ব্যাংক খাত সংস্কারের ধারাবাহিকতায় এবার দুর্বল বিমা কোম্পানিকেও একীভূতকরণের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। অভ্যুত্থান-পরবর্তী পরিস্থিতিতে বিমা গ্রহীতাদের স্বার্থ রক্ষা ও খাতে আস্থা ফেরানোই এই সংস্কারের মূল উদ্দেশ্য। সেই লক্ষ্য অর্জনে এরই মধ্যে ‘ইনশিউরার রেজুলিউশন অর্ডিন্যান্স-২০২৫’ নামে একটি অধ্যাদেশের খসড়াও চূড়ান্ত করেছে সরকারের বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ)। এতে অননুমোদিতভাবে আত্মসাৎকৃত সম্পদ পুনরুদ্ধারের বিধানও রাখা হয়েছে। আইন বাস্তবায়নে আইডিআরএকে একটি বিশেষ রেজুলিউশন সেল গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে। অনুমোদনের জন্য অর্ডিন্যান্সটির খসড়া ইতোমধ্যে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগে পাঠানো হয়েছে। আইডিআরএর সূত্র জানায়, অর্ডিন্যান্সটি কার্যকর হলে সমস্যাগ্রস্ত বিমা কোম্পানিতে প্রশাসক নিয়োগ, পর্ষদ ভেঙে দেওয়া, সম্পদ-দায় স্থানান্তর এবং প্রয়োজন হলে নতুন ব্রিজ-ইনশিউরার গঠনের ক্ষমতা পাবে আইডিআরএ। সূত্র আরও জানায়, অংশীজনদের প্রস্তাবিত সংশোধনীগুলো যুক্ত করার পর ৫ নভেম্বর অর্ডিন্যান্সটি অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
জানা যায়, সংস্কার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে সরকার ও উন্নয়ন সহযোগীদের অর্থায়নে একটি বিশেষ তহবিল গঠন করা হবে। এতে বিশ্বব্যাংকের আইডিএ, এডিবি, আইবিআরডি ও ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (আইসিডিবি) অংশ নিতে পারে। ব্যাংক খাতের রেজুলিউশন মডেল অনুসরণ করে প্রস্তাবিত এই কাঠামোর আওতায় ব্যবস্থাপনা পুনর্গঠন, একীভূতকরণ ও লিকুইডেশনসহ সব ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া যাবে। বিমা খাতের সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, বছরের পর বছর মেয়াদপূর্তির পরও দাবি পরিশোধে ব্যর্থতা ও অস্বচ্ছ পরিচালনার কারণে যে আস্থাহীনতা তৈরি হয়েছে, তা কাটাতে এই উদ্যোগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। যদিও সাধারণ বিমা কোম্পানিগুলো তুলনামূলকভাবে শক্তিশালী হিসেবে বিবেচিত হয়, তবুও জীবন ও সাধারণ দুই ধরনের বিমা প্রতিষ্ঠানই অর্ডিন্যান্সের আওতায় আসবে। বর্তমানে আইডিআরএর তত্ত্বাবধানে ৪৬টি সাধারণ ও ৩৬টি জীবন বিমা কোম্পানি কার্যক্রম পরিচালনা করছে।