জার্মানিতে এবার ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সিরা সর্বত্র করোনা টিকা নিতে পারবে। সেপ্টেম্বর মাস থেকে বয়স্ক ও উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ মানুষ টিকার বুস্টার ডোজ নিতে পারবেন। ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট মোকাবিলায় এই সিদ্ধান্ত নিল জার্মানি।
জার্মানিতে ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সি কিশোর-কিশোরীদের জন্য মে মাসেই বায়োএনটেক-ফাইজার ও পরে মডার্না কোম্পানির করোনা টিকার ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। কিন্তু দেশের টিকা কমিশন শুধু এই বয়সের উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ মানুষদের জন্য সেই টিকা নেবার পরামর্শ দিয়েছিল। অর্থাৎ, ডায়াবেটিস বা স্থূলতার মতো সমস্যা থাকলে তবেই টিকা নেবার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে বলে মনে করে কমিশন।
সোমবার ফেডারেল ও রাজ্য স্তরের স্বাস্থ্যমন্ত্রীরা সেই পরামর্শ উপেক্ষা করে সব ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সিদের জন্য টিকা নেবার সুযোগ করে দিলেন। ফলে প্রাপ্তবয়স্কদের মতো এই কিশোর-কিশোরীরাও সরকারি টিকাকেন্দ্রসহ যে কোনো জায়গায় গিয়ে করোনা টিকা নিতে পারবে।
উল্লেখ্য, ১২ বছরের কমবয়সিদের জন্য এখনো কোনো দেশে টিকার ছাড়পত্র দেওয়া হয়নি।
জার্মানির স্বাস্থ্যমন্ত্রী ইয়েন্স স্পান বলেন, দেশে সব বয়সের মানুষকে দেবার জন্য যথেষ্ট পরিমাণ করোনা টিকা রয়েছে। চলমান গ্রীষ্মে যে কেউ সেই টিকা নিতে পারেন। গ্রীষ্মের ছুটির পর স্কুল খোলার সময় বিশেষ করে ডেল্টা ভেরিয়েন্টের মোকাবিলা করতে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর ভূমিকা পালন করবে বলে স্বাস্থ্যমন্ত্রীরা আশা করছেন।
জার্মানিতে এখনো পর্যন্ত ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সিদের মধ্যে প্রায় ২০ শতাংশ কমপক্ষে টিকার একটি ডোজ এবং প্রায় দশ শতাংশ দুটি ডোজই পেয়ে গেছে। জার্মানির পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ক্রিস্টিনে লামব্রেশট বলেন, সোমবারের সিদ্ধান্তের ফলে অনেক বাবা-মা দ্বন্দ্ব কাটিয়ে সন্তানদের করোনা টিকা দেবার ব্যবস্থা করতে পারেন।
মঙ্গলবারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বয়স্ক ও উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ মানুষ সেপ্টেম্বর মাস থেকে করোনা টিকার বুস্টার ডোজ নেবার সুযোগও পাবেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী স্পান বলেন, একাধিক গবেষণা অনুযায়ী এমন সব মানুষের শরীরে টিকা সত্ত্বেও প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। ফলে আসন্ন হেমন্ত ও শীতকালে তাদের বায়োএনটেক বা মডার্না কোম্পানির টিকা দিয়ে আরো সুরক্ষিত করে তোলা হবে। এমনকি প্রথমে অ্যাস্ট্রাজেনেকা বা জনসন অ্যান্ড জনসন কোম্পানির টিকা পেয়ে থাকলেও বুস্টার হিসেবে শুধু এমআরএনএ টিকা দেওয়া হবে। বৃদ্ধাবাসে মোবাইল টিকা টিম পাঠিয়ে বয়স্কদের বুস্টার ডোজ দেবার ব্যবস্থা করবে সরকার।
প্রতিবেশী দেশগুলির তুলনায় জার্মানিতে করোনা সংক্রমণের হার এখনো অপেক্ষাকৃত কম থাকলেও সরকার ও প্রশাসন করোনা মহামারির চতুর্থ ঢেউ এড়াতে একাধিক পদক্ষেপ নিতে চাইছে। টিকা কর্মসূচির গতি বাড়ানোর পাশাপাশি বহিরাগতের জন্য বাধ্যতামূলক করোনা পরীক্ষার পাশাপাশি ১০ আগস্ট রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের সম্মেলনে আরও সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হতে পারে। সম্ভবত বেশিরভাগ মানুষের জন্য বিনামূল্যে করোনা পরীক্ষার সুযোগ বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন মুখ্যমন্ত্রীরা।
সূত্র: ডয়েচে ভেলে।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন
.jpg)
