সোমবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

প্রাইভেট দেখালে ভিতরে টিকিটে বাইরে

মেহেন্দিগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল

বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অফিস চলাকালে ২০০ টাকা করে ভিজিট নিয়ে রোগী দেখার অভিযোগ উঠেছে। সরকারি কার্যদিবসে প্রতিদিন প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আসা সাধারণ মানুষকে জিন্মি করে হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে মোটা অংকের টাকা। যারা ২০০ টাকা ফি না দিয়ে ৩ টাকার টিকিট কেটে ডাক্তার দেখাতে যান তাদের চিকিৎসক কক্ষ থেকে বের করে দেন বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। গতকাল বেলা ১১টায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডা. জিয়ার টাকা নেওয়ার দৃশ্য মুঠোফোনে ক্যামেরাবন্দী করেন এক রোগী। ওই ছবিসহ ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন মেহেন্দিগঞ্জের এক সাংবাদিক। তিনি লেখেন, মেহেন্দিগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অফিস চলাকালে ২০০ টাকা ফি ছাড়া মিলছে না সেবা। সরকারি টিকিট নেওয়া রোগীরা ডাক্তের চেম্বারে গেলে তিনি তাদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করে বের করে দেন। যারা ২০০ টাকা করে ফি দেন তাদের ব্যক্তিগত প্যাডে ব্যবস্থাপত্র লিখে দেন। মেহেন্দিগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্বাস্থ্যসেবার নামে চলছে ডাক্তারের বাণিজ্য।’ প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মেহেন্দিগঞ্জের শ্যামপুর এলাকার রোকসানা মাথা ও পেটে ব্যথা এবং জ্বর নিয়ে রবিবার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে ৩ টাকার সরকারি টিকিট কেটে মেডিকেল অফিসার ডা. এটিএম জিয়াউদ্দিনের কক্ষে ঢোকেন। এ সময় ডাক্তার তার সঙ্গে বাজে আচরণ করেন। রোকসানা অভিযোগ করেন, সরকারি টিকিট নিয়ে ডাক্তারের কক্ষে ঢুকতেই তিনি তাকে বের হয়ে যেতে বলেন। রোগীদের উদ্দেশে বলেন, ‘যারা প্রাইভেট দেখাবেন তারা ভিতরে বসেন, আর যারা সরকারি টিকিটে দেখাতে এসেছেন, তারা বাইরে যান।’ একপর্যায়ে তিনি ডাক্তারকে ২০০ টাকা দিলে দেখাতে রাজি হন। একই অভিযোগ করেন মেহেন্দিগঞ্জ পৌরসভার মোসলেম উদ্দিন ও দুর্গাপুরের কহিনুর বেগম। অভিযোগ আছে, দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকেও টাকা ছাড়া চিকিৎসা না পেয়ে অনেকে ফিরে যাচ্ছেন। অভিযুক্ত মেডিকেল অফিসার এটিএম জিয়াউদ্দিন মুঠোফোনে সরকারি অফিসে টাকা নিয়ে প্রাইভেট রোগী দেখার কথা অস্বীকার করেন। পরে প্রাইভেট ব্যবস্থাপত্র দেওয়ার স্থিরচিত্র এ প্রতিবেদকের কাছে রয়েছে জানানোর পর বলেন, সরি, ভুল হয়েছে। মেহেন্দিগঞ্জ স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নাজমুল আহসান বলেন, ‘সরকারি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে টাকার বিনিময়ে রোগী দেখার অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ বিষয়ে জানতে সিভিল সার্জন ডা. মনোয়ার হোসেন ব্যক্তিগত মুঠোফোনে একাধিক বার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি। উল্লেখ্য, গত বছর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অফিস চলাকালে ২০০ টাকা করে নিয়ে ডা. জিয়ার রোগী দেখার সচিত্র সংবাদ প্রচারিত হয়েছিল একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে। ওই সংবাদ প্রকাশের পর তদন্ত কমিটি গঠন হলেও জিয়ার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে।

সর্বশেষ খবর