিন্তু রেমিট্যান্স দ্রুত কমে যাচ্ছে।

এ সময় রিজার্ভে ডলার বাড়াতে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়ার প্রস্তাব করেন তিনি। যেমন, অনেকেই বিদেশে লাখ লাখ এমনকি কোটি ডলার দিয়ে বাড়ি কিনেছেন, বানিয়েছেন। তারা ট্যাক্স ফাইলে এগুলো দেখাতে পারছেন না। এদের যদি বিশেষ সুবিধা দেওয়া যায় তাহলে তারাও ট্যাক্স ফাইলে এগুলো দেখিয়ে এ ইনভেস্টমেন্ট বৈধ করতে পারেন। এতে ডলার বাড়বে। এ ছাড়া বিদেশি ডোনাররা যখন এনজিওগুলোকে ফান্ড পাঠায় তখন তা রিলিজ করতে বেশি সময় লাগে, এটা সহজীকরণ করা দরকার। তিনি বলেন, বাংলাদেশ এখন ৩৫তম অর্থনৈতিক দেশ। প্রায় ৪৬৫ বিলিয়ন ডলারের অর্থনীতি আমাদের। তার পরও আর্থিক খাতে এত সংকট কেন?

তিনি আরও বলেন, ২০০৮ সালে ২০ হাজার কোটি ছিল মন্দ ঋণ। এখন তা ২ লাখ কোটি টাকা হয়ে গেছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর