মঙ্গলবার, ৩০ নভেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

কুমড়াবড়িতে জীবন-জীবিকা

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি

কুমড়াবড়িতে জীবন-জীবিকা

ঝিনাইদহে গৃহিণীরা কুমড়া ও কালাই ডাল মিশ্রিত বড়ি তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। শীতকে বরণে শহর-গ্রামে ঘরে ঘরে চলছে এ বড়ি তৈরির কাজ। বেশিরভাগ গৃহিণী নিজেদের খাওয়ার জন্য তৈরি করছেন বড়ি। অনেকে কুমড়াবড়ি তৈরি করে জীবিকাও নির্বাহ করছেন।

ঝিনাইদহের গ্রামাঞ্চলে প্রায় বাড়ির চালে ও মাচায় শোভা পাচ্ছে চালকুমড়া, যা দিয়ে তৈরি হচ্ছে কুমড়াবড়ি। কেউ কাজ করছেন ঢেঁকি দিয়ে, কেউবা সাহায্য নিচ্ছেন শিলপাটার। অনেকে বড়ি তৈরি করছেন বৈদ্যুতিক মেশিনের মাধ্যমে। এক কথায় কুমড়াবড়ি তৈরির ধুম পড়েছে পাড়ায় পাড়ায়। শীতের সকালে পাড়া-মহল্লার গৃহিণীরা বাড়ির ছাদে দল বেঁধে, আবার কেউ মাটিতে মাদুর বিছিয়ে বড়ি বানানোর কাজ করছে। বড়ির উপকরণ হিসেবে কালাইয়ের ডালের সঙ্গে চালকুমড়ার পরিবর্তে অনেকে মূলা অথবা পেঁপে ও পিঁয়াজ ব্যবহার করে থাকেন। শীত এলেই এ জেলার গ্রামাঞ্চলের লোকজন বড়ি তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। মূলত আশ্বিন, কার্তিক, অগ্রহায়ণ এই তিন মাস কুমড়াবড়ি তৈরি করা হয়। ২-৩ দিন কড়া রোদে শুকিয়ে প্রস্তত করা হয় সুস্বাদু এই বড়ি। শৈলকূপা উপজেলার কবিরপুর গ্রামের রোজিনা বেগম বলেন, শীতে বড়ি ছাড়া তরকারি রান্না অপূর্ণ থেকে যায়। সব ধরনের তরকারিতে বাড়তি স্বাদ এনে দেয় কুমড়াবড়ি। গাড়াখোলা গ্রামের ওয়াহিদ হাসান জানান, ৩০ বছর ধরে এই কাজের (বড়ি তৈরি) সঙ্গে জড়িত। মেশিনে কুমড়াবড়ি তৈরি করি। ডাল ও মসলার দাম বেড়ে যাওয়ায় বড়ি বানানোর খরচ বেশি পড়ছে। প্রতিদিন আমার মেশিনে ৩০০ কেজি বড়ি তৈরি হয়। এই বড়ি তৈরিতে খরচ হয় ৩০ হাজার টাকা। বিক্রি হয় ৩৫ হাজারে। আর প্রতিদিন ৩০ জন নারী শ্রমিক সকাল ৮টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত কাজ করে। এদের ৬০ টাকা করে পারিশ্রমিক দেওয়া হয়। পাইকারি ১৬০ টাকা দরে প্রতি কেজি বড়ি বিক্রি হয়। গাড়া খোলা চরের শ্রমিক ববিতা বেগম বলেন, আমরা মেশিনে বড়ি তৈরির কাজ করি। প্রতিদিন ৩-৪ ঘণ্টা কাজ করি। পারিশ্রমিক পাই ৬০-৭০ টাকা করে। হাটবাজারে কুমড়াবড়ি কেজি দরে বিক্রি হয়। আবার অনেকে বাড়ি বাড়ি গিয়ে কিনে নিয়ে স্থানীয় বাজারে বিক্রি করেন। সরকারি সহায়তা পেলে এই খাত আরও অনেক দূর এগিয়ে নেওয়া সম্ভব বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর