বুধবার, ৮ মে, ২০২৪ ০০:০০ টা

পৌনে ২ কোটি টাকার চাল লোপাট করে খাদ্য কর্মকর্তা লাপাত্তা!

দিনাজপুর প্রতিনিধি

দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার ডুগডুগি খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা (ওসি এলএসডি) আনোয়ারা বেগম খাদ্য গুদামের চাল ও খালি বস্তা আত্মসাৎ করে লাপাত্তা হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ঘোড়াঘাট উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ইউনুস আলী বাদী হয়ে আনোয়ারা বেগমসহ তিনজনের বিরুদ্ধে থানায় এজাহার দাখিল করেছেন। এর আগে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও গঠিত তদন্ত কমিটি ডুগডুগির দুটি খাদ্য গুদামের খামাল (চালের বস্তার স্তূপ) গণনা করেছেন। সোমবার সন্ধ্যা ৭টায় গণনা শেষে চাল ও খালি বস্তার মূল্যসহ মোট ১ কোটি ৭১ লাখ ৩১ হাজার ২৭৯ টাকা ৫২ পয়সা ঘাটতি পাওয়া যায়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তদন্ত কর্মকর্তা ও জেলা সহকারী খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোহন আহমেদ। অভিযোগসূত্রে জানা যায়, ২৫ এপ্রিল ঘোড়াঘাটের ডুগডুগির ওসি এলএসডি আনোয়ারা বেগম কোনো ছুটি না নিয়েই খাদ্য গুদাম সিলগালা করে উধাও হয়ে যান। এ ঘটনায় উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ইউনুস আলী ১ মে ঘোড়াঘাট থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।

একই দিনে দিনাজপুর জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রককে বিষয়টি অবগত করলে তিনি জেলা সহকারী খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোহন আহমেদকে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে দেন। পাশাপাশি জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসক ঘোড়াঘাট উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাহমুদুল হাসানকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে নিয়োগ দেন। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও তদন্ত কমিটি দুটি খাদ্য গুদামের খামাল গণনা করেছেন।

এ বিষয়ে তদন্ত কর্মকর্তা ও জেলা সহকারী খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোহন আহমেদ জানান, ডুগডুগি খাদ্য গুদামে ৩১ হাজার ৫৮৪ বস্তা বা ১ হাজার ৬৪ মেট্রিক টন চাল মজুদ থাকার কথা ছিল। কিন্তু গণনা শেষে মজুদ পাওয়া গেছে ২১ হাজার ৫১৮ বস্তা বা ৭৪৫ মেট্রিক টন। ঘাটতি ১০ হাজার ৬৬ বস্তা বা ৩১৯ মেট্রিক টন। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আত্মসাতের অভিযোগ প্রতি মেট্রিক টন ৫২ হাজার ৪৭২ টাকা হিসাবে ৩১৯ মেট্রিক টন চালের মূল্য ১ কোটি ৬৭ লাখ ৪৬ হাজার ২৫৯ টাকা। এ ছাড়া ৪ হাজার ২৭৮টি খালি বস্তা প্রতিটি ৯০ টাকা হারে মূল্য ৩ লাখ ৮৫ হাজার ২০ টাকা ঘাটতি পাওয়া যায়। এ নিয়ে আত্মসাৎ করা অর্থের পরিমাণ দাঁড়ায় ১ কোটি ৭১ লাখ ৩১ হাজার ২৭৯ টাকা। এ ঘটনায় আরও কেউ জড়িত কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, অফিস সহকারী, দারোয়ান, লেবার সর্দারসহ আরও অনেকে জড়িত থাকতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ঘোড়াঘাট থানায় এজাহার দাখিল করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন থেকে অনুপস্থিত ঘোড়াঘাট উপজেলার পালশা ইউনিয়নের অন্তর্গত ডুগডুগি এলএসডির ভারপ্রাপ্ত খাদ্য কর্মকর্তা আনোয়ারা বেগম গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার নুনিয়াগাড়ী গ্রামের আবদুল মতিন মন্ডলের স্ত্রী। তিনি দীর্ঘদিন যাবৎ ঘোড়াঘাট উপজেলায় সরকারি এলএসডি গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর