বিএনপির রাজনীতি নিষিদ্ধ করার বিষয়ে আওয়ামী লীগের কোনো চিন্তা নেই বলে জানিয়েছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, যুবলীগ চাইলেই তো একটা জাতীয় দল নিষিদ্ধ হয়ে যাবে না। গতকাল আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন। গতকাল নির্বাচন কমিশনে সংরক্ষিত নারী আসনে নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার আনুষ্ঠানিকতা শেষে বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। সংসদ কতটা কার্যকর হবে- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, সংসদ কেন কার্যকর হবে না? একটা ফ্রি, ফেয়ার নির্বাচন হয়েছে। যেখানে টার্ন আউট ফোরটি ওয়ান প্লাস। বিরোধী দলের ভূমিকায় জাতীয় পার্টি অলরেডি তাদের কার্যক্রম সংসদে শুরু করেছে। বিরোধী দল আছে, এমনকি স্বতন্ত্ররা প্রয়োজনে মনে করলে সরকারের সমালোচনাও তারা করতে পারে। সমালোচনার জন্য স্বতন্ত্ররা আছে, বিরোধী দল তো আছেই। তাই সংসদ কার্যকর হওয়ার পথে কোনো অন্তরায় বা বাধা আছে বলে আমরা মনে করি না।
বিএনপির আন্দোলনের বিষয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, এটা আষাঢ়ের তর্জন-গর্জন। তাদের আন্দোলনের বস্তুগত পরিস্থিতি দেশে বিরাজমান ছিল না। এখনো নেই। তাদেরও সাবজেকটিভ প্রিপারেশন ছিল না। সুসংগঠনগত যে প্রস্তুতি সে প্রস্তুতিতে তারা নেতিবাচক রাজনীতি দ্বারা ভুল করেছে। ভুলের চোরাবালিতে আটকে গেছে।
বিএনপিকে নিয়ে মাথাব্যথা নেই মন্তব্য করে তিনি বলেন, তারা মুখে যা বলছে, কার্যক্ষেত্রে তারা তা দেখাতে পারেনি। দেশের মানুষকে তাদের আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে পারেনি। মানুষ সম্পৃক্ত হলে আন্দোলন সফল হয়। মানুষ তাদের আন্দোলনে সম্পৃক্ত হয়নি।
এক প্রশ্নে জবাবে তিনি বলেন, নিবন্ধন বাতিল করে বিএনপিকে নিষিদ্ধের দাবিতে যুবলীগ ইসিতে যে আবেদন করেছে, সেটি নিয়ে আওয়ামী লীগ কোনো কিছু ভাবছে না। তিনি বলেন, যুবলীগ আমাদের একটা সংগঠন। তাদের স্বতন্ত্র একটা সত্তা রয়েছে। তারা দাবি করতে পারে। মূল দল হচ্ছে আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগ এ ধরনের চিন্তাভাবনা করলে বলতাম। তিনি বলেন, আমাদের কোনো নেতা এ বিষয়টি অবতারণা করেনি। আমাদের উদ্বেগও নেই, এটা নিয়ে কোনো চিন্তাও নেই। ছাত্রলীগের এক নেতা দাঁড়িয়ে বলে গেল বিএনপিকে নিষিদ্ধ করতে, তাতে কী আমরাও ওর সঙ্গে লাফাব? তারা তাদেরটা বলুক। যুবলীগ যুবলীগের চিন্তা থেকে বলছে, যুবলীগ চাইলে তো একটা জাতীয় দল নিষিদ্ধ হয়ে যাবে না, মূল দল আওয়ামী লীগ তো এনিয়ে প্রশ্ন তোলেনি।
বিএনপি তো বলছে সংসদে কেবল সরকারপন্থিদের আওয়াজ, বিষয়টি সামনে আনলে কাদের বলেন, ‘তাদের আওয়াজ কোথায় থেমে গেছে! আওয়াজ তো তাদেরও ছিল। সে আওয়াজ এখন কোথায়? সে আওয়াজ তো পালিয়েছে। তারা সরকারকে পালাতে বলেছে, এখন নিজেরাই পালিয়েছে। বাস্তবতা হচ্ছে তাদের আওয়াজ তো কাজে দেয়নি। আমরা যা বলেছি, আমরা ইলেকশন করব ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার ইলেকশন, জনগণ অংশ নেবে, প্রতিহত করার দুঃসাহস কারও নেই, আমরা শেষ পর্যন্ত সতর্ক পাহারায় আছি। এখনো আমরা সতর্ক পাহারায় আছি, যদি কেউ এই নির্বাচন নিয়ে কোনো প্রকার ষড়যন্ত্রমূলক, সন্ত্রাসমূলক কোনো তৎপরতায় আসে, সেটা আমরা অবশ্যই প্রতিরোধ করব। দেশের জনগণকে নিয়ে সেটা প্রতিহত করব।’
ঘুরে দাঁড়াতে সহায়তা করবেন কি না- জানতে চাইলে কাদের বলেন, ‘জাফরুল্লাহ চৌধুরী এই কথাটা প্রকাশ্যে বলে গেছেন যে, বিএনপি হচ্ছে কোমর ভাঙা, হাঁটুভাঙা দল। আমি জাস্ট তাঁকে কোট করেছি। কোমর ভাঙার কথা আমি বলিনি, জাফরউল্লাহ বলেছেন।’
জাতীয় পার্টি কী ভূমিকা রাখবে পারবে- জানতে চাইলে কাদের বলেন, সংসদ চলুক। যখন বাগ?বিতন্ডা হবে, পয়েন্ট অব অর্ডারে কথা হবে তখন বুঝতে পারবেন।
সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তারা (বিএনপি) আসেনি কেন? আমরা আসতে দিইনি, এটা হাস্যকর। বিএনপিকে নিয়ে আমাদের মাথাব্যথা নেই। কারণ তারা যা মুখে বলছে, তা দেখাতে পারেনি। দেশের মানুষকে তারা আন্দোলনে সম্পৃক্ত করতে পারেনি। মানুষ সম্পৃক্ত হলে আন্দোলন সফল হয়।
