২৮ নভেম্বর, ২০২০ ১৪:২৫
করোনার দ্বিতীয় পর্যায়

‘নিউ নরমাল’ নয়, এ যেন ‘অ্যাবনরমাল লাইফ’

শামছুল হক রাসেল

‘নিউ নরমাল’ নয়, এ যেন ‘অ্যাবনরমাল লাইফ’

গুলিস্তান থেকে তোলা- ছবি বাংলাদেশ প্রতিদিন

মহামারী করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় পর্যায় চলছে। বিশ্বের কোথাও কোথাও তৃতীয় দফায় ছড়ানো শুরু করেছে করোনার সংক্রমণ। দিন দিন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। দীর্ঘ হচ্ছে করোনায় মৃত্যুর সারি। সংক্রমণ প্রতিরোধে কোনো কোনো দেশ লকডাউন ঘোষণা করেছে। মানুষের গতিবিধি কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। অথচ বাংলাদেশে অধিকাংশ মানুষের মধ্যেই করোনা প্রতিরোধে স্বাস্ব্যবিধি মেনে চলার বালাই নেই।

হাট-বাজারে, গণপরিবহনে, বাসস্ট্যান্ড, সুপারশপ কিংবা ব্যস্ত বিপণিবিতানের মতো জনবহুল স্থানগুলোতে অধিকাংশ মানুষ মাস্ক পরা কিংবা দূরত্ব বজায় রেখে চলাচলে অনীহা দেখাচ্ছে। করোনা প্রতিরোধে ভিড় এড়িয়ে চলতে বলা হলেও কোথাও কোথাও চলছে রীতিমতো ধাক্কাধাক্কি। এমনকি আইন করেও মাস্ক পরানো যাচ্ছে না।

মহামারী করোনাভাইরাসের কারণে যেভাবে জীবনযাপন করার কথা সেটাকে বলা হচ্ছে 'নিউ নরমাল' (নতুন স্বাভাবিক)। কিন্তু বাংলাদেশের কোথাও কোথাও পরিস্থিতি 'নিউ নরমাল' না হয়ে সেটা হয়ে গেছে 'অ্যাবনরমাল' (অস্বাভাবিক)। এ যেন করোনাকে দাওয়াত দিয়ে ঘরে ডেকে আনা।

বাংলাদেশে নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকেই শীত ঝাঁকিয়ে বসতে শুরু করেছে। এদিকে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা শীতে করোনার প্রকোপ বাড়ার আশঙ্কা করছেন। করোনার দ্বিতীয় পর্যায় মোকাবেলা সরকারের পক্ষ থেকে বারবার সব প্রস্তুতি নেওয়ার তাগিদ দেওয়া হচ্ছে। মাস্ক না পরায় জেলায় জেলায় জরিমানাও করছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। কিন্তু তারপরও স্বাস্থ্যবিধি মানতে নারাজ অধিকাংশ মানুষ। অনেকে পকেটে মাস্ক নিয়ে পরছেন, কিন্তু পরছেন না। অথচ করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কোনো বিকল্প নেই।

বাংলাদেশে করোনায় সংক্রমিত হয়েছে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ৪ লাখ ৫৮ হাজারের বেশি মানুষ। প্রাণ হারিয়েছে সাড়ে ৬ হাজারের বেশি। চলতি নভেম্বরে করোনার বেশ কয়েকটি টিকার কার্যকারিতা প্রমাণিত হওয়ার ঘোষণা এলেও খুব দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে- এমনটা আশা করা যাবে না বলে সতর্ক করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। তাই আমাদের সবার উচিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা। কারণ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে করোনা সংক্রমণ বহুলাংশে প্রতিরোধ করা সম্ভব।

প্রখ্যাত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এ বি এম আবদুল্লাহ বলেন, টিকা আসুক আর না আসুক, মাস্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক করতে হবে। আমাদের বড় একটি জনগোষ্ঠীই এখনো ঠিকমতো স্বাস্থ্যবিধি মানছে না। মাস্ক পরে না। হাত ধোয়ার চর্চা নেই। শারীরিক দূরত্ব মানছে না। মানুষকে সচেতন করে তুলতে হবে। এখন দেরি না করে যত দ্রুত সম্ভব আইন প্রয়োগসহ প্রয়োজনীয় যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। 

বিডি প্রতিদিন/ফারজানা

সর্বশেষ খবর