মঙ্গলবার, ৩১ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

কীর্তনখোলা তীরের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ

রাহাত খান, বরিশাল

কীর্তনখোলা তীরের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ

বরিশালের ‘হৃৎপিণ্ড-খ্যাত’ কীর্তনখোলা নদীর তীর দখল করে গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ শুরু করেছে সিটি করপোরেশন। গত রবিবার থেকে শুরু হওয়া উচ্ছেদ অভিযান চলমান থাকবে বলে জানিয়েছেন বরিশাল সিটি করপোরেশন (বিসিসি) কর্মকর্তারা। এদিকে কোনো ধরনের নোটিস এমনকি পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই উচ্ছেদ অভিযান চালানোয় ক্ষতির মুখে পড়েছেন ওইসব স্থাপনায় থাকা মজুদদার, বিভিন্ন কোম্পানির ডিলার এবং ব্যবসায়ীরা। তবে নিয়ম মেনেই উচ্ছেদ অভিযান চালানো হচ্ছে বলে দাবি করেছেন তারা। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সরকারি কর্তৃপক্ষের নজরদারি না থাকায় কীর্তনখোলা নদীর দুই তীর দখলের মহোৎসব শুরু হয়েছে। তীর ঘেঁষে খুঁটি গেড়ে প্রতিনিয়ত অবৈধ দখলের পরিধি বাড়ুছে। কেউ তীর দখল করে গোডাউন, কেউ কার্গো নোঙর করার ঘাট আবার কেউ তীর দখল করে ইট-বালু, কয়লা-পাথরের ব্যবসা করছেন। এ ছাড়াও নানাভাবে দখল করা হয়েছে কীর্তনখোলা নদীর দুই তীর। এ অবস্থায় গত রবিবার নগরীর ধান গবেষণা রোড-সংলগ্ন কীর্তনখোলা নদীর তীর দখল করে অবৈধভাবে নির্মিত পাঁচটি গোডাউন ও নদীতীরের ঘাটসহ অন্যান্য স্থাপনা উচ্ছেদ শুরু করে বিসিসি। গতকালও তারা উচ্ছেদ অভিযান চালিয়েছে। স্থানীয় জনসাধারণ অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযানকে স্বাগত জানিয়েছে। অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের কারণে নদীর তীর উন্মুক্ত হয়েছে। এতে জনসাধারণের চলাচল এবং বিনোদনের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। তারা নদীর তীর ঘেঁষে একটি বেড়িবাঁধ নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন।

এদিকে গোডাউন ভেঙে ফেলায় সবচেয়ে বড়ু ক্ষতির মুখে পড়েছে ওই স্থাপনার ভাড়াটিয়া বিভিন্ন কোম্পানির ডিলার ও পরিবেশকরা। আকস্মিক উচ্ছেদের কারণে তারা পণ্যগুলো নিরাপদে সরানোর সুযোগও পায়নি। উচ্ছেদ চালাতে গিয়ে তারা বিভিন্ন কোম্পানির অনেক পণ্যের ক্ষতি করেছে বলে দাবি তাদের। এ কারণে তারা গুদামজাত পণ্য অন্যত্র সরানোর জন্য সময় দাবি করেছেন। অন্যদিকে ওই এলাকার গোডাউন ভেঙে ফেলায় স্থানীয় ২ শতাধিক শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছেন। তারা আহাজারি শুরু করেছেন।

আকস্মিক উচ্ছেদ অভিযানে ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও স্থাপনাগুলো বিসিসির অনুমোদিত নকশাবহির্ভূত ছিল বলে স্বীকার করেছেন গুদাম মালিকের ভাই ও স্থানীয় সাবেক কাউন্সিলর ফিরোজ আহমেদ।

নিয়মনীতি মেনেই কীর্তনখোলা নদীর তীরে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ ফারুক আহমেদ। এই অভিযান চলমান থাকবে বলে তিনি জানান।

বরিশাল নদীবন্দর কর্তৃপক্ষের হিসাবে কীর্তনখোলা নদীর দুই তীরে প্রায় ৩ হাজার ২০০ অবৈধ স্থাপনা রয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর