রবিবার, ৪ জুলাই, ২০২১ ০০:০০ টা

টাঙ্গাইলে জমে উঠেছে নৌকার হাট

মো. নাসির উদ্দিন, টাঙ্গাইল

টাঙ্গাইলে জমে উঠেছে নৌকার হাট

গত কয়েক দিনে যমুনা ও ধলেশ্বরীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার গয়হাটায় শত বছরের নৌকার হাটে আসতে শুরু করেছে বিভিন্ন আকৃতির নৌকা। তবে লকডাউনের কারণে এ বছর হাটে লোকজনের আনাগোনা কম বিধায় তেমন বাড়েনি নৌকা বিক্রি। নাগরপুর উপজেলার এক পাশ দিয়ে যমুনা অন্য পাশ দিয়ে যমুনার শাখা ধলেশ্বরীসহ বয়ে গেছে ছোট বড় বেশ কয়েকটি নদী। এ কারণে বর্ষার শুরু থেকেই নিম্নাঞ্চলে বসবাসকারী জনগোষ্ঠীর একমাত্র ভরসার যান হলো নৌকা। পাশের সিরাজগঞ্জের চৌহালী, মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলার বেশ কয়েকটি ইউনিয়ন চরাঞ্চল হওয়ায় এসব নিম্নাঞ্চলে বসবাসকারী মানুষ সাধ্যের মধ্যে নৌকা কিনতে এ হাটে ছুটে আসছে। এসব মানুষের মালামাল পরিবহন ও যাতায়াতের একমাত্র বাহন নৌকা। সরেজমিনে দেখা যায়, নাগরপুরের ঐতিহ্যবাহী নৌকার হাট শুধু নামেই বিখ্যাত নয়, এখানে সাধ্যের মধ্যে সব শ্রেণি-পেশার মানুষের জন্য রয়েছে নানা ধরনের নৌকা। বড় কয়েকটি নদীতে পানি বাড়ায় ধীরে ধীরে ছোট শাখা নদীগুলোয় পানি প্রবেশ শুরু করেছে। এজন্য নিম্নাঞ্চলের বাসিন্দারা আগাম প্রস্তুতির জন্য নৌকার হাটে আসতে শুরু করেছেন। আশপাশের কয়েকটি উপজেলা থেকেও ক্রেতা-বিক্রেতা আসছেন এ হাটে। নৌকার কাঠামো তৈরিতে মেহগনি, কড়ই, আমচাম্বল ও রেনট্রি কাঠের ব্যবহার বেশি। মান ও আকার ভেদে একেকটি নৌকা ৪ থেকে ১০ হাজার টাকায় বিক্রি হয়। তবে এ বছর নৌকার দাম নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে ক্রেতাদের মধ্যে। দৌলতপুর উপজেলার শিমুল মিয়া বলেন, ‘বর্ষার সময় নৌকা ছাড়া আমাগো চলাফেরা করার কোনো উপায় নেই। আর সেজন্যই এক বা দুই বছর পরপর এ হাট থেকে নৌকা কিনি। তবে এ বছর এখনো পুরোদমে নৌকার বেচাকেনা শুরু না হওয়ায় পাইকাররা ইচ্ছামতো দাম চাচ্ছেন। বাধ্য হয়েই বেশি দামে নৌকা কিনতে হলো।’ নৌকার কারিগর কালীপদ বলেন, ‘লকডাউনে সব জিনিসের দাম বাড়ায় এ বছর খরচ কিছুটা বেশি হচ্ছে নৌকা তৈরিতে। তাই দাম অন্য বছরের তুলনায় একটু বেশি। সে কারণে বেচাকেনা কম হচ্ছে।’ এ বিষয়ে গয়হাটা হাটের ইজারাদার খায়রুল ইসলাম বলেন, ‘এ হাটটি আমাদের ঐতিহ্যের সঙ্গে মিশে আছে। আমার জন্মের পর থেকে দেখে আসছি এ হাট। তিন পুরুষের কাছে গল্প শুনেছি এর ইতিহাস-ঐতিহ্যের। তবে হাটের সৌন্দর্য নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আমি চাই এর সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনতে।’

সর্বশেষ খবর